সিলেট ১৭ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৮ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:২৫ পূর্বাহ্ণ, মে ১৭, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : রংপুরের গঙ্গাচড়া এতিমখানার এতিমদের ভরণ পোষনের অর্থ লুট করে অতি অল্প সময়ে হাফেজ হায়দার আলী বিরুদ্ধে স্ত্রী সন্তানসহ নামে-বেনামে জিরো থেকে প্রায় ১০ কোটির টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে।
গ্রামের বাড়ি কচুয়া ও রংপুর বিভাগীয় শহর অভিজাত ধাপ এলাকায় তার রয়েছে বিলাস বহুল কোটি টাকার ২াট ফ্লাট বাড়ি। রয়েছে ৭ একর কৃষি জমি। ঘরের ফানিচার ও আসবাবপত্র বিদেশ থেকে অর্ডার দিয়ে নিয়ে আসা। অথচ তিনি এতিম খানার পরিচালক হিসাবে মাসে বেতন পান ৯ হাজার ৮’শ টাকা।
সূত্রে জানাযায়, রংপুরের গঙ্গাচড়ায় নোহালী ইউনিয়নের কচুয়া এলাকায় কাতার চ্যারিটি দাতা গোষ্ঠির সহযোগিতায় খোবাইব ইবনে আদি (রাঃ) এতিমখানাটি কোরানের হাফেজসহ ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত এতিমদের শিক্ষা দিয়ে আসছে। এই এতিমখানারটির ছাত্র/ছাত্রীদের থাকা খাওয়া, ভরণপোষন শিক্ষক,কর্মচারী বেতন ভাতা দাতা সংস্থা প্রদান করে থাকে।
দাতা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী ওই প্রতিষ্ঠানে অনুদান প্রাপ্ত ছাত্রের সংখ্যা ৩২৮ ও ছাত্রী ৯৫ জন মোট ৪২৩ জন। প্রতি ছাত্র/ছাত্রীর ভরণ পোষনের জন্য প্রতি মাসে ৩ হাজার ১’শ টাকা প্রদান করেন দাতা সংস্থা। সে অনুযায়ী মাসে ভরণ পোষনের জন্য প্রতিষ্ঠানটি পান ১৩ লক্ষ ১১ হাজার ৩’শ টাকা।
কিন্তু সেখানে খোজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্র উপস্থিত থাকে ১৯০ ছাত্র ও ৪০ জন ছাত্রী ওই দাতা সংস্থার কাছে অর্থ পান। সে মতে ২৩০ জন ছাত্র/ছাত্রী অর্থ পেয়ে থাকেন। অতিরিক্ত ১৯৩ জন ছাত্র/ছাত্রীর ভূয়া ভাউচার ও ভূয়া একাউন্ট দেখিয়ে প্রতি মাসে হাতিয়ে নেন ৫ লক্ষ ৯৮ হাজার ৩’শ টাকা। যা এক বছরে ৭১ লক্ষ ৭৯ হাজার ৬ ’শ টাকা। এছাড়াও হাফেজ হায়দার আলীর বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের বিল্ডিং , গাছ ও পুকুরের মাছ বিক্রি, পুরাতন মসজিদের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে নতুন মসজিদ তৈরী করে বিল ভাউচার জমা দিয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
নোহালী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ (টিটু) বলেন, অদৃশ্য কারণে যোগ্যতা না থাকার পরেও হাফেজ হায়দার আলী ২০১১ সালে এতিমখানাটির পরিচালকের দায়িত্ব পান। তারপর থেকে তার ভাঘ্যের চাকা ঘুরতে থাকে। পৈত্রিক ভাবে বাবা আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার কাছ থেকে পাওয়া কৃষি জমি মাত্র ২০ শতক। হাফেজ হায়দার আলী এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে তার নিজ এলাকায় কৃষি জমি ক্রয় করেন ৭ একর যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। গ্রামের বাড়িতে কোটি টাকা ব্যয়ে ২য় তলা বিশিষ্ট ৪ হাজার স্কয়ার বর্গ ফুটের একটি বাড়ি নির্মাণ করেন।
বাড়ির আসবাপত্র ও ফানির্চার বিদেশ থেকে অর্ডার দিয়ে নিয়ে আসা। যার আনুমানিক মূল্য ৫০ লক্ষ টাকার উপরে। রংপুরের অভিজাত এলাকা মেডিকেল মোড়ে প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের জমির উপর কোটি টাকা ব্যয়ে আরও একটি বিলাস বহুল বাড়ি নির্মাণ করেন। সেখানেও রয়েছে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার দামী ফানির্চার । এছাড়া রংপুর শহরে আরও ২ কোটি টাকার মূল্যের জমি ক্রয় করেন তিনি। তিনি যে মটর সাইকেলটি চড়েন তার দাম প্রায় তিন লক্ষ টাকা। সব মিলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রায় ১০ কোটি টাকা উপর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে।
এতিমখানার পরিচালক হিসাবে হাফেজ হায়দার আলী বেতন পান ৯ হাজার ৮’শ টাকা। তার এক বছরে বেতন আসে এক লক্ষ ১৭ হাজার ৬’শ টাকা যা ৯ বছরে দাঁড়ায় ১০ লক্ষ ৫৮ হাজার ৪’শ টাকা। ৯ হাজার ৮’শ টাকা টাকা বেতন দিয়ে ১০ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন কি ভাবে সম্ভব? দূনীর্তি দমনসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর তদন্ত শুরু করলে হাফেজ হায়দার আলীর অবৈধ সম্পদের উৎস বের হয়ে আসবে বলে এলাকাবাসীর দাবী জানান।
এদিকে কাজলী নামের এক অভিভাবক কাতার চ্যারিটি বাংলাদেশ অফিসে অভিযোগ করে বলেন, তার এতিম দু মেয়ে রাবিনা ও মারজানা আক্তারে নামে রংপুর ধাপ শাখা ইসলামী ব্যাংকে ৩১ হাজার করে মোট ৬২ হাজার টাকা আসলেও হাফেজ হায়দার আলী তাদের কাছ থেকে চেকে অগ্রিম সহি নিয়ে ২৪ হাজার টাকা দিয়ে বিদায় দেয়। এবং তাকে বলা হয় বেশি বাড়াবাড়ি করলে পরিনাম খারাপ আছে। হায়দার আলীর এলাকায় রয়েছে বিশাল বাহিনী তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলেল ওই বাহিনী লেলিয়ে দেন তিনি।
কাজলীর বেগমে মত অসংখ্য অভিযোগ হাফেজ হায়দার আলীর বিরুদ্ধে জমা পড়লেও তা রহস্য জনক কারণে তদন্ত নামে মূখ থুবড়ে পড়ে।
এই বিষয়ে হাফেজ হায়দার আলীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে অনেকেই ষড়যন্ত্র করে আসছে। তার সম্পদেও বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন তার শ্বশুর বাড়ি থেকে তিনি প্রায় ২০ লক্ষ টাকা পেয়েছেন। তা দিয়ে তিনি এসব সম্পদ করেছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd