সিলেট ৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১:১৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৫, ২০২০
স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটের সদর উপজেলার ৪নং খাদিমপাড়া ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ৮নং ওয়ার্ডের টিকরপাড়া গ্রামে সরকারি পাহাড়ি পাতকী টিলা নামক স্থানে অবাধে চলছে টিলা কাটার মহোৎসব।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, বাড়িঘর নির্মাণের কথা বলে ৫০-৬০ ফুট উঁচু টিলা কেটে মাটির শ্রেণি পরিবর্তন করে সমতল করছেন দখল মালিক শফর আলী। আর পাহাড় ও টিলা কাটা মাটি বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে। এই মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে নিচু জমি এবং সরকারি পাহাড়ি টিলা কেটে অল্প কিছু মাটি রাস্তার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, পাহাড় কাটার কাজ শুরুর আগে সেখানে অনেক গাছগাছালি ও টিলা ছিল। সেগুলো প্রথমে পরিষ্কার করা হয়। তারপর মাটি খেকো শফর আলী মাটি কেটে নিয়ে যান এবং সেখানে একটি বিল্ডিং ঘর নির্মানের কাজ শুরু করেন। ঘরের কাজ কিন্তু এখন প্রায় শেষের দিকে। রাতের আঁধারে প্রশাসনের চোখের আড়ালে চোরি করে ওই সরকারি পাহাড়ি টিলায় শুরু হয় মাটি কাটা।
এদিকে পাহাড় কাটার মহোৎসব চললেও জেলা প্রশাসন, বনবিভাগ, উপজেলা প্রশাসন এবং থানা পুলিশের নীরব ভূমিকায় জনসাধারণ ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
এই ঘটনার সত্যতা জানার জন্য জনৈক সাংবাদিক ঘটনা স্থলে পৌঁছালে, মাটি খেকো শফর আলী দেশিয় অস্ত্র দা দিয়ে জনৈক সাংবাদিকের মাথা কেটে প্রাণে হত্যার জন্য ক্ষিপ্ত হয়ে উটলে তার ঘরে থাকা স্ত্রী ও অবিবাহিত মেয়ে তার গতিরোধ করেন। কিন্তু পরে সে শান্ত হলে তার ঘরে থাকা অবিবাহিত মেয়ে ও স্ত্রী জনৈক সাংবাদিক কে তথ্য সংগ্রহে বাধা প্রধান করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং পরে বলেন তর যতো ছবি তুলার ইচ্ছে হয় তুলে নিয়ে যা তুই কিছুই করতে পারবে না আমাদের।
এ বিষয়ে জনৈক সাংবাদিকের সাথে কথা বললে তিনি জানান, তিনি সরকারি টিলা কাটার খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে গেলে মাটি খেকো শফর আলী ও তার পরিবার উনাকে তথ্য সংগ্রহে বাধা প্রধান করে ও প্রাণে মারার চেষ্টা করে এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি প্রধান করে যার উপযুক্ত বিডিও প্রমাণ উনার কাছে আছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশবিদ আব্দুল হাই আল হাদী জানান, সিলেটের উত্তর পূর্বাঞ্চল ভূতাত্তিক পাহাড়ি অঞ্চল। সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক উন্নয়নের কাজে ১৯৯৬ সালে পাহাড় ও টিলার, বিশাল অংশ বিলিন করে দেয়া হয়। বর্তমানে যে টিলাগুলো রয়েছে তা বিপন্ন হয়ে গেলে পরিবেশের ভারসাম্য হুমকির মুখে পড়বে। পাহাড়কাটা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আশঙ্কা রয়েছে ভূমিকম্প বা লাগাতার বর্ষণের সময় ভূমিধস হয়ে বড় রকমের বিপর্যয় হতে পারে।
তাই তিনি পাহাড় খেকোদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার অনুরোধ জানান।
সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহুয়া মমতাজের সাথে মুটুফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এ বিষয়ে তিনি খবর নিচ্ছেন।
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ৬ (খ) ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরকারি বা আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন করতে পারবে না। তবে অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থে প্রয়োজনে অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে পাহাড় বা টিলা কাটা যেতে পারে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
এলাকার সচেতন মহল সরকারি পাহাড়ি টিলা কাটা ও মাটি খেকো শফর আলীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd