গোয়াইনঘাট সংবাদদাতা :: সিলেটের গোয়াইনঘাটে ভূয়া সাংবাদিক তানজিল’র প্রতারণার জাল। জনসাধারন অতিষ্ঠ, প্রকৃত সাংবাদিকরা বিব্রত, বিপাকে প্রশাসন। ভুয়া সাংবাদিকেরা বিভিন্ন প্রতারণার ফাঁদ পেতে নিজেদেরকে ‘সাংবাদিক’ পরিচয় দিয়ে নিরীহ লোকজনকে নানাভাবে হয়রানি করছে বলেও এন্তার অভিযোগ উঠেছে। সাংবাদিক পরিচয়ে এরা চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িত হয়ে পড়ছে। ভূয়া সাংবাদিকদের নানা অপকর্মের কারণে প্রকৃত পেশাদার সাংবাদিকদের ভাবমূর্তি এখন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে দাড়িয়েছে।
কথায় কথায় তোলে ছবি ভাবখানা তার সাংঘাতিক। তিলকে সে বানায় তাল-তালকে আবার তিল, চড়ুইকে সে পেঁচা বানায় কাককে বানায় চিল। পুলিশ দেখে মুখ লুকিয়ে পালায় দিগ্বিদিক, সবাই বলে লোকটা নাকি ভূয়া সাংবাদিক।
পেশাদার সম্মানিত সাংবাদিকদের জন্য বিষয়টি লজ্জাকর হলেও ছড়া ছন্দের মতই ভূয়া সাংবাদিকরা গোয়াইনঘাট জুড়ে বেহাল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে ফেলেছে। সাংবাদিকদের মতো বেশভূষায় সেজেগুজে একশ্রেণীর প্রতারক অলিগলি, হাট-বাজার চষে বেড়াচ্ছেন। প্রকৃত ঘটনা কি-সে ঘটনার আদৌ কোনো নিউজ ভ্যাল্যু আছে কি না, সেসব ভেবে দেখার ফুসরৎ তাদের নেই। পেটে বোমা ফাটালেও দু’ লাইন লেখার যোগ্যতাহীন টাউট বাটপারের দল চাঁদাবাজিতে সিদ্ধহস্ত। ভূয়া সাংবাদিকের দৌরাত্ম্য নতুন নয়, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তা বেড়ে অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।
এদেরই একজন তানজিল হোসেন। গোয়াইনঘাট উপজেলার ডৌবাড়ী ইউনিয়নের দাতারী গ্রামের মোঃ মাহমুদ আলীর ছেলে।
তানজিল র প্রতারণার জাল- তানজিল হোসেন বিরুদ্ধে তার নিজের ফেইসবুক থেকে বিভিন্ন সময়, জনপ্রতিনিধি ও সমাজের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদেরকে নিয়ে মানহানিকর অপপ্রচার করারও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও টাকার বিনিময় (রশিদবিহীন)মৌলিক গণস্বাক্ষর প্রকল্পের সার্টিফিকেট বিতরন করার অভিযোগও আছে তানজিলের বিরুদ্ধে।
অনুসন্ধানে জানাযায়, চলিত মাসের গত ৫ই আগস্ট উপজেলার ডৌবাড়ী ইউনিয়নের হাকুরবাজার এলাকায় সকাল ১০টায় মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের সার্টিফিকেট বিতরন করে তানজিল হোসেন। সাধারণ মানুষকে বুকা বানিয়ে একটি সার্টিফিকেট র মুল্য সর্বনিম্ন ১৫০থেকে ২০০টাকা করে হাতিয়ে নেয় সে। এলাকার সাধারণ মানুষ টাকার বিনিময় সার্টিফিকেট দেয়ার কথা জানতে চাইলে তানজিল হোসেন বলে সার্টিফিকেট আনতে তার নাকি বহু টাকা পয়সা খরচ হয়েছে। এরজন্য সে টাকা ছাড়া সার্টিফিকেট বিতরন করবেনা।
সুশীলরা বলছেন মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্প ২০১৭সালে গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিনামূল্যে কাজ করার লক্ষে অনেক প্রজেক্ট হাতে নিয়েছিল। মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্প কোন প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করতে কোন টাকা পয়সা নেয়নি বা চায়ওনি। হটাৎ করে তানজিল কেন টাকার মিনিময় সার্টিফিকেট বিতরন করবে। এমন প্রশ্ন জাগছিল অনেকের মনে।
বিষয়টি এলাকার মুরব্বীদের নজরে পড়লে মুরব্বীরা তানজিল হোসেনকে বলেন টাকার রশিদ দেয়ার কথা। তখন প্রতারক তানজিল কোন প্রকার রশিদ বা টাকার বিনিময় সার্টিফিকেট দেয়ার সটিক কোন তথ্য দিতে পারে নি। তখন মুরব্বীরা তাকে প্রতারক হিসাবে চিন্নিত করে। শুরু হয় তানজিলের কাকুতি মিনতি। আপনাদের টাকা আমি ফেরত দিয়ে দেব তবুও আপনার আমাকে ক্ষমা করে দেন। পরে একপর্যায়ে তানজিল সব টাকা ফেরত দিয়ে এলাকার মানুষের কাছে ক্ষমা চায়।
এ বিষয়ে মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের গোয়াইনঘাট উপজেলা সুপারভাইজার এনামুল হক বলেন। মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পে টাকার বিনিময় কোন কিছু দেয়ার প্রশ্নই আসেনা। টাকার বিনিময় সার্টিফিকেট বিতরনের কথা আমরা কাউকে বলিনি। তাছাড়া তানজিল কেন টাকার বিনিময় সার্টিফিকেট বিতরন করবে। এসবের কিছুই আমরা জানিনা। এধরনের অপকর্ম করে আমাদের মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্পের মানক্ষুন্ন্য করলে আমরা তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
Sharing is caring!