সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০২০
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের উত্তর পশ্চিমে মেঘালয় সীমান্ত ঘেষা উপজেলা তাহিরপুর। উপজেলার লাউড়েরগড়, বড়ছড়া, চারাগাও, বাগলী সীমান্তে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করে বাংলা কয়লা আর বাংলা কয়লার সাথে ভারতীয় চোরাই কয়লা মিশিয়ে রাজস্ব বিহীন ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে। আর এ কারনে স্থানীয় সংঘবদ্ধ চোরাচালানী সিন্ডিকেট এই বাংলা কয়লাকে হাতিয়ার করে কর্মহীন শ্রমিকদের ব্যবহার করে তাদের ব্যবসা চালিয়ে নিতে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে। যেন কারো দায় নেই।
জানাযায়, বর্তমানে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের যাদুকাটা নদীতে বালু পাথর উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ। গত মার্চ মাসে করোনার প্রভাবে বন্ধ হয়ে পরে ৩টি শুল্ক স্টেশন। কর্মহীন হয়ে পরে অনেক শ্রমিক। সেই সাথে চলতি অর্থ বছরে যাদুকাটা নদীর বালু পাথর মহালটি সরকারীভবে ইজারা না দেয়ায় সেটিও বন্ধ আছে। ফলে সব মিলিয়ে লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মহীন। বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে পাহাড়ী নদী যাদুকাটা নদীর তলদেশের বালু সরিয়ে হাজার হাজার শ্রমিক বাংলা কয়লা উত্তোলন করে প্রতি বস্তা বাংলা কয়লা ৩’শ ৫০ থেকে ৫’শ টাকা বিক্রি করছে। এছাড়াও যাদুকাটা নদী ও বারেকটিলা,লাউড়েরগর সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন চোরাই পয়েন্ট দিয়ে স্থানীয় শক্তিশালী চোরাচালানী সিন্ডিকেট দীর্ঘ দিন ধরে রাজস্ব ফাকিঁ দিয়ে চুরাই কয়লা এনে বাংলা কয়লার সাথে মিশিয়ে বিক্রি করছে। আর বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের ব্যবসা করছে একটি সিন্ডিকেট । বিজিবি বিভিন্ন সময় কয়লা ও মাদকদ্রব্য আটক করলেও এর সাথে জরিত মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক মামলার আসামীদের আটক করছে না। কিন্তু পুলিশ,র্যাব ও ডিবি পুলিশ মাদকসহ ব্যবসায়ীদের আটক করছে।
আরও জানাযায়,সম্প্রতি যাদুকাটা নদীর তীর কেটে বালু বিক্রি বন্ধে জেলা প্রশাসন সুনামগঞ্জ গত ১৩ অক্টোবর থেকে যাদুকাটা নদীতে নৌ পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারী করে। যাদুকাটা নদীতে নৌ পরিবহন বন্ধ,পরিবহন সুবিধা না থাকায় বাংলা কয়লা ও চোরাই ভাবে আনা ভারতীয় মিশ্রিত কয়লা
সরকারের রাজস্ব বঞ্চিত করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে নৌযান দিয়ে পাঠিয়ে বিক্রি করতে
পারছে না । ফলে ঐসব ব্যবসায়ী ও চোরাচালানী সিন্ডিকেটের জমানো কয়লা বিক্রি করতে না পেরে বিপাকে পড়েছে এখন। আর যারা শুধু শ্রমিকদের কাছ থেকে কয়লা কিনেছে তারাও এখন বিপদে পড়েছে।
এদিকে সরজমিন যাদুকাটা নদীর তীর এলাকা ঘুরে দেখা যায়,উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মানিগাঁও,বড়গুফ টিলা,আনন্দ গ্রাম,বাদাঘাট ইউনিয়ের লাউড়ের গড় এলাকায় কয়েক হাজার মেট্রিক টন রাজস্ব বিহীন বাংলা কয়লা ও ভারতীয় মিশ্রিত কয়লা জমা আছে।
উপজেলার সচেতন মহল জানান,নদীতে পরিবহন নিষেধাজ্ঞা থাকায় শ্রমিকরা কয়লা উত্তোলন করে জমাকৃত করলেও ব্যবসায়ীরা কয়লা না কেনায় শ্রমিকরা কয়লা বিক্রি করতে পারছেন না এটা তাদের একটি কৌশল। আর সরকারের রাজস্ব বঞ্চিত করে চোরাই ভাবে আসা কয়লা আর বাংলা কয়লা পরিবহন বন্ধ থাকলেও সরকারে রাজস্ব বঞ্চিত করে এই কয়লার ব্যবসা এখন বেশ জমজমাট। নামে বাংলা কয়লা হলেও অর্ধেকেই চোরাই কয়লা। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের এ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd