সিলেট ১১ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১২ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:৪৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ৪, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও নামের মিল থাকায় ভুল করে এক কাঠমিস্ত্রীকে আটক করে ছেড়ে দেওয়ার সময় ৪ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শ্রীপুর থানার এসআই হারুনের নামে। ভুক্তভোগীর স্বজনরা জানিয়েছেন, পুলিশকে যে টাকাটা দেওয়া হয়েছে ওই টাকাটা ছিল আটক হওয়া ব্যক্তির শারীরিক অক্ষম সন্তানের ভিক্ষা করা টাকা।
পুলিশের ভুলে আটক হওয়া ভুক্তভোগীর নাম কামাল হোসেন (৩৫)। তিনি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের শিমুলতলা গ্রামের মাহমুদউল্লাহ’র সন্তান। কামাল হোসেনের পিতা এলাকায় মাহমুদউল্লাহ করাতি নামে পরিচিত।
প্রকৃত আসামির নাম কামাল হোসেন (৪৫)। তিনি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের শিমুলতলা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর সন্তান। কামাল হোসেনের পিতা এলাকায় মোহাম্মদ আলী বেপারী নামে পরিচিত
ভুক্তভোগী কামাল হোসেন জানিয়েছেন, ‘সোমবার (২ মার্চ ২০২০) বিকাল চারটায় আমাকে আমার বাড়ি থেকে আটক করে বিভিন্ন স্থানে দেরি করে রাত আটটায় থানায় নিয়ে যায়। থানার ভেতরে আমাকে এক ঘন্টা আটক রেখে রাত নয়টা ৮ মিনিটে থানা থেকে ছাড়ে।
এ ঘটনায় পুলিশ ৪ হাজার টাকা নিয়েছে। পুলিশের সাথে টাকা লেনদেন করেছেন স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আশরাফুল ঢালী। আমার পরিবারের লোকজনের যাতায়াত বাবদ ব্যয় হয়েছে এক হাজার ৩৫০ টাকা। পুলিশের ভুলে আমি আটক হলেও মোট ৫ হাজার ৩৫০ টাকা ব্যয়ে আমি থানা থেকে ছাড়া পাই। আমি নির্দোষ থাকার পরও আমার কাছ থেকে টাকা নেওয়ায় আমি পুলিশের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি’।
মঙ্গলবার (৩ মার্চ ২০২০) বিকালে ভুক্তভোগী পরিবারসহ এলাকাবাসী এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রকৃত আসামি ১১ বছর যাবৎ মালয়েশিয়া থাকে। তার পিতার নাম মোহাম্মদ আলী। তার নামে ২০০৫ সালে একটি বন মামলা হয়।
সোমবার বিকালে যাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তার পিতার নাম মাহমুদউল্লাহ। প্রকৃত আসামির পিতার নাম মোহাম্মদ আলী। প্রকৃত আসামি যে মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি একই মামলায় তার স্ত্রী ও আসামি। প্রকৃত আসামির স্ত্রী’র নাম শিরিনা আক্তার। পুলিশের ভুলে যিনি ঘুষ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন তার স্ত্রী’র নাম জায়েদা খাতুন। জায়েদা খাতুনের নামে কোনও মামলা নেই।
স্মরণীয় সম্প্রতি রফিকুল ইসলাম নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে চালান করে শ্রীপুর থানা পুলিশ। পরে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয় ভুল আসামিকে আদঅরতে চালান দেওয়া হয়েছে।
এতো সব পার্থক্য মেম্বারসহ প্রায় একশত মানুষ আটকের পর পুলিশকে জানালেও তিনি কর্ণপাত করেননি। আমরা এলাকার সকলেই ঘুষখোর পুলিশের শাস্তি চাই।
এ ব্যাপারে ওয়ার্ড মেম্বার আশরাফুল ঢালীকে তার এলাকায় গিয়ে না পেয়েও মঙ্গলবার ও বুধবার ( ৩ ও ৪ মার্চ ২০২০) একাধিকবার ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি। মোবাইল ফোনে মেসেজ পাঠানোর পরও তিনি কোনও উত্তর দেননি।
অভিযুক্ত এসআই হারুন মিয়া জানিয়েছেন, ‘নামের মিল থাকায় ওসি স্যারের নির্দেশ তাকে আটক করে থানায় আনা হয়। টাকা লেনদেনের কোনও ঘটনা ঘটেনি।’
এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী জানিয়েছেন, ‘হ্যাঁ একজন লোক ধরে আনছিল নাম হইলো কামাল। নাম বাপের নাম কিছুটা ইয়া আছে এই কারণে ওনারে ইয়া করা হইছে ঠিক আছে! ঘটনাস্থল থেকে আমাকে বিষয়টি অবগত করছিল পরে বিভিন্নভাবে বিস্তারিত যাচাই করে আমরা তাকে ছেড়ে দিয়েছি’। ঘুষ লেনদেনের প্রশ্নে তিনি বলেন, না না এ ধরনের কোনও ইয়া নাই। অভিযোগ দিলে আমরা দেখবো।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এ কে এম জহিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘কোনও অপরাধই ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। লিখিত অভিযোগ দিলে আমাদের ব্যবস্থা নিতে সুবিধা হয়।’
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd