সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৫:৩০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : বরগুনার বামনা উপজেলার বেগম ফাইজুন্নেসা মহিলা ডিগ্রি কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক আশরাফুল হাসান লিটনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন ওই কলেজের প্রাক্তন একছাত্রী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মেসেঞ্জার ব্যবহার করে এ হয়রানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওই ছাত্রীর।
শিক্ষকের দাবী তার ফেসবুক হ্যাক করে এসব করা হয়েছে। অন্যদিকে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে বহিস্কারও করেছেন। সম্প্রতি সাবেক কলেজ ছাত্রীর দেয়া এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে কলেজ শিক্ষক আসরাফুল হাসান লিটনের যৌন হয়রানির বিষয়টি প্রকাশ করেন তিনি। বিষয়টির সত্যতা প্রমাণ করতে মেসেঞ্জারের কিছু স্ক্রিনশর্টও আপলোড করেছেন।
আপলোড করা স্ক্রিনশর্টে দেখা যায়, কলেজ শিক্ষক আসরাফুল হাসান লিটন প্রথমে সাবেক ছাত্রীকে বারবারই কিছু একটা বলতে চাচ্ছিলেন। পরবর্তীতে মোবাইল নম্বর চান। এক পর্যায়ে ভিডিও কলে কথা বলেন, কল কেটে প্রথমে সরি বলেন। আবার কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজের গোপনাঙ্গের ছবি পাঠান।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীর ফেসবুক স্ট্যাটাস হু্বহু তুলে ধরা হল: ‘(কেউ কেউ) পড়তে নিলে পুরোটা পড়বেন। আধাপড়া বিষয়ে পরে ভারী কটুক্তি ছুড়বেন না। আমার হজম হবে না।
আমি জানি না আমি কি লিখতে যাচ্ছি। তবে এটুকু বুঝতে পারছি অন্তত কিছু মানুষের মুখোশ উন্মোচন অবশ্য প্রয়োজন। কোনদিনও ভাবি নি যে পরিচিত মানুষের নোংরা ম্যাসেজে আমার ফেসবুক ওয়াল নোংরা করতে হবে। আর আমি এতটুকু ভীত নই যে এজন্য পরবর্তীতে আরো ভয়াল কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় কি না! আমি নিজের ব্যাপারে অন্তত এতটা কনফিডেন্ট। একটি মানুষের সাথে যে ভালোবাসার সম্পর্ক আছে কখনো তিনিও চাইলে আমাকে ব্ল্যাকমেল করতে পারবেন না। যদিও তিনি সম্পূর্ণ বিপরীত চিন্তার মানুষ। তাই আমার কিছুতেই কিছু যায় আসে না। কাল যদি লোকে ঐ লুচুটার উপর না হেসে আমার উপর হাসে এই টপিক্স উল্লেখ করে তবে আমিও তাদের তথা এই সমাজের উপর উলটো হাসি হেসে দেব।
আমাদের সমাজের খুব একটা প্রবণতা আছে কোন প্রকার হ্যারাসমেন্ট হলে যদি ভিকটিম অভিযোগ করে সেক্ষেত্রে তাকেও এই হ্যারাসমেন্টের জন্য দায় নিতে হয়। আর কিছু মুখস্ত কথা তো থাকেই কুটনা মনোভাবের মানুষ গুলোর। এরা বলবে-‘এক হাতে কি তালি বাজে’এই টাইপ কথা বার্তা। তাদের জ্ঞাতার্থে পুরো কনভারসেশন আগা টু মাথা স্ক্রিনশট নিলাম। এরপরও যদি আপনার নোংরা কমেন্ট থেকে আমি নিজেকে প্রোটেক্ট করতে না পারি আমি মেনে নেব আমি সিরিয়সলি আপনার চিন্তার মতই বেশ্যা।
শুনে অবাক হবেন যে এই শুয়োরটা আমার কলেজ শিক্ষক ছিল অন্যদিকে আত্মীয় (বালের আত্মীয়)। আমি মানুষটাকে কি শ্রদ্ধাটাই না করতাম। কতটা মানসিক অবক্ষয় হয়েছে তার ভেবে দেখুন। কলেজে থাকতে শুনতাম হারামিটা বউকে মারধর করে পরক্ষণেই গরুর মাংস কিনে আনে খুশি করতে। তখন ভাবতাম দাম্পত্য জীবনে টুকটাক ঝগড়া তো হয়ই। তবুও তো তিনি মিটিয়ে নেয়ার চেষ্টা কর্নে। কিন্তু বিয়েও করেছে অন্তত ৪/৫ টা। এখন বুঝলাম যে ও কতটা অসুস্থ। আর ওর এই অসুস্থতা যতটা না ওর মনের তার অধিক ওর শরীরের কিছু উত্তেজক প্রত্যঙ্গের। গতকাল ফুফুর বাসায় থাকতে অনলাইনে বারবার কল করছিল। আমি ভাবলাম কোন জরুরি প্রয়োজন কি না। নক করার পর বললাম আপনি এখানে বলুন কেননা কথার ধরন অস্বাভাবিক লাগছিল। কিন্তু যে ভাবসাব দেখালো আমারই মনে হলো আমি হয়ত কোথাও ভুল করছি। তাই দিলাম নাম্বার। ফোনে কোন কল আসে নি। আজ আবার ম্যাসেজ দিচ্ছে দেখে আমি রিপ্লাই করলাম।
একপর্যায়ে সে ম্যাসেজে রিপ্লাই না করে ভিডিও কল দিল।রিসিভ হয়ে যাওয়ার পরপরই আবার কেটে দিলাম।এরপর আবার কল এলো।আমি অনেকটা বিরক্তি নিয়ে ফোন রিসিভ করি এটা বলতে যে- কি হয়েছে?কি এমন বলবেন আপনি?এবং আমি দেখলাম তিনি ক্যামেরাটা ঘুরিয়ে তার উলঙ্গ শরীরের বিকৃত অঙ্গভংগি করছে,এককথায় মাস্টারবেট।আমি যেন কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না।তাড়াতাড়ি ফোন কেটে দিলাম।কল কাটার পরও সে আমাকে অনবরত তার উলঙ্গ ছবি পাঠিয়ে যাচ্ছিল আর সেই সাথে ননস্টপ ভিডিও কল।আমি অনুভব করতে লাগলাম- আমার বুক কাপছে এবং চোখ থেকে টপাটপ পানি পড়ছে!!!কিছুতেই নর্মাল হতে পারছিলাম না। সারাটা জীবন আমি কি তবে শিক্ষকের ভুল সংজ্ঞা জেনে এসেছি না কি শিক্ষক হিসেবে একটা ভুল মানুষকে জেনেছি??মাথায় খেলছে বহু প্রশ্ন,উত্তর নেই একটিরও।আমি সত্যি কাদছি এজন্য যে আমার অনেক শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের এখন অনেকে কবরে এবং অনেকেই প্রবীণ।যারা আমার কাছে ছিলেন ঈশ্বরপুত্রের ন্যায়,এমনকি এখনো।মুহূর্তের জন্য হলেও নিজেকে ধিক্কার দিলাম কাকে আমি স্যার সম্বোধন করেছি?সে তো জানোয়ারের চেয়েও অধঃ।অথচ আমাদের পুরো পরিবার ওকে যথেষ্ট ভালো জানে,আজকের আগে আমিও জেনে আসতাম যেমনটা!!
পরক্ষণেই আমি ভাবলাম নিজেকে কেন দোষ দিচ্ছি?দোষ তো আমার না।দোষ তো এই ধ্রুব প্রথার।চাইলেই যেখানে রাবণ বসতে পারে রা্মের গদিতে।কথার পিঠে আর এক কথা এলো।এই শিশ্নধারী কলেজের ইতিহাসের শিক্ষক অথচ একদিন বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ছোটদুটা বিখ্যাত লাইনের উপমাবাণী বলতে পারে নি(যতদিন রবে পদ্মা,যমুনা,গৌরি,মেঘনা বহমান……)।এই তো একটা কালপ্রিট।এমন হাজার কালপ্রিট আছে যেগুলা ভণ্ড শিক্ষকের মুখোশ পরে এখানে ওখানে পড়াচ্ছে আর সুযোগ পেলে এরাই মুখোশ খুলে ধর্ষক হয়ে উঠছে।খোদার কসম প্রত্যেকটার মুখোশ টেনে সত্যিটা দেখানোর অপেক্ষা,কিন্তু দেখাবোই। নাটকের ছাত্রী তাই উদাহরণেও নাটকের চিন্তা চলে আসে।সাঈদ আহমেদের ‘তৃষ্ণায়’ নাটকে তিনি এনথ্রোপমোরফিক পদ্ধতি ব্যবহার করে পশুর মধ্য দিয়ে মানুষের লোভাতুর চিত্র আর এর বিপরীতে প্রচ্ছন্ন প্রতিবাদের ইংগিত দিয়েছেন।যেখানে কুমির মা তার সাত কুমির বাচ্চাকে শেয়াল পণ্ডিতের কাছে গচ্ছিত রাখে।আর শেয়াল একে একে ছয়টিকে খেয়ে ফেলে।কেবল একটিকে বাচিয়ে রাখে এবং কুমির মা সন্তানের খোজ নিতে এলে শেয়াল একটি কুমিরকেই বারবার দেখিয়ে মাকে ধোকা দেয়।এটি বিখ্যাত বিস্ট ফ্যাবল থেকে নেয়া।নাটকের পরিণামে মা তার শেষ সংলাপ দেয়-‘একদিন সাত নয়,সত্তর নয় সঙ্গে থাকবে হাজার হাজার,লক্ষ লক্ষ কুমিরছানা।আমি আবারো আসব সেদিন।দেখব তোর ক্ষুধা মিটতে কতদূর!!!
আমার বোন এখন ঐ কলেজেই পড়ছে।প্রধান অভিভাবক প্রিস্নিপাল স্যার যিনি প্রত্যেকটা মেয়ের নিরাপত্তা ছাউনি তিনি কিছুদিন পর অবসরে যাবেন।তখন এদের নিরাপত্তা কে দেবে? এখন হাজারো বোন পড়ছে,ভবিষ্যতে আসবে আরো হাজার লক্ষ ছাত্রী।তাও আবার মহিলা কলেজ?আমাদের মায়েরা তাদের সন্তানকে সেখানে মানুষ হবার জন্য পাঠায় আর এসব অমানুষেরা,এই শেয়ালেরা যৌন লালাঝরানো জিভে ওঁৎ পেতে থাকে ওদের তৃষ্ণা নিয়ে।সুযোগ পেলেই কুমির ছানার নিস্তার নেই। আমাদের মায়েরাও দেখবে,আমরাও দেখব আর কতক্ষণ,কতদিন,কতযুগ তোর ঐ কামাতুর অঙ্গ তিরিং বিড়িং করতে পারে।একটা সময় তো ক্লান্তি আসবেই,আসবে দমনও। বরাবরের মত প্রার্থনা, এই পঞ্চম, না না শ্রেণিহীন বর্গের প্রাণিদের শিশ্ন বিপদজনক হয়ে ওঠার সাথে সাথে খসে পরুক।ঠিক টিকটিকির লেজ যেমন খসে পরে।
বিদ্র: এই একটা পশুকে দিয়ে আমার বাকী সব শিক্ষকদের বিচার করবেন না,অনুগ্রহ রইলো। জানেনই তো দেবতার আড়ালেই অশুর হাসে। আর পিচাশটার সব ছবি আপ দিয়েছিলাম না কিন্তু ভাবলাম ও যেহেতু দেখাতে চায় দেখানওই ভালো। আর আমার সাথে যে বোনরা ফেসবুকে সংযুক্ত আছ পশুটাকে চিনিয়ে দিও সকলের কাছে। নিজেরাও চিনে নিও সবার আগে। স্যার আপনি অবশ্যই বিষয়টা দেখবেন,আশা রাখছি।’
এ বিষয়টি জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক আশরাফুল হাসান লিটনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd