সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:০০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৫, ২০২০
নিজস্ব প্রতিনিধি :: জৈন্তাপুর সীমান্তে চেরাকারবারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। রাতের আধারে ও দিনের আলোতে অবাধে পাচার হচ্ছে চোরাই পণ্য ও গবাদি পশু। সীমান্তের রাস্তা ধ্বংস হয়ে এখন ক্ষেতের জমিতে পরিনত হয়েছে। কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না করিমদের চেরাচালান। চোরাইকারবারীদের বাধা কে দেবে? সাবাই অবৈধ টাকার কাছে হেরে গেছে। চেরাকারবারীদের নিকট থেকে বিজিবির নামে টাকা আদায় করছে আলোচিত বেন্ডিস করিম। থানা পুলিশেরও লাইনম্যান ছিলো করিম-রুবেল। একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় তারা দুই জনই বিতর্কিত হয়ে যান। পরে থাান পুলিশ এই দুই লাইনম্যানের টাকা তোলা বন্ধ করে দেন। অথচ বিজিবি করিমকে কিছুতেই লাইন আউট করছে না। বিনিময়ে তাকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। ফলে ধ্বংস হচ্ছে উপজেলার সীমান্তিক রাস্তা-ঘাট।
অবাঁধে চোরাচালানের পণ্য পরিবহনের কারণে এবার পর্যটন কেন্দ্রের রাস্তার বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। জৈন্তাপুর উপজেলার অন্যতম পর্যটন স্থান হল ডিবির হাওর ও লাল শাপলার বিল। সিলেট তামাবিল মহাসড়কের কদমখাল হতে ডিবির হাওর বিজিবি ক্যাম্প পর্যন্ত বিলে যাথায়াতের একমাত্র রাস্তাটি কাচা হলেও চলাচল উপযোগী ছিল। চোরাকারবারী চক্রের সদস্যরা প্রত্যহ রাতভর ডিআই ট্রাকযোগে ভারতে মটরশুটি পাচার করতে গিয়ে পর্যটক চলাচলের একমাত্র রাস্তায় হাটু পরিমান কাঁদার সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ঘিলাতৈল, কদম খালপানি, রাংপানি, ৪ নং বাংলাবাজার, আদর্শগ্রাম, শ্রীপুর, মোকামপুঞ্জি ও আলুবাগান এলাকায় চোরাকারবারীদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলনের দায়িত্বে রয়েছেন করিমের লোকজন।এর আগে এই লাইনে থানা পুলিশের টাকা আদায় করতেন বেন্ডিস করিম ও রুবেল। কিন্তু এখন আর তারা পুলিশের লাইনে নেই। থানা পুলিশের লোকজন তাদের গুল ঘরে বসেই বুঙ্গাড়ীদের সাথে কাজ সেরে খেলেন। পুলিশের অপর এক বাহিনীর লাইনের টাকা আদায় করছেন সামছু মিয়া। সম্প্রতি বিজিবির উপর হামলার মামলায় তিনি আসামি হয়ে ছিলেন। উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে তিনি আবার লাইনম্যানের কাজ শুরু করেছেন।
স্থানীয়রা আরও জানান, সন্ধ্যার পর হতে চোরাকারবারি সিন্ডিকেটর সদস্যরা স্থানীয় ৪৮বিজিবির অধিনস্থ ডিবির হাওর বিশেষ ক্যাম্পের কিছু সংখ্যাক বিজিবি সদস্য ও থানা পুলিশের এক কর্তার সহযোগিতায় শারদীয় দূর্গা পুজার সুযোগে রাতভর ডিবির হাওর এলাকার রাজার মন্দির ও বড় ভাঙ্গা দিয়ে অন্তত হাজারো ডিআই ট্রাক যোগে বিপুল পরিমান মটরশুটি ভারতের পাচার করে। বিনিময়ে ভারতীয় অফিসার চয়েস মদ, বিআর, বিভিন্ন ব্যান্ডের মদ, ইয়াবা, কসমেট্রিক্স, হরলিক্স, শেখ নাছির উদ্দিন বিড়ি, ভারতীয় বিভিন্ন ব্যান্ডের মোবাইল হ্যান্ডসেট, গরু মহিষ নিয়ে আসে। এসব পণ্য পাচারের কারনে উপজেলা একমাত্র আর্কষনীয় পর্যটন কেন্দ্র লাল শাপলা বিলে যাতায়াতের রাস্তাটিতে হাটুসমান কাঁদার সৃষ্টি করে পর্যটক চলাচলের অনুপযোগী করে তোলে সিন্ডিকেট দলের সদস্যরা।
অপরদিকে মটর শুটির বস্তা প্রতি বিজিবি নামে ৮০টাকা ও পুলিশের নামে ৫০টাকা, মাদক সহ অন্যান্য ভারতীয় সামগ্রীর কিট প্রতি বিজিবি ৫শত টাকা পুলিশ ৩শত টাকা করে বেন্ডিস করিমের নেতৃত্বে সোর্সরা আদায় করে বলে জানান স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দারা।
এছাড়াও সীমান্ত এলাকা দিয়ে বিভিন্ন ধরণের আরো অবৈধ পণ্য দেশে প্রবেশ করানো হচ্ছে। পণ্যগুলো হচ্ছে, বিভিন্ন ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র, মাদক, শাড়ি, গরু, মহিষ, কিটের কার্টুন, ওষুধ-ইন্ঞ্জেকশন, সেনিটাইজার, মোবাইল ফোন, খেলার জুতা, সাপের বিষ, মোটরসাইকেল-টায়ার, কসমেটিকস ও স্বর্ণের বার।
চোরাচালানী চক্র দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা উপর মহলে চাপে পড়ে মামলা দিতে বেন্ডিস করিমের সাথে সিষ্টেম ও বুঙ্গাড়ীদের চুক্তি মাধ্যমে কিছু সংখ্যাক গরু-মহিষ এবং হাতে গুনা কয়েক বস্তা মটরশুটি আটক করে জনসাধারনের আইওয়াশ করে । তাও নাম মাত্র এক দুটি চালান আটক করে। কিন্তু স্থায়ী ভাবে বন্ধ ও বড় ধরণের কোন অভিযান দিতে দেখা যায়নি।
ডিবির হাওর লাল শাপলার বিলের পানির বাঁধটি মেরামত করার পর রস্তাটি পুরোপুরে চলাচলের উপযোগি ছিল। রাস্তার কোন অংশে কাঁদা ছিল না। এমন ছবি দেখে অনেকে বিশ্বাস করতে পারছেন না যে মাত্র এক রাতেই কি করে এমন হল।
ডিবির হাওর বিশেষ ক্যাম্পের সদস্যদের জিজ্ঞাসা করা হলে স্থানীয় গ্রামে একটি বিয়ে ছিল। বিয়ের গাড়ী আসা এবং বৃষ্টির পানির জন্য কারনে রাস্তার এমন অবস্থা হয়েছে। বড় ব্রীজ হতে নতুন ব্রীজ পর্যন্ত কোন বিয়ে ছিল না কিংবা বিয়ের গাড়ী আসার কথা নয় তাহলে রাস্তার এই অংশের এমন পরিস্থিতি কি করে হল জানতে চাইলে বিজিবি’র সদস্যরা বলেন গাড়ী ঘুরাতে এসেছে। রাস্তা জুড়ে মটরশুটি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার কারন জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।
জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মহসিন আলী কাছে জানতে চাইলে চোরাচালানের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, রাস্তা সকলের, রাস্তা বন্দ করা যাবে না
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd