বঙ্গবন্ধুর কাছে নিজের মনের যন্ত্রণা শেয়ার করলেন চাঁদের কণা

প্রকাশিত: ৬:২৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৯, ২০১৯

বঙ্গবন্ধুর কাছে নিজের মনের যন্ত্রণা শেয়ার করলেন চাঁদের কণা

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের হুইল চেয়ারে বসে থাকা প্রতিবন্ধী একটি মেয়ে নাম তার চাঁদের কণা। মেয়েটির চারপাশে অসংখ্য লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড। রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর অনেক ছবিও। রোদ-বৃষ্টির সঙ্গে সংগ্রাম করে টানা ১২ দিন ধরে অনশন করছে মেয়েটি। চায় মমতাময়ী মায়ের (প্রধানমন্ত্রীর) সাক্ষাত। টানা অনশনের কারণে অনেকটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
দীর্ঘ অনশনে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত না পেয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ প্রঙ্গনে গিয়ে তার মনের যন্ত্রণার কথা বলেন।

এ বিষয় নিয়ে তার নিজ ফেসবুক আইডিতে একটি পোষ্ট করেন। তা ক্রাইম সিলেটের পাঠকদের জন্য হুবহু তোলে ধরা হলো ‘আমি ১৪ দিন হলো ঢাকায়। ১২ দিন ধরে অনশন করে রাস্তায় পড়ে আছি। প্রায় সব গুলো জাতীয় পত্রিকা ও বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে নিয়ে লেখালেখির পরেও সরকার পক্ষ থেকে কেউ আমার কোন খোঁজ খবর নিতে আসেনি । আমি শারীরিক মানসিক আর্থিক সার্বিক দিক থেকে বিপর্যস্ত। আমি আমার জীবনের আশার আলো হারিয়ে ফেলেছি। আমি পারছি না অনশন ভেঙ্গে পরাজিত হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে, আর পারছি না অনশন চালিয়ে যেতে। সামনে শুধু অন্ধকার আর অন্ধকার। তাই জীবনের সব কষ্ট হাসি মুখে মেনে নিয়ে আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে নিজের মনের যন্ত্রণা গুলো বলতে এসেছি।জানি তার দেহটা আমি দেখতে পাবো না, কিন্তু আমার বিশ্বাস তার আত্মা নিশ্চয়ই আমার মনের বেদনার কথা শুনবেন, আর ভাববেন আজ যদি সে থাকতো, তবে অসহায় এই চাঁদের কনাকে তিনি রাস্তায় বসে কাঁদতে দিতেন না।তাই আজ মনে হচ্ছে, হয়তো তার মৃত্যুর সাথে সাথে আমাদের মতো অসহায় মানুষ গুলোর স্বপ্নও শেষ হয়ে গেছে, শেষ হয়ে গেছে আমাদের জীবনের সমস্ত সুখ। কারণ আমাদের কষ্টের কথা শোনার কোন মানুষ নেই, আমাদের স্বপ্নের কোন মূল্য নেই। জীবনের ৩২টি বছর নানা রকম কষ্ট পেলেও সব কষ্ট মেনে নিয়েছি। কারণ সব সময় ভেবেছি জীবনের শেষ বেলায় যদি কখনো থেমে যাই তখন হয়তো বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে যারা কাজ করেছ, তারা ঠিকই আমার পাশে দাঁড়াবে, আমার স্বপ্ন পূরণে সাহায্যে করবে। কিন্তু সত্যি যখন থেমে গেছে আমার জীবন, তখন দেখি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সাথে সাথে তার আদর্শ ও তার রেখে যাওয়া উক্তি গুলো আজ শুধু কাগজ কলমেই থেকে গেছে; বাস্তবে যার কোন প্রয়োগ নেই। দুনিয়াটা এতই নিষ্ঠুর যে, মায়ের (মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর) সাথে মেয়ে দেখা করতে পারেনা। মাকে (মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে) কেউ সঠিক তথ্য জানায় না। কেউ তাকে বলে না যে, আপনার মেয়েটা আতিœর্ভরশীল হতে চায়, আপনার কাছে আসতে চায়, আপনার মেয়ে (চাঁদের কনা) ১২টি দিন ধরে আপনার দেখা না পেয়ে রাস্তায় বসে কাঁদছে। তাই আমি আপনার কাছে এসেছি। পিতা আপনি চেয়ে দেখুন, আজ শুধুমাত্র আপনি নেই বলে, অসহায় এই মেয়েটি দিনে দিনে মরনের দিকে চলে যাচ্ছে। অথচ আপনি বলেছিলেন, এদেশের একটি মানুষ ও কখনো কষ্টে থাকবে না, অনাহারে দিন কাটাবে না। পিতা আমি আর কষ্টের এই দুনিয়ায় থাকতে চাইনা। পিতা আপনি আমাকে আপনার কাছে নিয়ে যান। আমি আর এত যন্ত্রণা নিতে পারছিনা। আমার ভীষণ যন্ত্রণা হচ্ছে’।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..