গোয়াইনঘাট পর্যটন কেন্দ্রে আনন্দ ভ্রমনের নামে ছাত্রীদের অশ্লীলতা

প্রকাশিত: ২:০৩ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১২, ২০২০

গোয়াইনঘাট পর্যটন কেন্দ্রে আনন্দ ভ্রমনের নামে ছাত্রীদের অশ্লীলতা

সৈয়দ হেলাল আহমদ বাদশা :: দেশের প্রসিদ্ধ পর্যটন কেন্দ্রের মধ্যে অন্যতম পর্যটন স্পট হচ্ছে সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার পান্তুমাই, বিছনাকান্দি, জাফলং ও রাতারগুল। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদা পাথর অন্যতম। ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পিয়াইনের বুক চিরে স্বচ্ছ পানিতে গা ভাসিয়ে আনন্দ উপভোগ করে হাজারো পর্যটকরা। প্রতিনিয়ত দেশ ও দেশের বাহিরে থেকে পর্যটকদের সমাগম ঘটে এসব পর্যটন স্পটগুলোতে। পর্যটকদের সমাগমে এই অঞ্চলের মানুষ পুলকিত ও গর্বিত।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ দুই উপজেলার প্রধান সড়ক অনেকগুলা গ্রামের ভিতর দিয়ে স্কুল কলেজ মসজিদ মাদ্রাসা ও যানবাহনের স্টপিজের বুক চিরে অতিবাহিত হয়েছে পর্যটন স্পটগুলোতে। স্কুল কলেজ মাদ্রাসার শুরুতে এবং ছুটির সময় কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে যানবাহনের অপেক্ষায় দীর্ঘ সময় থাকতে হয়। এমন কি রাস্তার যাত্রীরাও যানবাহনের জন্য সাথে থাকা ছেলে মেয়ে ভাই বোন ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়েও দাঁড়িয়ে থাকেন স্টপিজ গুলোতে। যেখানে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরাও থাকেন। দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পর্যটকরা এইসব প্রধান সড়ক দিয়েই যানবাহনে যাতায়াত করেন। বিশেষ করে সিএনজিতে বসা কপোত-কপোতীর বসার কুরুচিপুর্ন ভঙ্গি ও খারাপ কার্যকলাপ দেখে ছোট ছোট বাচ্ছারা হাসে আর স্কুল পড়ুয়া কোমল মতি শিক্ষার্থীরা লজ্জায় পড়ে মুখ লোকায় সাধে থাকা অভিবাবকরা পড়েন বিড়ম্বনায়।আমাদের গ্রাম গঞ্জের ঐতিহ্য নিজস্ব সংস্কৃতির বিলুপ্তির অন্তরায়, উগ্র সংস্কৃতি আর ইউরোপীয় পোশাক পরিচ্ছেদের অভিপ্রায়। যা গ্রামের সাদাসিধে সাধারণ মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে।

ইদানিং এসকল পযটকরা স্থানীয় এলাকার মানুষের অসস্থির কারন হয়ে দাড়িয়েছে। উলংপনা, অবাদ গান বাজনা , যুবক যুবতীদের হাশি তামাশা ধর্মপ্রান মানুষদের মনে বর্তমান কস্টের কারণ। দিনদিন এলাকার সাধারন মানুষদের সহ্যের সীমা অতিক্রম করছে। স্থানীয় একজন প্রবিন মুবব্বি জানান- বহিরাগতদের আচরণ দেখে এলাকার ছাত্র ছাত্রীরা প্রভাবিত হচ্ছে। অবাদ গান বাজনা শুনা, আধুনিক হেয়ার কাটিং সহ যুবক যুবতীরা ভিন্ন আদশে অনুপ্রানিত হচ্ছে। আমি মনে করি এটা আমাদের জন্য লজ্জা জনক। বহিরাগত বিশবিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা অবাদে ধুম্পান করে এমনকি কেউ কেউ মদ্যপানও করে। এটা দেখে আমাদের যুবকরাও মদ্যপানে লিপ্ত হতে পারে। তাই আমি মনে করি পযটকরা অবশ্যই স্থানীয় এলাকার কথা বিবেচনা করে নিজেদের আচরন , অঙ্গ ভঙ্গী , এবং ভদ্রতা বজায় রাখবে।।

আসা-যাওয়ার পথে গাড়িতে দুই উপজেলার কিংবা নৌকায় উচ্চ আওয়াজে সাউন্ড সিস্টেমে/মাইকে অশ্লীল ও কু-রুচিপূর্ণ নৃত্য ও গানবাজনার দরুন মসজিদ, ধর্মীয় উপাসনালয়ে মুসল্লীদের উপাসনায় মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটে এবং এ অঞ্চলের মাদরাসা, স্কুল কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদানে বাঁধা সৃষ্টি হয়। তাছাড়া ধর্মীয় অনুশাসনের কঠোর প্রবান্ত হিসেবে বৃহত্তর জৈন্তার একটি সুখ্যাতি সারা দেশে স্বীকৃত। কিন্তু কিছু পর্যটকদের এহেন অশ্লীলতার কারণে এলাকার ছেলে মেয়েদের মারাত্মক নৈতিক অবক্ষয় হচ্ছে। সর্বোপরি শব্দদূষণের মত ভয়ংকর সামাজিক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।

এতে সার্বিকদিক বিবেচনা করে গত ১০ আগস্ট (সোমবার) গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফারুক আহমেদ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুস সাকিবের বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন গোয়াইনঘাটের রুস্তমপুর ইউনিয়নের সর্বস্তরের তৌহিদি জনতার পক্ষে মোহা. আখলাকুল আম্বিয়া, মোহা. আল-আমিন, রুহুল আমিন, বোরহান উদ্দিন ও আব্দুস সোবহান।

এতে তারা পর্যটকদের গাড়ি কিংবা নৌকায় উচ্চ আওয়াজে/মাইকে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ নৃত্য ও গানবাজনা বন্ধের জন্য অনুরোধ করেন। সাথে সাথে রাস্তা এবং নদী পথের বিভিন্ন পয়েন্ট ও মোড়ে গানবাজনা বিরোধী জনসচেতনতামূলক বিলবোর্ড স্থাপনের অনুমতি চান।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..