সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:৪৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১, ২০২০
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের চারাগাঁও সীমান্তেকে অবৈধ কয়লা ও মাদক পাচাঁরের নিরাপদ রুঢ হিসেবে ব্যবহার করছে চোরাচালানীরা। তারা সরকারের লক্ষলক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে গত ৪ দিনে প্রায় ২শত মে.টন কয়লার সাথে বিপুল পরিমান ইয়াবা, মদ, গাঁজা, অস্ত্র ও গরুসহ বরশির ছিপ, লাকড়ি, ফালি পাচাঁর করেছে। তার মধ্যে ৩৫ বোতল মদ ও ২ মে.টন কয়লা জব্দ করেছে বিজিবি। কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করেনি। কারণ বেশির ভাগ চোরাচালানীরা বিজিবি সোর্স পরিচয়ধারী এবং সবাই একত্রিত হয়ে সীমান্ত এলাকায় তৈরি করেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেড। তবে বেশিভাগ সোর্স পরিচয়ধারীদের বিরুদ্ধে থানায় রয়েছে মাদক, কয়লা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজির মামলা। তারপরও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোরালো কোন পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে দিনদিন বেড়েই চলেছে সীমান্ত চোরাচালান। এব্যাপারে বড়ছড়া ও চারাগাঁও শুল্কস্টেশনের ব্যবসায়ীরা জানান-জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নে অবস্থিত চারাগাঁও শুল্কস্টেশন সংলগ্ন বাঁশতলা তেতুল গাছ, ১১৯৬ পিলার ও লালঘাট গ্রামের বড়ঘাট,মাঝেরঘাট,দৌড়েরঘাট ও লাকমা চাকমা হাটিসহ জংগলবাড়ি ও লামাকাটা নামক চোরাইপথ।
প্রতিদিন এসব চোরাইপথ দিয়ে ভারত থেকে শতশত মে.টন কয়লা পাচাঁর করছে বিজিবি অধিনায়কের সোর্স পরিচয়ধারী মাদক ব্যবসায়ী রমজান মিয়া,শফিকুল ইসলাম ভৈরব,লেংড়া জামাল ও ইয়াবা কালাম মিয়া। তারা চোরাই কয়লার সর্দার জসিম মিয়া,হারুন মিয়া ও জানু মিয়ার মাধ্যমে শতাধিক লোক দিয়ে ভারত থেকে কয়লা ও মাদক পাচাঁর করে। পরে তাদের সিন্ডিকেডের সদস্য চোরাই কয়লা ব্যবসায়ী শহিদুল্লা,খোকন মিয়া ও বাবুল মিয়া পাচাঁরকৃত কয়লা ও মাদক ক্রয় করে নৌকা যোগে নদীপথে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা উপজেলার মনতলা ব্রিজের কাছে নিয়ে বিক্রি করে। চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের হাবিলদার শাহালাম ও এফএস জিকরুলের সহযোগীতায় সোর্সদেরকে নিয়ে নিয়ে গত ২৮ অক্টোবর বুধবার রাত ৩টায় চোরাচালানী খোকন মিয়া ১২মে.টন ও বাবুল মিয়া ১৫মে.টন কয়লা পাচাঁর করে।
পরেরদিন ২৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় চোরাচালানী শহিদুল্লা ২০মে.টন ও বাবুল মিয়া ১৮মে.টন কয়লা পাচাঁর করে। তার পরেরদিন ৩০.১০.২০ইং শুক্রবার রাত ৮টায় চোরাচালানী খোকন মিয়া ও শহিদুল্লা দুজন মিলে ৩৫মে.টন আর বাবুল মিয়া ২৭মে.টন কয়লা পাচাঁর করে। আর গতকাল ৩১.১০.২০ইং শনিবার রাত ১১টায় শহিদুল্লা ও খোকন মিয়া মিলে ৪০মে.টন ও বাবুল মিয়া ২৫মে.টন চেরাই কয়লা পাচাঁর করে। পাচাঁরকৃত কয়লার মধ্যে ২মে.টন কয়লা আলোচনা সাপেক্ষে জব্দ করেছে বিজিবি। এসব নাটক করার জন্য প্রতিটন অবৈধ কয়লা থেকে সুনামগঞ্জ বিজিবি অধিনায়কের নামে ১হাজার,চারাগাঁও ক্যাম্প কমান্ডার শাহালামের নামে ৫শ টাকা, এফএস জিকরুলের নামে ৫শ টাকা ও বিজিবি সদস্যদেরকে দেওয়ার জন্য ১হাজার টাকা ও থানার নামে ৫শত টাকাসহ সর্বমোট ৫হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছে সোর্স রমজান মিয়া,শফিকুল ইসলাম ভৈরব,লেংড়া জামাল ও ইয়াবা কালাম মিয়া। আর ১শত পিচ ইয়াবা থেকে ২হাজার টাকা, ১শত পিছ বরশির ছিপ থেকে ১হাজার টাকা,প্রতিকেজি গাঁজা থেকে ১৮শত টাকা, ১কার্টন মদ থেকে ৭শত টাকা,১পিছ ফালি থেকে ১২০টাকা,১ আটা লাকড়ি থেকে ৪০টাকা ও ১টি গরু থেকে ৫হাজার টাকা চাঁদা উত্তোলন করা হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানায়। এব্যাপারে চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার শাহালম বলেন- আমি যা করছি বিজিবি অধিনায়কের (সি ও) নির্দেশেই করছি,আপনি সিও স্যারের সাথে কথা বলুন।
চোরাচালানের বিষয়ে জানতে সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক (সিও) মাকসুদুল আলমের সরকারী মোবাইল (০১৭৬৯-৬০৩১৩০) নাম্বারে বারবার কল করার পর শুধু ব্যস্ত পাওয়া যায়। তাই বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে বিজিবি অধিনায়কের সাথে সোর্স পরিচয়ধারীরা মোবাইলে যোগাযোগ করাসহ বাসায় মাছ নিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই বিজিবি অধিনায়ক মাকসুদুল আলমকে শীগ্রই অন্যত্র বদলি করে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন সীমান্তের ৩ শুল্কস্টেশনের বৈধ কয়লা ব্যবসায়ীরাসহ সর্বস্থরের জনসাধারণ।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd