সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:১৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৭, ২০২০
হাওরাঞ্চল প্রতিনিধি,সুনামগঞ্জ:: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্ত দিয়ে পাচাঁরের সময় পৃথক অভিযান চালিয়ে চোরাই কয়লা ও বরশির ছিপসহ নৌকা আটক করেছে বিজিবি। কিন্তু সোর্স পরিচয়ধারী চিহ্নিত চোরাচালানী ও চাঁদাবাজদেরকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তারা দৌড়ে পালিয়ে গেছে বলে জানাগেছে।
এব্যাপারে এলাকাবাসী জানায়- জেলার তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাট সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিদিনের মতো আজ ২৭.১০.২০ইং মঙ্গলবার দুপুর ২টায় ভারত থেকে কয়লা পাচাঁর করে বড়ছড়া শুল্কষ্টেশনের ভিতরে নিয়ে যাওয়ার পর অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ মেঃ টন চোরাই কয়লা আটক করেছে বিজিবি। অন্যদিকে মাদক ও কয়লা চোরাচালানের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত চাঁরাগাঁও সীমান্তের লালঘাট এলাকা দিয়ে আজ ভোর ৫টায় বিজিবি সোর্স পরিচয়ধারী ইয়াবা ও কয়লা পাচাঁর মামলার আসামীর কালাম মিয়া ও জানু মিয়া নেতৃত্বে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে বিপুল পরিমান কয়লা ও বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য পাচাঁর করে বাড়িঘরের ভিতর ও হাওরের পানিতে লুকিয়ে রাখে চোরাচালানীরা।
কাঠ ও বরশির ছিপ পাচাঁর করে সোর্স কালাম মিয়ার বাড়ির সামনে অবস্থিত হাওরে নৌকা বোঝাই করার সময় বিজিবি অভিযান চালিয়ে বরশির ছিপসহ ১টি নৌকা আটক করে। কিন্তু চোরাই কয়লা ও মাদকসহ সোর্স কালাম মিয়া ও জানু মিয়াকে আটক করতে পারেনি। এঘটনার আগে রাত সাড়ে ১২টায় একই সীমান্তের বাঁশতলা ও ১১৯৬পিলার সংলগ্ন এলাকা দিয়ে বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী রমজান মিয়া,বাবুল মিয়া,শহিদুল্লাহ ও খোকন মিয়ার নেতৃত্বে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ২৫ মেঃ টন কয়লা পাচাঁর করে বাঁশতলা ও লালঘাট গ্রামের বিভিন্ন বাড়িঘরের ভিতরে ও হাওরের পানিতে লুকিয়ে রাখে চোরাচালানীরা।
এসময় চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার শাহালম চোরাচালানী জানু মিয়া ও খোকন মিয়ার বাড়ির পিছনে গিয়ে তাদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে চোরাচালানী শহিদুল্লার বাড়ি থেকে ১ মেঃ টন চোরাই কয়লা আটক করেন। কিন্তু সোর্স পরিচয়ধারী চিহ্নিত চোরাচালানীদেরকে গ্রেফতার করাসহ বাকি অবৈধ কয়লা উদ্ধারের জন্য কোন পদক্ষেপ না নিয়ে ক্যাম্পে ফিরে যান বলে জানাগেছে।
সোর্স পরিচয়ধারী কালাম মিয়া ও রমজান মিয়া পাচাঁরকৃত ১বস্তা কয়লা থেকে ৬০টাকা, ১কার্টন মদ থেকে ৫শ টাকা, ১টি কাঠ (ফালি) থেকে ২শ টাকা, ১০মোটা লাকড়ি থেকে ২শ টাকা, ২শ বরশির ছিপ থেকে ২ হাজার টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই উপরের চাপ সামলানোর জন্য মাঝে মধ্যে আংশিক মালামাল আটক করে বিজিবি।
৬মাস যাবত নাটকীয় ভাবে তাহিরপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাচালান হচ্ছে বলে ৩ শুল্ক স্টেশনের বৈধ কয়লা ব্যবসায়ীরা জানান।
এব্যাপারে চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার শাহালম বলেন- সাংবাদিকদের সাথে সীমান্ত চোরাচালানের বিষয় নিয়ে কথা বলতে সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়কের (সি ও) নিষেধ আছে,আপনি সিও স্যারের সাথে কথা বলুন। তবে এসব বিষয় নিয়ে সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক (সিও) মাকসুদুল আলম মুখ খুলতে নারাজ। তার সরকারী মোবাইল (০১৭৬৯-৬০৩১৩০) নাম্বারে বারবার কল করার পর শুধু ব্যস্ত পাওয়া যায়। রহস্যজনক কারণে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই সীমান্ত চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বন্ধ করে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি করতে বর্তমানে বিজিবি অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা মাকসুদুল আলমকে অন্যত্র বদলি করে আরো দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তাহিরপুর উপজেলার কয়লা ব্যবসায়ীরাসহ সর্বস্থরের জনসাধারণ।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd