জিন তাড়ানোর নামে নারীর সাথে যা করলেন ইমাম

প্রকাশিত: ৮:৪১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১১, ২০১৯

জিন তাড়ানোর নামে নারীর সাথে যা করলেন ইমাম

জিন তাড়ানোর নামে পুতুল নামে এক নারীকে বেদম পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেছেন এক মসজিদের ইমাম। শরীয়তপুরের সোনামুখিতে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত আবু জাফর সোনামুখি দর্জি কান্দী জামে মসজিদের ইমাম। আহত পুতুল শরীয়তপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ দেওভোগ গ্রামের আব্দুল হাই ফকিরের মেয়ে ।

পুতুলের বড় বোন পেয়ারা বেগম বলেন, আমার বোন পুতুলকে বিয়ে দিয়েছি রংপুর। ওর জামাই ফোন করে জানায় আমার বোনের মাথায় সমস্যা। তাই আমি নিজে গিয়ে তাকে নিয়ে আসি। মানুষের কাছে শুনেছি সোনামুখি দর্জি কান্দি জামে মসজিদের ইমাম নাকি এমন সমস্যা ভালো করেন। পরে আমি আর আমার স্বামী গত শনিবার হুজুরের কাছে যাই।

হুজুর বলেছেন চিকিৎসা করতে পারবেন। এর জন্য আমার বোনকে তিন দিন হুজুরের কাছে নিয়ে যেতে হবে। কথা অনুযায়ী দুই দিন যাই হুজুরের কাছে। তৃতীয় দিন যাওয়ার পর হুজুর বলেন এক বছর বয়সের একটা গরু লাগবে, আমি বলেছি বাড়িতে কথা বলা লাগবে। এ সময় হুজুর বলে আপনি কথা বলেন আমি সওয়াল জওয়াব লই। আমি ফোনে আমার আরেক বোনের সঙ্গে কথা বলতে গেছি এই ফাঁকে আমার বোনের হাত বেঁধে বেত দিয়া বেদম পেটান হুজুর। আমি কথা শেষ করে আসার পর হুজুর বলে আমি পারবো না। আপনি আপনার বোনকে নিয়ে যান। আমি বাসায় আসার পর দেখি আমার বোনকে পিটিয়ে এমন অবস্থা করেছে ব্যথায় আমার বোন আর দাঁড়াতেই পারছে না। এরপর এলাকার কিছু লোক এসে ওষুধ কিনে দিয়ে গেয়ে। আমার বোন এখনো অসুস্থ।

আহত পুতুল বলেন, হুজুরে আমার সওয়াল জওয়াবের কথা বলে পিটিয়েছে।

বুড়িরহাট ফার্মেসির চিকিৎসক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আহত পুতুলকে নিয়ে আমার কাছে হারুন বেপারি ও ইসমাইল বেপারি প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য আসে। আমি তাদেরকে ১৮৮০ টাকার ওষুধ দেই এবং চিকিৎসার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে হাসপাতালে নিতে বলি। তারা হাসপাতালে না নিয়ে বাড়িতেই রাখে।

সোনামুখি দর্জি কান্দী জামে মসজিদের ইমাম আবু জাফরের কাছে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি । তবে ওই মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান বেপারি বলেন, জিন ছাড়ানোর ঘটনায় আহত মেয়েটির এলাকার লোক আসলে আমরা ইমামের সঙ্গে কথা বলে মেয়েটির চিকিৎসা খরচ বাবদ ২০ হাজার টাকা ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ইমাম সাহেবের চিকিৎসায় অনেকে ভালো হয়েছে।

পালং মডেল থানার ওসি আসলাম উদ্দিন বলেন, জিন তাড়ানোর নামে কোনো নারীকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে এমন কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই । এ বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগও করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শরীয়তপুর সদরের ইউএনও মো. মাহবুর রহমান শেখ বলেন, এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। এ ঘটনা তদন্ত করে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ,

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..