সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:০৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : নিজেদের কর্মস্থলে ১০ শতাংশ নারী পুলিশ বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এর মধ্যে মধ্যপর্যায়ের দুই দশমিক সাত শতাংশ, সাব-ইন্সপেক্টর পর্যায়ে তিন দশমিক তিন শতাংশ। তবে সবচেয়ে বেশি কনস্টেবল পর্যায়ে। কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের পরিসংখ্যানে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
‘কর্মক্ষেত্রে সকল প্রকার সহিংসতা ও যৌন হয়রানি বন্ধে হাইকোর্টের ২০০৯ সালের নির্দেশনা বাস্তবায়ন এবং আইএলও কনভেনশন ১৯০ এর ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এ তথ্য দেওয়া হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, ৮০ শতাংশ গার্মেন্টস শ্রমিক কারখানাতে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এছাড়া ব্র্যাকের এক গবেষণায় দেখা যায়, ৯৪ শতাংশ নারী পরিবহন চলাচলের সময় মৌখিক, দৈহিক এবং অন্য যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানির শিকার হন। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, প্রধান যৌন আক্রমণকারীরা ৪১ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষ।
প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সায়েমা খাতুন বলেন, বাংলাদেশের নারী সাংবাদিকরা দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন সময়ে বস, সহকর্মী অথবা অন্য কারও দ্বারা যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু চাকরি হারানোর ভয়ে অভিযোগ দায়ের করতে পারছেন না।
তিনি আরো বলেন, পাবলিক ও প্রাইভেট সেক্টরে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মিডিয়া আউটলেটগুলোতে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ কমিটি তৈরি করা হয়নি। এতে করে নারীর জন্য নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক কর্মস্থল সৃষ্টিতে ব্যবস্থাপনার উচ্চপর্যায়ে কর্তা ব্যক্তিদের নিঃস্পৃহতা ও অবহেলা স্পষ্ট হয়ে পড়ে।
এদিকে, যেখানে গণমাধ্যমগুলো যৌন নিপীড়নের ঘটনায় রিপোর্ট করে এবং জনসচেতনতা তৈরিতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখে, সেখানে মিডিয়া হাউসগুলো নিজেদের প্রতিষ্ঠান কমিটি গঠনে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি স্বয়ং হাইকোর্টেও অভিযোগ কমিটি গঠন করা হয়নি। অধ্যাপক সায়েমা খাতুন বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গোড়া থেকে কমিটি গঠন করা হলেও বিভিন্ন সময়ে স্বয়ং কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীকে অসহযোগিতা এবং অপদস্থ করার অভিযোগ উঠেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য শিরীন আকতার বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসরণ করে এই আইনটি পাস করার জন্য জাতীয় সংসদে বার বার উপস্থাপন করা হয়েছে। এ বছর মুজিববর্ষ পালনের মধ্য দিয়ে এই আইনটি পাস হবে বলে আশা করি আমি। যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট অভিযোগ কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও সব ক্ষেত্রে এটি সম্ভব হয়ে উঠেনি। সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়সহ কিছু প্রতিষ্ঠানে কমিটি গঠন হলেও সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনার অভাবে কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি।
সংসদ সদস্য শিরীন আকতার আরও বলেন, কর্মক্ষেত্রে সব প্রকার সহিংসতা ও যৌন হয়রানি বন্ধে নারীদের আরও সচেতন হতে হবে। ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিবাদ করতে হবে। প্রতিবাদ না করলে এই সহিংসতা কমবে না। বরং বাড়বে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া রফিক, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব দিল আফরোজ বেগম প্রমুখ। কর্মজীবী নারী আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ড. প্রতিমা পাল মজুমদার। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সায়েমা খাতুন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd