গোয়াইনঘাটে স্বচ্ছতার নিরিখে প্রান্তিক কৃষকদের ধান ক্রয় করছে সরকার

প্রকাশিত: ৯:০৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২০

গোয়াইনঘাটে স্বচ্ছতার নিরিখে প্রান্তিক কৃষকদের ধান ক্রয় করছে সরকার

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি :: কৃষক কোলে হতাশা ও ক্ষোভের সীমা ছিলনা। কৃষি পরিবারে সরকারি ভাবে ধান ক্রয়ের কথা উঠলেই প্রকৃত কৃষকদের নিকট থেকে সংশ্লিষ্টরা ধান ক্রয় না করে সুবিধা ভোগীদের নিকট থেকে সরকারি ধান সংগ্রহ করার বিষয়ে ছিল বিস্তর অভিযোগ।

প্রথম ধাপে উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের সাড়ে ৩শ কৃষকের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করেছিল প্রশাসন। উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দেওয়া তালিকাতে অভিযোগের শেষ ছিল না। ফলে শতভাগ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবার নেওয়া হয়েছিল অভিনব কৌশল ।

প্রকৃত কৃষকদের নিকট থেকে সরকারি ধান সংগ্রহের জন্য ব্যাবহার করা হয় ৯ টি নীল রংয়ের ড্রাম। ড্রামের মুখগুলো কাগজ-কস্টেপ দিয়ে বিশেষভাবে মোড়ানো। ছিদ্র দিয়ে ড্রামগুলোতে নিজেদের কৃষি কার্ড ফেলে উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের প্রান্তিক কৃষকেরা সরকারের নিকট ধান বিক্রেতা হিসেবে নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় ধাপে ধান সংগ্রহের জন্য এই অভিনব পন্থা গ্রহন করায় ফল ভোগ করছেন প্রান্থীক কৃষকেরা। পুরো উপজেলা জুড়ে মাইকিং করে প্রকৃত কৃষকদের নিকট থেকে কার্ড সংগ্রহ ও পরে লটারীর মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করে তাদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা শুরু করে উপজেলা খাদ্য অফিস। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলা অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির সভায় খাদ্যশস্য সংগ্রহ নীতিমালার আলোকে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন থেকে মোট ১৫৪৩ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের জন্য প্রান্তিক কৃষক ও মহিলা কৃষকদের অগ্রাধিকার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিতর্ক এড়াতে কৃষি কার্ড সংগ্রহের জন্য মাইকিং করা হয়েছিল ৯টি ইউনিয়নেই। যাদের নিজস্ব জমি আছে এমন কৃষকদের কার্ড যাচাই-বাছাই করে কার্ডের ফটোকপিতে জমির পরিমাণ বিবেচনা করে বিক্রয়যোগ্য ধানের পরিমাণ উল্ল্যেখ করে দিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।

পরে সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মুখে লটারীর মাধ্যমে নির্বাচিত কৃষকরা ধান বিক্রি করতে শুরু করেছেন। নির্বাচিতদের তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস, কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় ও উপজেলা খাদ্য গুদামের নোটিশ বোর্ডে বসানো রয়েছে । অধিক সংখ্যক কৃষককে সুযোগ দেয়ার জন্য এবার একজন কৃষক ১২০ কেজি থেকে শুরু করে ১ মেট্রিক টন পর্যন্ত ধান বিক্রি করতে পারছেন। মঙ্গলবার দুপুরে গোয়াইনঘাট উপজেলা খাদ্য গুদামে দেখা হয় রুস্তমপুর ইউনিয়নের যৎনাথা (টুকইর) গ্রামের কৃষক মো. গৌছ মিয়ার সাথে তিনি জানান , মাইকিং শুনে আমি সহ এলাকার কয়েকজন কৃষক কৃষি কার্ড নিয়ে উপজেলায় উপস্থিত হই। বাছাই প্রক্রিয়ায় লটারিতে আমি ধান বিক্রয়ের জন্য নির্বাচিত হই। আগেরবার ধান সংগ্রহের খবর পাইনি। এখন যে পদ্ধতিতে ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে তাতে আমরা ধান বিক্রয়ের সুযোগ পাচ্ছি। গোয়াইনঘাট এলএসডি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আফসার আলী বলেন, কৃষক নির্বাচনের ক্ষেত্রে সরকার প্রান্তিক কৃষক ও মহিলা কৃষকদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এবার লটারীর মাধ্যমে কৃষক বাছাই করে ধান ক্রয় করা হচ্ছে। এপর্যন্ত সাড়ে ৬শত মেট্রিকটন ধান প্রকৃত কৃষকদের নিকট থেকে ক্রয় করা হচ্ছে।

ক্রয় কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ধান ক্রয়ে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আমাদের উর্ধতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুস সাকিব, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফারুক আহমদসহ উপজেলার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা নিয়মিত তদারকি অব্যাহত রেখেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুস সাকিব বলেন, সরকার প্রান্তিক কৃষকদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে আবারো ধান সংগ্রহ করছে। আগেরবার ধান ক্রয়ের কিছু ত্রুটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় স্বচ্ছতার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। লটারির মাধ্যমে কৃষক বাছাই করে তাদের নিকট থেকে ধান ক্রয় করা হচ্ছে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

February 2020
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
29  

সর্বশেষ খবর

………………………..