সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:৪৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক পাপিয়া চৌধুরী ও তার স্বামী শহর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমন ওরফে মতি সুমনকে নিয়ে নরসিংদীজুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। রাজনীতির অন্তরালে অস্ত্র, মাদক ও দেহ ব্যবসায় জড়িত থাকার দায়ে গতকাল শনিবার র্যাব তাদের আটক করে।
এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল বাইজি সর্দারনিবেশে পাপিয়ার ভিডিও। নারী নেত্রীর অন্তরালে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কথা বের হতে শুরু হয়েছে। মুখ খুলতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও পতিতাভিত্তিক ব্যবসার পাশাপাশি ব্ল্যাকমেইল করে গড়ে তুলেছেন কোটি কোটি টাকার সাম্রাজ্য। অনৈতিক কার্যকলাপের ভিডিও ধারণ করে ধণাঢ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়াই তাদের প্রধান পেশা।
পাপিয়া ও সুমনের নেপথ্যের কাহিনি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর সন্ত্রাসী দম্পতির কথা এখন ‘টপ অব দ্য টাউন’। এরই মধ্যে রোববার র্যাবের একটি দল তাদের বাড়ি অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করে। অপরদিকে অনৈতিক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়া যুব মহিলী লীগের শামীমা নুর পাপিয়াকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগ।
স্থানীয় রাজনীতিবিধ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০০ সালের দিকে নরসিংদী শহর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমনের উত্থান শুরু। শৈশব থেকেই চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও ব্ল্যাকমেইল ছিল সুমনের প্রধান পেশা। দূরদর্শী চতুর ও মাস্টারমাইন্ড সুমন রাজনীতিবিদদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। ২০০১ সালে পৌরসভার কমিশনার মানিক মিয়াকে যাত্রা প্যান্ডেলে গিয়ে হত্যার পর তিনি আলোচনায় আসেন। এরই মধ্যে পাপিয়া চৌধুরীকে বিয়ে করেন সুমন। এরপর তার স্ত্রী পাপিয়াকে রাজনীতিতে কাজে লাগান।
প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেন হত্যাকাণ্ডের পর দুর্বৃত্তায়ন রোধকল্পে বর্তমান মেয়র কামরুজ্জামান কামরুল সন্ত্রাসী সুমন ও তার স্ত্রী পাপিয়া চৌধুরীকে আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ডে আসতে নিষেধ করেন। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের বিভাজকে কেন্দ্র করে পাপিয়া চৌধুরী ও তার স্বামী মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমন সদর আসনের এমপি লে. কর্নেল (অব.) মো. নজরুল ইসলামের (বীরপ্রতীক) বলয়ে যোগ দেয়। পাশাপাশি তাদের ঢাকা সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি সাবিনা আক্তার তুহিনের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে।
এরই মধ্যে ২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর জেলা যুব মহিলা লীগের সম্মেলনে তৌহিদা সরকার রুনা সভাপতি ও পাপিয়া চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রয়াত নেতা আসাদুজ্জামানের স্মরণসভায় বিশাল শোডাউন আর শত শত লোক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিটি মিছিল ও সভায় তারা যোগ দেন। এছাড়া স্থানীয় এমপির সভা-সমাবেশে তাদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। রাজনীতিতে তারা স্থানীয় এমপি নজরুল ইসলামের সমর্থক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন।
এদিকে অসামাজিক কার্যকলাপ ও অবৈধ কর্মকাণ্ড এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে র্যাবের হাতে গ্রেফতার পাপিয়াকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। দুপুরে যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আকতার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অপু উকিল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কথা জানানো হয়।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd