সিলেটের জুয়া সম্রাট জাহাঙ্গীরকে হাজী বানিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিবৃতি দিলেন কারা?

প্রকাশিত: ১১:২৬ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৯, ২০১৯

সিলেটের জুয়া সম্রাট জাহাঙ্গীরকে হাজী বানিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিবৃতি দিলেন কারা?

প্রকাশ্যে জুয়ার সাথে জড়িতের অভিযোগে বেশ কয়েক বার গ্রেফতার হয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম। ভ্রামমান আদালত জরিমান ও শাস্তি প্রদান করে তাকে। তার অপকর্মের বিরুদ্ধে গতকাল সিলেটের দিনকাল-এ প্রকাশিত হয় সংবাদ। আপরাধী জাহাঙ্গীরকে আড়াল করতে তার পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন সিলেট সদর মৎস আড়তদার কল্যান সমাবায় সমিতি সভাপতি মো. ফয়জুল হক, সহ সভাপতি সালমান আফরিন, কোষাধ্যক্ষ সিরাজুল হক। একজন আপরাধীকে আড়াল করতে বিবৃতিতে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য প্রদান করা হয়েছে।

বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে সিলেট সদর মৎস আড়তদার কল্যান সমাবায় সমিতি সভাপতি মো. ফয়জুল হক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলেন, সিলেট সদর মৎস আড়তদার কল্যান সমাবায় সমিতির বার বার নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের উপর মিথ্যা ও মনগড়া অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মো. ফয়জুল হক, সহ সভাপতি সালমান আফরিন, কোষাধ্যক্ষ সিরাজুল হক এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন- এলাকার সন্ত্রাসী ও অপরাধের নিয়ন্ত্রকদের বক্তব্যের সূত্র ধরে কাজিরবাজারের ঐতিহ্যবাহী মাছ বাজার ও শেখঘাট ভাঙ্গাটিকর এলাকায় ক্যাসিনো ব্যবসা হচ্ছে বলে প্রচার করা হয়। বাস্তবে এই অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। ঐতিহ্যবাহী মাছবাজারে ক্যাসিনো তো দুরের কথা কখনো ওয়ানটেন জুয়া খেলা হয়নি। পাশ^বর্তী কয়েকটি এলাকায় তীর খেলা নামক জুয়ার আসর বসে। এসব জুয়ার আসরে ইতিমধ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কয়েক বার অভিযান চালিয়ে অন্তত অর্ধশতাধিক জুয়াড়ীকে আটক করেছেন। বিবৃতিতে তারা বলেন- আমরা মনে করি ঐতিহ্যবাহী কাজিরবাজারের সুনাম নষ্ট করতে ওই অপরাধী গোষ্টি এসব অপপ্রচার চালাচেছ। সিলেটের সাংবাদিক বন্ধুদের এ ব্যাপারে সরজমিনে অনুসন্ধানের জন্য বিনীত জানাচ্ছি। আমরা এটুকু বলতে পারি- সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কাজিরবাজারে কোনো জুয়া কিংবা অসামাজিক কার্যকলাপ হচ্ছে না। বরং বাজারের ব্যবসায়ীরা সব সময় এসব অপকর্মের বিরোধী।

বিবৃতিতে তারা আরো বলেন- আমরা বাজারের ব্যবসায়ীরা সৎ ভাবে ব্যবসা করছি। এ উপার্জন থেকে অর্জিত সম্পদ অবৈধ নয়। আমাদের সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম শেখঘাট জামে মসজিদের সহকারী সেক্রেটারী। এলাকার মানুষের মুখে তাকে নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু বিগত কয়েক বার সিটি নির্বাচনে হাজী জাহাঙ্গীর আলমের বড় ভাই সিকন্দর আলীর কাছে পরাজিতরা এখন ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তারা এখন সিকন্দর আলী ও জাহাঙ্গীর আলমের জনপ্রিয়তায় ইশর্^ান্বিত হয়ে যেসব অপপ্রচার করেছে সেগুলোর সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই। জমি দখল, জুয়া ও অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ সত্য নয়। শেখঘাট এলাকা হচ্ছে শান্তিপূর্ন এলাকা। কোনো অপরাধের ঠাই নেই এলাকায়। যারা নানা অপরাধ করছে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় জাহাঙ্গীর আলম প্রতিবাদী হয়েছেন। আর এতে শত্রæতামুলক ভাবে সাংবাদিকদের বিভ্রান্ত করে মিথ্যা তথ্য তুলে ধরে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এসব অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য আহবান জানান নেতৃবৃন্দ। একই সঙ্গে বিভ্রান্ত না হতে প্রশাসন সহ সর্ব মহলকে অনুরোধ করেন।
জাহাঙ্গীর নগরী ৮টি স্থানে ওয়ান টেন জুয়া ও মহিলা দিয়ে নাচক করেন। জুয়ার আসরের ভেতরে চলে অশ্লীলতা। রাত যত গভীর হতো অপরিচিত লোকদের আনাগোনা ততই বাড়ত। ব্যবসায়ী রুবেল আহমদ জানান, জাহাঙ্গীর একজন শীর্ষ জুয়ার ব্যবসায়ী। তার নেতৃত্বে নগরীর একাধিক জায়গায় ‘ওয়ান টেন’ আসর বসে। কমিনিউনিটি পুলিশের সভাপতি হওয়ায় পুলিশ ম্যানেজ করে ‘ওয়ান টেন’ জুয়ার বোর্ড বসিয়ে বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। ১২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক মিয়া বলেন, জাহাঙ্গীর কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি পরিচয় দিয়ে ‘ওয়ান টেন’ জুয়ার বোর্ড বসিয়ে কোটি কোটি টাকা বানিয়েছেন। তিনি এলাকার যুব সমাজকে ধ্বংস করছেন।

শুধু কাজির বাজারে নয়, শেখঘাট ও ভাঙ্গাটিকরেও তার মিনি ক্যাসিনো রয়েছে। তিনি বলেন, গত মাসে থানায় ওপেন হাউস ডে অনুষ্ঠানে অভিযোগ করেছি, একজন ‘ওয়ান টেন’ জুয়ারি গডফাদার কিভাবে কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি হয়। কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য জাহাঙ্গীরের কাছ থেকে সুবিধা নেয়। এধরনের বিবৃতি দিয়ে অপরাধীকে আড়াল করছেন উল্লেখিত ব্যক্তিদ্বয়। অপরাধী জাহাঙ্গীর আলম নগরীতে প্রকাশ্যে জুয়া খেলা চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন যাবত । বিবৃতিদাতার মুছোফোনে বক্তব্য নেওয়ার জন্য বার বার ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেন নি।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..