গোয়াইনঘাটে অবৈধভাবে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার! ঝুঁকিতে মানুষ

প্রকাশিত: ৭:৫৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৮, ২০২০

গোয়াইনঘাটে অবৈধভাবে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার! ঝুঁকিতে মানুষ

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি :: সময় বাচাঁতে জীবনের ঝুঁকি। আসল নাকি নকল চেনাটা অনেকটাই অস্বাভাবিক। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের লোভে অবৈধ ও নকল গ্যাস সিলিন্ডারের ছড়াছড়িতে বাজার ছাপিয়ে রেখেছে প্রস্তুতকারী ব্যবসায়ীরা। মেয়াদ শেষ হওয়া অথবা নকল সিলিন্ডার সঙ্গে রাখা মানে নিজের সাথে বোমা রাখা।

একের পর এক বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটছে হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। সকলের চোখের সামনে এ সকল ঘটনা ঘটছে। তারপরও কি কোন ব্যবসায়ী সঠিকভাবে সিলিন্ডার গ্যাস বিক্রি করছে? অবৈধ গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ীরা বন্ধ হচ্ছে? নকল গ্যাস সিলিন্ডার প্রস্তুত বন্ধ রাখা যাচ্ছে? এ সকল নকল গ্যাস সিলিন্ডার প্রস্তুতকারীরা মানুষের জীবন মৃত্যু নিয়ে ব্যবসা করে। কিন্তু দায়িত্বে থাকা বিস্ফোরন অধিদপ্তর কি করছে? এসকল প্রশ্ন আসল-নকল গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারকারী সাধারণ মানুষের। গ্রাহকের চাহিদা মেঠাতে গোয়াইনঘাট উপজেলা জুড়ে সরকারি নিয়ম না মেনে যত্রতত্র ঝুঁকিপূর্ণ এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছেন এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে ব্যবসা করে গেলেও নীরব রয়েছে প্রশাসন।

অদৃশ্য এ নীরবতাকে পুঁজি করে ফুটপাতে এমনকি আবাসিক এলাকাতেও বেড়েছে গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা। যেসব স্থানে গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবসা করছেন সেসব স্থানে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা। প্রশাসন বলছে জনবল সঙ্কটের কারণে অভিযান পরিচালনা করা যাচ্ছে না।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গোয়াইনঘাট উপজেলার প্রত্যেকটি হাট-বাজারসহ অলিতে-গলিতে বিভিন্ন জায়গায় যত্রতত্র এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের দোকান রয়েছে। এসব দোকান মালিকেরা কোনো বিধি-নিষেধ মানছে না। বিস্ফোরক পরিদফতরের অনুমোদন ছাড়াই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় দিনে দিনে অবৈধ গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায় মানুষ জনের আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। এসব ব্যবসায়ীদের কাছে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণে অগ্নিনির্বাপন যন্ত্রপাতি। ফলে দুর্ঘটনার শঙ্কা রয়ে যায়।

কিন্তু, এতে করে কি সংগঠিত হয়ে যাওয়া ঘটনার পূর্বের অবস্থা কখনো ফিরে আসে না। ফিরে আসে প্রিয়জন? ফিরে আসে চোখ থেকে ঝড়ে পড়া অশ্রু? কিন্তু ফিরে আসে একের পর এক এ সকল অসাধু অবৈধ নকল সিলিন্ডার গ্যাস প্রস্তুতকারীরা। এদের কাছ থেকে বাঁচতে হলে যানতে হবে সকল পণ্যের মত সিলিন্ডারেরও মেয়াদ শেষ বা প্রস্তুতের মেয়াদ থাকে। কিভাবে জানা যাবে সিলিন্ডারের মেয়াদ? অ, ই, ঈ, উ সংকেত দিয়ে বুঝানো হয়েছে ৩ মাস করে ১ বছরকে।

দেশের সব জায়গায় বিশ্লেষণের পরে দেখা যায় বেশিরভাগ জায়গার আগুনের সূত্রপাত গ্যাসের কারণে হয়। তাই জনসাধারণকে গ্যাসের ব্যবহার সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। এবং প্রত্যেকদিন গ্যাসের লাইজার কিংবা গ্যাসের পাইপ কোন জায়গায় লিক আছে কিনা সে বিষয়গুলো নিজ দায়িত্বে ভালো ভাবে যাচাই করতে হবে। আর তাহলেই অগ্নিকান্ডের ঘটনাগুলো আস্তে আস্তে কমে আসবে।

গ্যাস সিলিন্ডার কোম্পানীর একজন ডিলারের সাথে কথা হলে (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) তিনি জানান, সিলিন্ডারের ১২ কেজি গ্যাসকে নকল করে ৩৬ কেজি তৈরি করে । নকল গ্যাস প্রস্তুত করে পানি ও নষ্ট তৈলের গাদ রেখে পাইপের মাধ্যমে হাওয়া দিয়ে চাপ সৃষ্টি করে। এছাড়া নামি-দামি কোম্পানীর গ্যাস সিলিন্ডারের অবিকল নকল করে বোতলের ক্যাপ থেকে শুরু করে সব কিছু সরবরাহসহ মজুত করে রাখে অবৈধ নকল গ্যাস সিলিন্ডার প্রস্তুতকারীরা। এসকল নকল গ্যাস বিভিন্ন এলাকায় রিফিল করা হয়। যেই বোতলের মেয়াদ নেই সেই বোতল গুলোকে সরবরাহ করে মার্কেটের বিভিন্ন দোকান থেকে এবং বিভিন্ন কোম্পানীর গ্যাস সিলিন্ডার নকল করে তৈরি করা হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার ।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, গোয়াইনঘাটের সিংহভাগ ডিস্ট্রিবিটরদের লাইসেন্স নেই এবং বিভিন্ন হাট-বাজারের হাতেগোনা কয়েক গ্যাস ব্যবসায়ী ছাড়া বাকি সকলেরই লাইসেন্স নেই।

উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নের হাদারপার বাজারের গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, আমার দোকানে ৪ বছর যাবত গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করি। প্রতিদিন ১২ টার অধিক গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হয়। বিভিন্ন কোম্পানী ও ডিস্টবিউটররা সিলেট শহর থেকে আমাদের কাছে গ্যাস সিলিন্ডার পাঠায়।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..