এসএমপির জালালাবাদ থানার ওসি অকিল উদ্দিনের মানবিকতা

প্রকাশিত: ৪:৪৮ অপরাহ্ণ, মে ২০, ২০২০

এসএমপির জালালাবাদ থানার ওসি অকিল উদ্দিনের মানবিকতা

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের জালালাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ অকিল উদ্দিন আহমদ। দেশের ক্লান্তিলগ্নে প্রতিনিয়ত মানুষের প্রতি মানবিকতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তেমনি এক ঘটনা চোখে পড়ে সোমবার (১৯ মে) রাত ১২ টায়।

অকিল উদ্দিন আহমদ রাত ১২ টার পরে থানার নিয়মিত কাজ শেষ করে বাসার উদ্দেশ্যে বের হয়ে থানার গেইটের সামনে আসা মাত্র দেখতে পান ৩৫/৪০ জন নারী পুরুষ দাঁড়িয়ে আছেন। সাথে সাথে পুলিশের গাড়িটি থামিয়ে নেমে পড়েন এই মানবিক অফিসার ইনচার্জ অকিল উদ্দিন আহমদ। তখন তাহার জানতে বাকি নেই কিসের জন্য তারা এসেছেন। সাথে সাথে কিছু খাবারের প্যাকেটের ব্যবস্থা করে তুলে দেন অসহায় মানুষের হাতে। পরে খাদ্য সামগ্রী হাতে পেয়ে খুশি হয়ে বাড়ি চলে যান খেটে খাওয়া অসহায় মানুষগুলো।

করোনা যুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশ “মুজিব বর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার” এই শ্লোগানকে বুকে ধারন করে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলাদেশ পুলিশ যে ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বর্তমানে ঠিক সেই ভাবে জনগণকে করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত রাখতে চালিয়ে যাচ্ছে নিরলস প্রচেষ্টা। পুলিশ সদস্যদের নিজের জীবন ও পরিবারের সদস্যরা সংক্রমিত হতে পারে যেকোন সময়। এই নিশ্চিত শংকা মনে রেখেই মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য আজ নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জেলা শহর, থানা এলাকা, ওয়ার্ড কিংবা গ্রাম ও পাড়া-মহল্লার প্রতিটি অলি-গলিতে বাংলাদেশ পুলিশের অকুতোভয় সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছে। যেভাবে প্রতিটি পুলিশ সদস্য জনগণের সুরক্ষায় নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছে, তা বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে গেঁথে থাকবে চিরদিন। পুলিশ তার দায়িত্বের চেয়েও বেশী কিছু করে যাচ্ছে শুধুই সাধারণ জনগণকে নিশ্চিন্তে নিরাপদে রাখতে।

আমরা যারা পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত বিরূপ মন্তব্য করি তাদের জানা উচিত বর্তমানে মহামারি করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় বাংলাদেশ পুলিশ মাঠে থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের মানুষকে নিরাপদ রাখতে চালিয়ে যাচ্ছে আপ্রাণ চেষ্টা। জীবনের মায়া ত্যাগ করে মাঠে নেমে কাজ করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে সবচেয়ে বেশি পুলিশ সদস্যরা। বাড়ি বাড়ি নিয়ে পৌঁছে দিচ্ছে খাদ্য সামগ্রী।

বিষয়টি নিয়ে জালালাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ অকিল উদ্দিন আহমদের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর নির্দেশ মোতাবেক করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় দিনরাত নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ। মহামারি করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে আঘাত আনার পর থেকে আমি প্রায় প্রতিদিনই এই ভাবে আমার সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী তাদের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। চাল, ডাল, তৈল, আলু, ময়দা, যখন যা পারি তাই দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াই। প্রতিদিনের মত মঙ্গলবার রাতে থানার কাজ শেষ করে বাসার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলাম, থানার গেইটের সামনে এসে দেখি নারী পুরুষ মিলে ৩৫/৪০ জনের মত লোক কিছু খাদ্য সামগ্রী পাওয়ার আশায় দাঁড়িয়ে আছেন। আমি সাথে সাথে তাদেরকে আমার সাধ্যমত যা পেরেছি তা দিয়ে তাদেরকে সাহায্য করেছি।

বিশেষ করে আমার থানার সামনে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ কিছু পাওয়ার জন্য জড়ো হন। তাদের শরিরের চেহারা দেখলে অনুভব করা যায় তারা কত অসহায়ত্বের মাঝে আছেন। তখন আমারও খুব বেশি কষ্ট হয়। তাদের হাতে যখন কিছু একটা তুলে দিতে পারি নিজের তখন খুব বেশি আনন্দ হয়। আমরা যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে অসহায় মানুষের সাধ্যমত সাহায্য করতে পারি তা হলে নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের সহায় হবেন এবং এই দানকে আল্লাহ কবুল করবেন। আজ ২৬ রমজান আমরা জালালাবাদ থানা এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে খেটে খাওয়া মানুষের কথা চিন্তা করে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করব।জালালাবাদ থানা পুলিশের এই সাহায্য সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..