সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:১০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : দুই বছর সংসার করার পর কাবিননামা চাওয়ায় স্ত্রীর গোপন ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন এক স্বামী। অভিযুক্ত স্বামী ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী মনির হোসেন লোকমান।
এ অবস্থায় স্ত্রীর মর্যাদা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সালমা বেগম। এরই মধ্যে স্ত্রীর অধিকার চেয়ে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মনির হোসেন লোকমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সালমা। মনির হোসেন লোকমান চরফ্যাশন পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের জালাল মাস্টারের ছেলে ও ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী।
ভুক্তভোগী সালমা বেগম চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগড় ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের কাশেমগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। সোমবার রাতে ভোলা শহরে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সালমা বেগম বলেন, ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের জন্য চরফ্যাশন নির্বাচন অফিসে যাই। সেখানে অফিস সহকারী মনির হোসেন লোকমানের সঙ্গে পরিচয় হয়। এনআইডি দ্রুত সংশোধন করে দেবে বলে আমার কাছ থেকে কাগজপত্র ও মোবাইল নম্বর নিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলে লোকমান।
পরের দিন লোকমান মোবাইলে কল দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কথা বলতে শুরু করে। একপর্যায়ে আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এরপর তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন পর লোকমান আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। ২০১৯ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিয়ের কথা বলে আমাকে ঢাকার শ্যামলীতে লোকমানের বন্ধুর বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে কাজি ডেকে আমাদের বিয়ে পড়ানো হয়।
ওই সময় কাবিননামার কথা বললে এনআইডি সংশোধন করে তারপর কাবিন করবে বলে জানায় লোকমান। বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর হিসেবে সংসার করতে থাকি। শ্বশুরবাড়ি যেতে চাইলে সময় হলে নিয়ে যাবে বলে জানায়। এরই মধ্যে নিজেদের মেলামেশার কিছু অশ্লীল ভিডিও ও ছবি নিজের কাছে রেখে দেয় লোকমান।
কিছুদিন পর লোকমানের কাছে কাবিননামা চাইলে ক্ষিপ্ত হয়। সেই সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে আমাকে মারধর করে; ওই দিন কোনো বিয়ে হয়নি বলে আমাকে জানায় লোকমান। বিষয়টি কাউকে জানালে আমাদের মেলামেশার অশ্লীল ভিডিও ও ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়। তবে আমাদের বিয়ের বিষয়টি লোকমানের চাচা হারুন ও আলম জানতেন।
বিষয়টি পরে তাদেরকে জানলে ধৈর্য ধরার কথা বলে দিনের পর দিন আমাকে আশ্বাস দেন। একসময় কিছু টাকা নিয়ে আমাকে বিদায় নেয়ার প্রস্তাব দেন তারা। এতে রাজি না হওয়ায় আত্মীয়-স্বজন ও বিভিন্ন লোকজন দিয়েও আমাকে হুমকি দেয় লোকমান। নিরুপায় হয়ে বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্যদের জানাই। লোকমান প্রভাবশালী হওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেননি।
সালমা বেগম বলেন, এরই মধ্যে চরফ্যাশন নির্বাচন অফিস থেকে বদলি হয়ে পটুয়াখালীতে যোগ দেয় লোকমান। বর্তমানে বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাচন অফিসে কর্মরত। স্ত্রীর অধিকার চেয়ে লোকমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে লোকমান বলে বেশি বাড়াবাড়ি করলে ইন্টারনেটে অশ্লীল ভিডিও ও ছবি ছেড়ে দেব। দুই বছর সংসার ও এত কিছুর পর এখন লোকমান বলছে আমাদের বিয়েই হয়নি। আমি সালমা বেগম নামে কাউকে চিনি না। বাধ্য হয়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ভোলার জজ আদালতে মামলা করি আমি।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে মনির হোসেন লোকমান বলেন, সালমা বেগমের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় আমার। তবে আমি সালমাকে বিয়ে করিনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন সালমা। তার অশ্লীল ভিডিও ও ছবি আমার কাছে নেই।
এ ব্যাপারে ভোলা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন আল মামুন বলেন, বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি আমি। তদন্ত করে এ বিষয়ে লোকমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd