সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:৩৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২০
বিশেষ প্রতিবেদক :: সুনামগঞ্জ-১ (তাহিরপুর,জামালগঞ্জ,ধর্মপাশা ও মধ্যনগর)আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন, দুদক। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় দুদকের সেগুনবাগিচা প্রধান কার্যালয়ে তার জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়।
ওই দিন টানা তিনঘন্টার জিজ্ঞাসাবাদ দুপুর ১টায় শেষ হয়। দুদকের অনুসন্ধান দলের প্রধান সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের অনুসন্ধান টিম এমপি রতনে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ এবং কারারুদ্ধ আলোচিত ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি.কে শামীমের সহযোগী হিসাবেও পরিচিত। জি,কে শামীম সহ বিভিন্ন ব্যাক্তির সঙ্গে যোগসাজসে বড়বড় ঠিকাদারী কাজ বাগিয়ে নিয়ে অবৈধ প্রক্রিয়ায় সরকারি অর্থ আত্বসাত, ক্যাসিনো ব্যবসা ও অন্যান্য অবৈধ কর্মকান্ডের মাধ্যমে শতশত কোটি টাকা অর্জন এবং তা পাচারের অভিযোগ অন্যতম। এছাড়া ঢাকা, নেত্রকোনা,সুনামগঞ্জ, ধর্মপাশা সহ ২৫টি বিলাসবহুল বাড়িসহ জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদকের ডিজি সৈয়দ মাহবুব খান জানান, এমপি রতন ও তার পরিবারের সদস্যদের পাসপোর্টের তথ্য চাওয়া হয়েছে। এছাড়া কানাডায় তার সম্পদ রয়েছে কি না সে বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে এমপি রতনের অভিযোগ, রাজনৈতিকভাবে হেয় করতেই তার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ জানিয়েছে একটি পক্ষ।
মঙ্গলবার দুদকের অনুসন্ধান টিমের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদক কার্যালয় ত্যাগের পুর্বে বেশ কয়েকটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে কর্মরত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উওরে সরকার দলীয় এমপি রতন নিজেকে নির্দোশ দাবি করে বলেন একটি কুচক্রি মহল এবং রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে দুদকে অভিযোগ করেছে।, তিনি দাবি করেন ঢাকায় উনার ফ্ল্যাট ও আমার গ্রামে বাড়ি আছে , এগুলো বক্সে রাখা ভেতর লুকিয়ে রাখার গত কয়েকবছরে স্থানীয়দের কাছে এমপি রতন আলোচিত তার বিলাসবহুল একাধিক বাড়ি-গাড়ি, জমিসহ বিপুল সম্পদের কারণে।
নির্বাচনী এলাকার জলমহাল, বালু পাথর মহাল,তিনটি শুল্ক ষ্টেশনে চাঁদাবাজি, হাট বাজার, নৌ পথ, খেয়াঘাট ইজারা পাইয়ে দেবার নামে গোপনে উৎকোচ গ্রহন বা জমি দখলই নয়, সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নিজ স্বার্থে জামায়াত-বিএনপি ও স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের লোজনকে গুরুত্ব দেয়া। তার অপকর্ম ও একগুয়েমি মতের বিরুদ্ধে গেলেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ছাড়াও যে কাউকেই মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশী হয়রানী ও ব্যাক্তিগত ক্যাডার, লালিত সন্ত্রাসীদের দ্বারা হামলা, অপহরণ,নির্যাতন করানোর মত একাধিক ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো এমনকি সরকারি দফতরের বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে নিজে ও পরিবারের এবং অন্য সুবিধাভোগীদের বেপরোয়া অসদাচরণ করত ক্ষমতার অপব্যবহারের নজির স্থাপন করেছেন এমপি রতন তার গোটা নির্বাচনী এলাকায়। যদিও এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন তিনি।
এমপি রতনকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদক মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) সাইদ মাহবুব খান বলেন, উনার (এমপি রতন) এমপির হওয়ার আগের যে সম্পদ এবং বর্তমানে যে সম্পদ এ যে পরিবৃদ্ধি এর ব্যাখ্যা আমরা উনার কাছ থেকে চেয়েছে , জানতে চেয়েছি, পাশাপাশী উনি যে (সুনামগঞ্জ)-১ নির্বাচনী এলাকায় এমপি সেখানকার জলমহাল, বালু পাথর মহাল, ঘাট ইজারা এবং ধর্মপাশায় একটি পাওয়ার প্লান্ট হচ্ছে কোরিয়ার উদ্যোগে সেটার সাথে উনার সম্পৃক্ততা কিছু কিছু এসেছে। কানাডার সম্পদের বিষয়ে উনার কাছ থেকে প্রাথমিক তথ্যটা পাওয়ার পরে আমাদের যে মাণি লন্ডারিং ইস্যু সিষ্টেম রয়েছে তার মাধ্যমে আমরা ওখানকার (কানাডার) সম্পদের বিষয়ে তথ্যাদি সংগ্রহ করব।
অনুসন্ধানের বিষয়ে আবারো এমপি রতনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদকে তলব করা হবে বলেও জানান দুদুদ মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) সাইদ মাহবুব খান।
এর আগে ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর দুদক এমপি রতনের বিদেশ যাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তখন এসবির ইমিগ্রেশন শাখায় দুদকের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, দুদকের অনুসন্ধানে এমপি রতনের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ক্যাসিনোসহ নানা মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে অনুসন্ধানে নামে দুদক।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd