ছাতকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা: বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল

প্রকাশিত: ৯:০২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩১, ২০১৯

ছাতকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা: বেরিয়ে আসছে থলের বিড়াল

শামীম আহমদ তালুকদার, ছাতক :: সুনামগঞ্জের ছাতকে রাউলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিচালনা কমটি নিয়ম-নীতি অমান্য করে অবৈধভাবে গঠন করার ঘটনায় উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিপি বেগমকে প্রধানসহ ১৩ জনকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি নুরুল আমিন, সদস্য চামেলী বেগম ও নেছার আহমদ বাদী হয়ে গত ১৭/১০/২০১৯ ইং তারিখে সহকারী জজ আদালত ছাতক, সুনামগঞ্জে স্বত্ব মোং নং ৪৬/২০১৯ দায়ের করা হয়।

মামলা সুত্রে জানা যায়, রাউলি রাউলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অনুমান ১৯৩৭ সালে প্রতিষ্টা লাভ করে ও ১৯৭৩ সালে সরকারীকরণ করা হয়।
সরকারের নিয়মনীতি অনুযায়ী বর্ণীত বিদ্যালয়টি ম্যানেজিং কমিটি ধারা পরিচালিত হয়। বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে ১১ (এগার) সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করতে হয়। বর্তমান কমিটির মেয়াদ ১৪/০৮/২০১৯ ইং তারিখে শেষ হয়। বর্তমান কমিটি আগামী ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে নতুন কমিটি গঠন পূর্বক নতুন কমিটি বরাবরে বিদ্যালয়ের দায়িত্ব আইন সম্মতভাবে হস্তান্তর করবেন। সে মতে সাবেক কমিটির সভাপতি নুরুল আমিন গত ০৮/০৭/২০১৯ ইং তারিখে পরিচালনা কমিটিরসহ এলাকার গণ্যামান্য লোকজনকে নিয়ে এক সভার আয়োজন করেন। মামলায় আরো উল্লেখ করা হয় ওই সভায় ৭৬ (ছিয়াত্তর) জন ব্যাক্তি উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত ব্যাক্তিবর্গের সর্ব সম্মতি ক্রমে ম্যানেজিং কমিটির ১১ (এগার) জন সদস্যকে নির্বাচিত করা হয়। বর্ণীত কমিটি গঠনের পর সভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচনের জন্য ১৯/১০/২০১৯ ইং তারিখ ধার্য্য করে মৌখিক ভাবে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহন পূর্বক সভার কার্যক্রম সমাপ্ত করা হয়। ওই তারিখে স্থানীয় ভাবে সভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচনের নির্বাচনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করিলে সর্ব সম্মতিক্রমে সভা শেষ হয়। এ অবস্থায় গত ১৬/১০/২০১৯ ইং তারিখে ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখতে পান উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিপি বেগম সভাপতি ও সাদিক মিয়াকে সহসভাপতি নির্বাচন ক্রমে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির তালিকা প্রকাশ হয়। বর্ণীত কমিটি বে-আইনি ও বাতিল যোগ্য বটে মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে ছাতক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র দাস বলেন, স্থানীয় ভাবে যখন তারা কমিটি গঠন করতে পারছিলেন না তখন আমি তাদের নিয়ে বসেছি। স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত সভায় ছাতক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিপি বেগমকে সভাপতি করা হয়।

উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিপি বেগম বলেন, গত ০৮/০৭/২০১৯ ইং তারিখে বিদ্যালয়ে অনুষ্টিত সভায় আমিও উপস্থিত ছিলাম। সভায় উপস্থিত ব্যাক্তিবর্গের সর্ব সম্মতি ক্রমে ম্যানেজিং কমিটির আমিসহ ১১ (এগার) জন সদস্যকে নির্বাচিত করা হয়। কিন্ত এখানে কোন সমস্যা ছিলনা।
দাতা সদস্যদের নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। মজলু মিয়া ও নেছার মিয়ার নাম দাতা সদস্য হিসাবে প্রস্থাব করা হলে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়। এর কারন ছিল বিদ্যালয়ের ভূমি সংক্রান্ত মালিকানার জটিলতা। এই মতানৈক্য নিরশনে উপস্থিত মুরব্বিয়ানগণ সিন্ধান্ত নেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সমন্নয়ে বসে বিষয়টি নিম্পত্তি করা হবে। প্রয়োজনে ভূমির মালিকানা দলিলপত্র নিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি (ছাতক) পরামর্শক্রমে সমাধান করা হবে। তার কিছদিন পর দোলার বাজার ইউপি চেয়ারম্যান সায়েস্তা মিয়ার কার্যালয়ে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাছুম বিল্লাহ ও ইউ আর সি ইন্সট্রাক্টর মোস্তফা আহসান হাবীবসহ বসা হয়। কিন্ত ভূমিতে পানি থাকার কারনে ওই দিন পরিমাপ করা সম্ভব হয়নি। পরে ছাতক উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র দাসের আহবানে আমরা তার কার্যালয়ে বসি। সেখানে সর্ব সম্মতিক্রমে আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এই সভায় সাবেক সভাপতি নুরুল আমিনও উপস্থিত ছিলেন। তখনতো তিনি আপত্তি করেননি। ভোটের হিসাবে গেলে তিনি ১ টি ভোট পেয়েছেন আর আমি ৬ টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হই। লিপি বেগম অভিযোগ করে আরো বলেন, বিদ্যালয়ের অতিথের হিসাব নিকাশে অনেক অনিয়ম ও গড়মিল রয়েছে। এগুলো আমি খোঁজতে পারি এমন ধারনা থেকেই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এমনকি হয়রানী মূলক মিথ্যা মামলা করা হয়েেেছ। আইনত প্রক্রিয়ায় মামলার জবাব দিবেন বলেন জানান তিনি।

উপজেলা চেযারম্যান ফজলুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কমিটি গঠন করে থাকেন। আমি শুধু স্বাক্ষর করে দেই। এর বাহিরে কিছু জানিনা। তিনি আরো বলেন, হয়তো কমিটি তাদের মনমত হয়নি তাই মামলা করেছেন।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..