সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:৫৩ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ৪, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেটের মুরারীচাঁদ (এমসি) কলেজের ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় অভিযোগপত্র প্রদান করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) আদালতে জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে ৮ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করা হলেও তাদের প্রশ্রয় ও মদদদাতাদের ব্যাপারে কিছু উল্লেখ করা হয়নি অভিযোগপত্রে।
ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্তরা কাদের সহযোগিতায় ছাত্রাবাস থেকে পালিয়েছিলেন, পলাতক অবস্থায় তারা কাদের আশ্রয়ে ছিলেন এবং করোনার কারণে বন্ধ থাকা ছাত্রাবাস তারা কাদের সহযোগিতায় দখল করে রেখেছিলেন এসব প্রশ্নের উত্তর নেই পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে।
এমসি কলেজের অবস্থান সিলেটের টিলাগড় এলাকায়। আর কলেজ ছাত্রাবাস বালুচর এলাকায়। এই ধর্ষণকান্ডের আগেও টিলাগড় ও বালুচর এলাকায় নানা অপকর্ম চলে আসছিলো। এরমধ্যে এমসি কলেজ ছাত্রবাসে অগ্নিসংযোগ এবং ক্যাম্পাসের ভেতরে খাদিজা আক্তার নামে এক ছাত্রীকে কোপানোর ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনা সমালোচনার জন্ম। এছাড়া এই এলাকায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে মারামারি খুনোখুনি প্রায়ই লেগে থাকে। স্থানীয় দুই আওয়ামী লীগ নেতা ছাত্রলীগের এসব অপকর্মে মদদ দিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে ধর্ষণের ঘটনার পর অভিযুক্তদের মদদাতা ও তাদের প্রশ্রয়দাতাদের খোঁজে বের করার দাবি ওঠে।
তবে তদন্তে এরকম কাউকে খোঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। ধর্ষণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টচার্য বলেন, আমরা ধর্ষণের ঘটনার তদন্ত করেছি। এর সাথে যারা জড়িত তাদের খোঁজে বের করেছি। এতে অন্য কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
অভিযোগপত্রের ব্যাপারে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদউল্লাহ শহিদুল ইমলাম শাহিন বলেন, আমরা প্রথম থেকেই এই ঘটনায় অভিযুক্তদের প্রশ্রয়দাতা কারা তাদের খোঁজে বের করার কথা বলে আসছি। এই গডফাদারদের চিহ্নিত করতে না পারলে টিলাগড় এলাকার অপকর্ম বন্ধ হবে না।
তিনি বলেন, অভিযোগপত্র দেওয়ার পরও পুলিশ ইচ্ছে করলে তদন্ত করে তাদের খোঁজে বের করতে পারবে। পরবর্তীতে তা সম্পূরক হিসেবে চার্জশিটের সাথে আদালতে প্রদান করা হবে।
এদিকে অভিযোগপত্রে গডফাদারদের ব্যাপারে কিছু উল্লেখ না থাকায় এ,সি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণকান্ডের পর গড়ে ওঠা নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ‘দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’র পক্ষ থেকেও ক্ষোভ জানানো হয়েছে। পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রকে ‘ডিএনএ রিপোর্ট সর্বস্ব’ বলেও মন্তব্য করেছেন এই প্ল্যাটফর্মের সংগঠকরা।
ছাত্রাবাসে ধর্ষণের ঘটনায় বৃহস্পতিবার আদালতে দেওয়া অভিযোগপত্রে ৮জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তরা সকলেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে ৬ জন ধর্ষণে সরাসরি অংশ নেন এবং তাদের সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছে পুলিশ।
অভিযোগপত্রে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম রাজন মিয়াকে সরাসরি ধর্ষণে সম্পৃক্ত এবং রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুমকে ধর্ষণের সহযোগি হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এই আটজনই বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন।
টিলাগড় এলাকা কেন্দ্রিক ছাত্রলীগের অপকর্ম চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। একের পর এক বিতর্কিত ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে ‘টিলাগড় ছাত্রলীগ’। ধারাবাহিক খুনোখুনি, এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে অগ্নিসংযোগ এবং সর্বশেষ ছাত্রাবাসের ভেতরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে এই এলাকায়। আর সবটিতেই অভিযোগ ওঠেছে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি। এসব কর্মকান্ডের কারণে টিলাগড় হয়ে ওঠেছে নগরবাসীর আতঙ্ক জাগানিয়া এক নাম।
সর্বশেষ গত ২৫ সেপ্টেম্বর গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ (২১)। ছাত্রাবাসের আঙ্গিনায় স্বামীকে আটকে রেখে প্রাইভেট কারের ভেতর ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ
এদিকে, এমসি কলেজে ছাত্রবাসের ধর্ষণের পর এই এলাকার ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের প্রশওয়দাতাদের খোঁজে বের করার দাবি ওঠে। প্রশ্রয়দাতাদের আইনের আওতায় না হলে এই এলাকার অপরাধ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ হবে না বলেও সে সময় মন্তব্য করেন সিলেটের নাগরিক সমাজের ব্যক্তিবর্গরা।
এমসি কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে কলেজসহ আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছে। কলেজের বেড়াতে আসা নারীদের হয়রানি, শিক্ষার্থীদের অপদস্ত, চাঁদাবাজি, জায়গা দখলসহ বিভিন্ন অপরাধ করে আসছে তারা। সরকার দলীয় নেতাদের প্রশ্রয় থাকায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায়নি। এবং কলেজ প্রশাসনও চলতো তাদের কথায়।
অভিযোগ রয়েছে টিলাগড় এলাকার দুই আওয়ামী লীগ নেতার প্রশ্রয়েই বেরোরোয়া এখানকার ছাত্রলীগ। সিলেট নগরের টিলাগড় ও বালুচর এলাকায় এমসি কলেজ,সিলেট সরকারী কলেজ, সিলেট কৃষি বিশ^বিদ্যালয়, সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসহ আরও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়া কিছু গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় রয়েছে এই এলাকায়। এসব প্রতিষ্ঠানে আধিপত্য বিস্তার, দরপত্র কার্যক্রমসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে তৎপর স্থনীয় ছাত্রলীগ নেতারা।
ধর্ষণকান্ডের আগে ২০১২ সালে ফের দেশজুড়ে আলোচনায় আসে এমসি কলেজ ছাত্রাবাস। ২০১২ সালের ৮ জুলাই ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষের জেরে সোয়াশ’ বছরের প্রাচীন এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে ছাত্রাবাসের ৪২টি কক্ষ ভস্মীভূত হয়। সেই অগ্নিসংযোগের দায়ে যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয় তাদের প্রায় সকলেই সরকারদলীয় রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। তবে দেশ-বেদিশে আলোড়ন তোলা এই ঘটনার বিচার কাজ আজ পর্যন্ত শেষ হয়নি।
এছাড়া মারামারি-খুনোখুনি এই এলাকার প্রতিদিনকার ঘটনা। ২০১০ সালের ১২ জুলাই অভ্যন্তরীণ বিরোধের জের ধরে টিলাগড়ে খুন হন এমসি কলেজের গণিত বিভাগের ছাত্র উদয়েন্দু সিংহ পলাশ। ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারি টিলাগড় পয়েন্টে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের ছুরিকাঘাতে খুন হন সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা তানিম আহমদ খান আর ২০১৮ সালের ১৬ অক্টোবর টিলাগড়ে ছাত্রলীগ কর্মী ওমর আহমদ মিয়াদ (২২) কে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর আগে ২০১৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর টিলাগড়ের পাশের শিবগঞ্জে খুন হন ছাত্রলীগ কর্মী জাকারিয়া মোহাম্মদ মাসুম। আর ২০২০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি পূজার টাকার ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়ে খুন হন ছাত্রলীগ কর্মী অভিষেক দে দ্বীপ।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের বালুচর এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ওই তরুণী (২৫)। করোনার কারণে বন্ধ থাকা ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়। এরপর তাদের মারধর করে টাকাপয়সাও ছিনিয়ে নেয় ধর্ষকরা। ওই রাতেই নির্যাতিতার স্বামী বাদী হয়ে নগরীর শাহপরান থানায় মামলা করেন। এ ঘটনার পর দেশজুড়ে ধর্ষণবিরোধী তীব্র আন্দোলন শুরু হয়। জনমতের চাপ মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে ধর্ষণবিরোধী আইনও সংশোধন করে সরকার।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে নববিবাহিত স্ত্রীকে প্রাইভেটকারে করে শাহপরান মাজারে বেড়াতে গিয়েছিলেন নগরের দক্ষিণ সুরমার জৈনপুর এলাকার এক যুবক। ফেরার পথে সন্ধ্যার দিকে টিলাগড়ে এমসি কলেজের মূল ফটকের সামনে থামেন তারা। এসময় কয়েকজন তরুণ এসে ওই যুবকের স্ত্রীকে ঘিরে ধরেন। একপর্যায়ে প্রাইভেটকারসহ ওই যুবককে সস্ত্রীক বালুচরে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যান তরুণরা। এরপর যুবককে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে প্রাইভেটকারের মধ্যেই ধর্ষণ করেন ৫/৬ জন। পরে এই দম্পতিকে মারধর করে তাদের কাছে থাকা টাকাপয়সা, স্বর্ণালাকার ছিনিয়ে নেন ধর্ষকরা। আটকে রাখেন প্রাইভেটকারও। ছাত্রাবাস থেকে ছাড়া পেয়ে টিলাগড় পয়েন্টে এসে পুলিশকে ফোন করেন নির্যাতিতার স্বামী। পরে পুলিশ গিয়ে ছাত্রাবাস থেকে ওই দম্পতির প্রাইভেটকার উদ্ধার করে এবং নির্যাতিতা তরুণীকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যান অভিযুক্তরা।
ওই রাতেই ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামি করে শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করেন নির্যাতিতার স্বামী।
ধর্ষকদের গডফাদারদের চিহ্নিত করার দাবি : মুরারীচাঁদ (এমসি) কলেজের ছাত্রাবাসের ধর্ষকদের সহযোগি ও তাদের প্রশ্রয়দাতাদের খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছে সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার নাগরিকদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা প্ল্যাটফর্ম ‘দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতি এই দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে ‘দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’র পক্ষ থেকে বলা হয়, এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে যারা এমন বর্বরোচিত ঘটনা ঘটিয়েছে তারা একদিনে এরকম বেপোরোয়া হয়ে ওঠেনি। দীর্ঘদিন ধরেই তারা এরকম অপকর্ম ঘটিয়ে আসছে। এই একই গোষ্টি এমসি কলেজের ছাত্রাবাসেও অগ্নিসংযোগ করে। মারামারি ও খুনোখুনি তাদের নিত্তনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে ওঠে টিলাগড়-বালুচর এলাকা হয়ে ওঠেছে নগরবাসীর আতঙ্কের নাম। রাজনৈতিক নেতাদের প্রশ্রয় আর আশাকারা পেয়েই ছাত্রলীগ নামধারী দুর্বৃত্তরা একের পর এক অপকর্ম ঘটিয়ে চলছে। যা ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজসহ পুরো সিলেটকেই কলঙ্কিত করছে।
আমরা মনে করি, কেবলমাত্র ধর্ষণে সরাসরি সম্পৃক্তদের বিচারের আওতায় আনলেই এই এলাকার অপরাধ ও অপকর্ম বন্ধ করা যাবে না। বরং গডফাদারদের ছত্রছায়ায় নতুন নতুন অপরাধী তৈরি হবে। এজন্য আমরা প্রথম থেকেই টিলাগড় এলাকার গডফাদারদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে আসছি।
বিবৃতিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ছাত্রাবাসে ধর্ষণের মামলায় অভিযোগপত্র প্রদান করেছে পুলিশ। কিন্তু এই অভিযোগপত্র আমাদের পুরোপুরি সন্তুষ্ট করতে পারেনি। ডিএনএ রিপোর্ট নির্ভর একটি প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। এতে পুলিশের নিজস্ব তদন্তের কোনো ছাপ নেই। আসামিরা কাদের সহযোগিতায় পালালো, কারা তাদের আত্মগোপনে সহায়তা করেছে, কাদের সহযোগিতায় বন্ধ ছাত্রাবাসে তারা আস্তানা গড়ে তুললো- এসব ব্যাপারে অভিযোগপত্রে কিছু উল্লেখ নেই।
‘দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’ সংগঠকরা বলেন, আমরা মনে করি এটি একটি অসম্পূর্ণ অভিযোগপত্র। পুলিশ ধর্ষকদের নেপথ্যে থাকা গডফাদারদের আড়াল করার চেষ্টা করেছে। চাঞ্চল্যকর এই মামলার সর্ম্পরক চার্জশিট প্রদান করে গডফাদারদের চিহ্নিত করার দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে। সূত্র-সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd