সিলেট ৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:৫১ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৩, ২০২০
শাহজাহান রাজু, জাফলং থেকে :: করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যেও বন্ধ হচ্ছে না জাফলংয়ের বুঙ্গা। সিলেটের জাফলং সীমান্ত দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার চোরাই পণ্য আনা-নেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাচ্ছে মটরশুঁটি, মসুর ডাল, ছানার ডাল ও রসুন। আর ভারত থেকে চোরা কারবারিরা নিয়ে আসছেন ভারতীয় মদ, ফেনসিডিল, ইয়াবা, সুপারি ও গরু।
সবচেয়ে বেশি চোরাচালান হচ্ছে জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার স্পট দিয়ে। এর মধ্যে জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট সীমান্ত এলাকা থেকে মাঝে মধ্যে ভারতীয় গরু ও সুপারি এবং বাংলাদেশি মটরশুঁটি জব্দ করে বিজিবি। পণ্য জব্দ করলেও এর সঙ্গে জড়িত কোনো চোরাকারবারিকে আটক করতে পারেনি তারা। অভিযোগ রয়েছে বিজিবির অসাধু কিছু সদস্যের মাধ্যমে অভিযানের খবর আগেই চলে যায় চোরাকারবারিদের কাছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, দিন গড়িয়ে রাত হলেই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)-এর যৌথ টহল এড়িয়ে একাধিক চোরাই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত পথ দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে ঢুকে গরু, মদ, ফেনসিডিল, নাসির বিড়ি, ইয়াবা, গাঁজা, হেরোইন, অস্ত্র, মোটরবাইকসহ বিভিন্ন পণ্য।
এদিকে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে রাতের বেলায় চোরাকারবারিরা এসব চোরাচালান দেশে আনলেও বর্তমানে বাংলাদেশি পণ্যের বিনিময়ে দিনের বেলাও দেশে ঢুকছে বড় বড় চোরাচালান। এই সকল চোরাই পণ্য নিয়ন্ত্রণ করছেন মামার দোকান পাথর টিল্লার বাসিন্ধা আসু মিয়া ও তার ছেলে রুবেল জাফলংয়ের মুতলিব ও মোহাম্মদপুরের সুমন। এই চারজন মিলে প্রতিনিয়ত ভারত বাংলাদেশে বুঙ্গার মাল আদান প্রদান করছেন। উৎকুচ পেয়ে নিরব প্রশাসন। রহস্যজনক কারণে এই চক্রের কোন সদস্যকে আটক করা হচ্ছে না।
তামাবিল সীমান্ত এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, ভারতের অঙ্গ রাজ্য মেঘালয়, আসামসহ আশপাশের এলাকায় রসুনের দাম তুলনামূলক বেশি। তাই চীন থেকে বাংলাদেশে আনা রসুন, মটরশুঁটি, মসুর ডাল, ছানার ডাল, ডিজেল, সার, সিলিন্ডার গ্যাস, প্লাস্টিক, স্বর্ণের বার ও বাংলাদেশি মুদ্রা চোরাইপথে পাচার হচ্ছে অধিক মুনাফার লোভে। দিনদুপুরে ট্রাক ভরে রসুন পৌঁছাচ্ছে চোরাকারবারিদের আস্তানায়। সেখান থেকে পাচার করা হচ্ছে ভারতে। জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট সীমান্তে দিন-কিংবা রাতে সমান তালে এসব পণ্য সামগ্রী আদান-প্রদান হচ্ছে।
তারা জানান, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছানাকান্দি, জাফলং জিরো পয়েন্ট, সংগ্রাম সীমান্ত ফাঁড়ি, সেনাটিলা, উদ্ভিদ সংঘ নিরোধ কেন্দ্র, তামাবিল, নলজুরী এবং জৈন্তাপুর উপজেলার খাসি নদী, আলু বাগান, মোকামপুঞ্জি, শ্রীপুর, মিনাটিলা, ছাগল খাউরী নদী, কাঠাঁলবাড়ি, কেন্দ্রিরহাওর, কেন্দ্রীবিল, ডিবিরহাওর, ডিবির হাওর (আসামপাড়া), ঘিলাতৈল, ফুলবাড়ি, টিপরাখলা, কমলাবাড়ি, গুয়াবাড়ি, বাইরাখেল, হর্নি, কালিঞ্জী, ময়না, জালিয়াখলা, লালাখাল, জঙ্গিবিল, বাঘছড়া, তুমইর, বালিদাঁড়া, ইয়াংরাজা, সিঙ্গারীরপাড়, জকিগঞ্জের টিপাইমুখ, কোম্পানীগঞ্জের কালাইরাগ, উৎমা, সাদাপাথর বাংলাদেশ থেকে ভারতে এবং ভারত থেকে বাংলাদেশে চোরাইপথে পাচার হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের পণ্য।
মাদক সামগ্রীর বিষয় জানতে চাইলে তারা বলেন, কার্টনের ভেতরে কী থাকে আমরা কখনও দেখিনি। কারণ সময় খুব কম থাকে। দ্রুত নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিতে হয়। তবে বেশির ভাগ সময়ে গরুর চালান প্রবেশ করে বলে তারা জানান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd