সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:০১ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৬, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। সেই সাথে আজ পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্তি এবং বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় দিন। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিনও আজ। জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের এই দিনে বিকেলে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে) হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের।
তবে এক দিনেই আমরা বিজয় অর্জন করিনি। এর পেছনে রয়েছে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী লড়াই। যে লড়াইয়ে লাখো প্রাণের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের আজকের দিনে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার সঙ্গে স্মরণ করবে সেইসব শহীদদের যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা।
স্মরণ করবে সেইসব বীর সেনানীদের যারা শোষণ বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে অনাগত ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি দেশ উপহার দিয়েছেন। যেসব নর-নারীর সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ স্বাধীন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সম্মান জানানো হবে। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি উদযাপনের সর্বাত্মক প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে।
১৯৭০ সালের নির্বাচনের জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা না দেখিয়ে পাকিস্তানিরা ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভকারী আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে টালবাহানা শুরু করে শাসকগোষ্ঠী। ফলে ক্ষোভে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান। একাত্তরের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ ‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’ জনগণের স্বাধীনতার স্পৃহাকে প্রবল করে তোলে।
ঢাকা যখন অগ্নিগর্ভ, তখন পাকিস্তানি শাসকচক্র আমাদের মুক্তির স্পৃহাকে দমনের পথ বেছে নেয়। রাতের অন্ধকারে নির্বিচারে নিরস্ত্র মানুষ হত্যার মাধ্যমে জন্ম দিল ২৫ মার্চের কালরাত্রি। এরপরই চূড়ান্ত হয়ে যায় আমাদের পৃথক পথচলার যাত্রা। ওদের সঙ্গে আর নয়। ২৬ মার্চ থেকে শুরু হলো চূড়ান্ত লড়াই। দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তি সংগ্রামের পর পরাজয় মেনে নেয় পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
এদিকে ১৫ ডিসেম্বরের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে ১৬ ডিসেম্বর সূর্যোদয় থেকে ফের নতুন আয়োজনে মেতে ওঠতো সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনার প্রাঙ্গণ। দেশাত্ববোধের চেতনায় থাকতো গান, নৃত্য, নাটকসহ আরও নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন। যেখানে মেলবন্ধন হতো সিলেটের প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার নানা পথ ও মতের মানুষের।
সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনার প্রতিষ্ঠার পর থেকেই যে আয়োজন অনেকটা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল, সেই আয়োজনে এবার বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্বমহামারি প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। যে কারণে সিলেটে এবার হচ্ছে না বিজয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় সিলেটের কেন্দ্রীয় শহিদমিনার প্রাঙ্গণে জাগরণের গান ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করবে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, সিলেট ও সম্মিলিত সাংকৃতিক জোট, সিলেট এর সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
এ বিষয়ে সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমেদ চৌধুরী মিশু বলেন, বিজয় দিবসে প্রতিবার সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, সিলেট ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, সিলেট এর সাংস্কৃতিক কর্মীদের পক্ষ থেকে ১৬ ডিসেম্বর বিকালে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এবার করোনাভাইরাসের কারণে তা হচ্ছে না।
এবার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান না করে বিজয় দিবসে সকাল ১০টায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনার প্রাঙ্গণে জাগরণের গান ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হবে।
তবে বিজয়ের দিনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে প্রতিবারের মতো এবারও শহিদমিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ পর্ব শুরু হবে বলে তিনি জানান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd