ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : শাহজালালের দরগায় দাঁড়িয়ে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বাহ বাহ কুড়িয়েছিলেন অসত্য তথ্য উপস্থাপন করে। কিন্তু একদিনের মাথায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়ায় মুখোশ উন্মোচন হয় আরিফের। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মানুষের মুখে ছি ছি রব উঠেছে।
অনেকে বলেছেন, বিশ্বাস খাতকতায় ডক্টরেট ডিগ্রিধারী মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী শৈশব থেকে নানা ছলচাতুড়ির মাধ্যমে নিজের ফায়দা হাসিল করতেন। সিটি মেয়র হওয়ার পরও সেই ধান্ধা ছাড়তে পারেননি। সরকারের বরাদ্দ দেয়া শ’শ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করে তা নিজের বলে নগরবাসীর বাহ বাহ কুড়াচ্ছেন। আওয়ামী লীগের কতপিয় বড় নেতার আশ্রয়ে তিনি এমনটি করতে সাহস পাচ্ছেন বলে অনেকে জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টাকায় কাজ করে তিনি বহুত বড় কামলা বলে জানান দিচ্ছেন। তবে এখন অনেকে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন তার ব্যবহার যথাযথ হয়েছে কী না তা তদন্ত করা প্রয়োজন।
সিলেট নগরীর রাস্তাঘাটের অপরিচ্ছন্নতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি মো্. আব্দুল হামিদ বুধবার বিকেলে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩য় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এই মন খারাপের কথা বলেন , আমি সিলেটকে মনে করেছিলাম অনেক সুন্দর, পরিচ্ছন্ন একটা শহর। কিন্তু এখানে এসে আমার মন খারাপ হয়েছে। সিলেটে এসে দেখি রাস্তাঘাটগুলো অপরিচ্ছন্ন। যোখানে সেখানে পলিথিন, কলার ছোলা, কাগজ পড়ে আছে। বিদেশের রাস্তা-ঘাটে থুথু ফেলতেও মানুষ ভয় পায়, অথচ আমাদের দেশে মানুষ নোংরা করার আগেও একবারও ভাবে না। তাদের পরিষ্কারের মানসিকতা হারিয়ে গেছে।’
সর্বশেষ মেয়র আরিফ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের উন্নয়ন কাজকে নিজের বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। এই মিথ্যাচার করেছেন ৭ জানুয়ারি হযরত শাহজালাল রহ. এর দরগায় দাঁড়িয়ে। মেয়র বলেছেন, শাহজালাল মাজার এলাকায় সফলভাবে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন চালু হয়েছে। বিদ্যুতের তারসহ অন্যান্য সার্ভিস লাইনের ঝঞ্জাটমুক্ত এই সড়কের সংস্কার কাজও শেষ করা হয়েছে দ্রুত সময়ের মধ্যে।
কিন্তু একদিন পর ৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেয় প্রকল্পটি সিটি করপোরেশনের কোনো প্রকল্প নয়। ‘জঘন্যভাবে চপেটাঘাট।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিলেটে চলমান আন্ডারগ্রাউন্ড বিদ্যুৎ লাইন রূপান্তর প্রকল্প সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কোনো প্রকল্প নয়। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিশেষ উদ্যোগে বর্তমান সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ‘বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প, সিলেট বিভাগ’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে সিলেট শহরে পাইলট ভিত্তিতে আন্ডারগ্রাউন্ড বিদ্যুৎ লাইন রূপান্তর কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার ‘বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প, সিলেট বিভাগ’ প্রকল্পের পরিচালক স্বাক্ষরিত এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিলেট নগরীর প্রাণকেন্দ্র শাহজালাল (রহ.) মাজারের সামনের রাস্তার দুপাশের ওভারহেড বৈদ্যুতিক লাইনকে সম্পূর্ণভাবে ভূ-গর্ভস্থ লাইনে রূপান্তর করে সফলতার সাথে গত ৫ জানুয়ারি থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে একদিকে নগরীর সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের নির্ভরশীলতা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কাজে সিটি কর্পোরেশন সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেছে।
এছাড়া এ প্রকল্পের আওতায় আম্বরখানা উপকেন্দ্র থেকে চৌহাট্টা হয়ে বন্দরবাজার পর্যন্ত ২টি এবং শেখঘাট থেকে সার্কিট হাউজ পর্যন্ত আরও একটি ১১ কেভি ফিডারকে সম্পূর্ণভাবে ভূ-গর্ভস্থ লাইনে রূপান্তরের কাজ চলছে। শীঘ্রই কাজগুলি সম্পন্ন হবে।
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি শাহজালাল (রহ.) মাজারের সামনের রাস্তার দুপাশের ওভারহেড বৈদ্যুতিক লাইনকে সম্পূর্ণভাবে ভূ-গর্ভস্থ লাইনে রূপান্তর করে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হওয়ার পর বিষয়টি বেশ আলোচনায় আসে। দেশে-বিদেশে থাকা সিলেটী ও বাঙালীরা বিষয়টির প্রশংসা করে প্রকল্পটি সিটি কর্পোরেশনের মনে করে কৃতজ্ঞতা জানান। এরপরই এ বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড।
পরির্দশনকালে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন

শাহজালাল দরগাহ সড়কে সংস্কার কাজ পরিদর্শনে মেয়র আরিফ
- দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ বিদ্যুতায়নের পর দ্রুত সময়ের মধ্যেই শাহজালাল মাজার এলাকার সড়কের সংস্কার কাজ শেষ করা হয়েছে। আধ্যাত্মিক ও পর্যটন নগরী সিলেটকে ডিজিটাল ও স্মার্ট সিটিতে রূপান্তরে নানা পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
- মঙ্গলবার বিকেলে কাউন্সিলরদের সাথে নিয়ে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী শাহজালাল মাজার সড়কের উন্নয়ন কাজ পরির্দশন করেন। তিনি বলেন, ‘শাহজালাল মাজার এলাকায় সফলভাবে ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ সঞ্চালন চালু হয়েছে। বিদ্যুতের তার সহ অন্যান্য সার্ভিস লাইনের ঝঞ্জাটমুক্ত এই সড়কের সংস্কার কাজও শেষ করা হয়েছে দ্রুত সময়ের মধ্যে।’
- এসময় উপস্থিত ছিলেন সিটি কর্পোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ, ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ ইলিয়াছুর রহমান, ১০ নং নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেক উদ্দিন তাজ, ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রকিবুল ইসলাম ঝলক, ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ সিকন্দর আলী, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ ছয়ফুল আলম বাকের, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এস এম শওকত আমীন তৌহিদ, ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোস্তাক আহমদ, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ তৌফিক বকস লিপন, সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ নূর আজিজুর রহমান ও নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর।
- সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ নূর আজিজুর রহমান বলেন, শাহজালাল মাজার সড়ক থেকে বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণের পর ‘এসপল্ট’ দ্বারা দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়ক সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
Sharing is caring!