সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:৩০ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৯, ২০২১
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক খায়রুল আলম রফিককে নির্যাতনকারী তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি পুলিশের এসআই আক্রাম হোসেনের শাস্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা হয়েছে। আজ শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সন্মিলিত সাংবাদিক সোসাইটি ও বাংলাদেশ অনলাইন সাংবাদিক কল্যাণ ইউনিয়নের উদ্যোগে কয়েকদিন ব্যাপী প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনের প্রাথমিক কর্মসূচী পালন করা হয় । এতে সাংবাদিক ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন ।
প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, বাংলাদেশ সন্মিলিত সাংবাদিক সোসাইটির চেয়ারম্যান এমএ মোমিন আনসারি । বক্তব্য রাখেন, মহাসচিব বিএম আশিক হাসান, ভাইস চেয়ারম্যান মো: আবুল কালাম মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবি আ্যাডভোকেট ওয়াহেদুনবী বিপ্লব, দপ্তর সম্পাদক তারেক সালমান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সম্পাদক হোসনে আরা , নির্বাহী সদস্য শফিকুল ইসলাম চৌধুরি, দৈনিক অন্য দিগন্তের সিনিয়র রিপোর্টার হাবিব মোল্লা, দৈনিক স্বদেশ বিচিত্রার রিপোর্টার আনিসুর রহমান বসকোর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম তপু, বসকোর সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল হাওলাদার, সমাজ সেবক মোহাম্মদ আবদুর রউফ, মোঃ নুরুজ্জামান রনি,বাংলাদেশ মানবতা ফাউন্ডেশনের সদস্য মাহমুদুল হাসান মিশু, মোহাম্মদ সবুর শেখ প্রমুখ ।
নেতৃবৃন্দরা বলেন, সাংবাদিক নির্যাতনকারী এসআই আক্রামকে সংশ্রিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিভাগীয় ব্যবস্থা ও আইনের আওতায় এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে । অন্যথায় কঠিক কর্মসূচি পালন করবে সাংবাদিক সমাজ ।
বাংলাদেশ সন্মিলিত সাংবাদিক সোসাইটির চেয়ারম্যান এমএ মোমিন আনসারি বলেন, এসআই আক্রাম হোসেনের পৃষ্ঠপোষকতা ও সংশ্রিষ্টতায় ময়মনসিংহে ঘটে মাদকের জমজমাট ব্যবসা । তিনি ময়মনসিংহে কমর্রত থাকাকালে যৌনপল্লীতে ঘটে নারী পাচারের ঘটনা । সন্ত্রাস আর অস্ত্রের ঝনঝনানিসহ অপরাধ কার্যক্রম । এই অপরাধ কার্যক্রমের পেছনে ছিল এসআই আক্রাম হোসেন ।
উল্লেখ্য, ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের দিকে ময়মনসিংহে কর্মরত পুলিশের এক উপ পরিদর্শকের (এসআই) পৃষ্ঠপোষকতা ও সংশ্লিষ্টতায় ঘটে মাদকের জমজমাট ব্যবসা । যৌনপল্লীতে নারী পাচারের ঘটনা । সন্ত্রাস আর অস্ত্রের ঝনঝনানিসহ অপরাধ কার্যক্রম। আর অভিযোগের তীর ঐসময়ে কর্মরত এসআই আকরামের বিরুদ্ধে।
এসআই আকরামের এইসব অপরাধের চিত্র পত্রিকায় তুলে ধরেই রোষানলে পরেন দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক, দৈনিক আমাদের কন্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি খায়রুল আলম রফিক । দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিনে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদের ধারাবাহিকতায় শহরের চরপাড়ায় মাদক কারবারিদের সাথে এসআই আকরাম হোসেনের ঘনিষ্টতা বিষয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ হয় । সেসময় এসআই আকরাম হোসেন কর্মরত ছিলেন ৩নং ফাঁড়ি পুলিশে ।
সাংবাদিক রফিকের অভিযোগ, এসআই আকরাম হোসেন তাকে আটক করে হেফাজতে রাখার নামে অকথ্য নির্যাতন চালায় যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। আক্রামের যোগসাজশে ষড়যন্ত্রমূলক ৩টি মামলায় গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ দুই মাস থাকতে হয় ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে । এরআগে তার চোখ বেঁধে অকথ্য নির্যাতন করে এসআই আকরাম হোসেন বলে অভিযোগ করেন তিনি ।
এসআই আকরামের বিরুদ্ধে সাংবাদিক রফিক ইতিমধ্যে পুলিশের ‘আইজিপি’স কমপ্লেইন মনিটরিং’ সেলে একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন। যার অভিযোগ নম্বর SL-17 এবং তারিখ ৫ই জানুয়ারি ২০২১।
অভিযোগ পত্রে তিনি জানান, ২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেইটের বিপরীত দিকে আমি অবস্থান করছিলাম । এসআই আকরামের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশ আমার চোখ বেঁধে একটি কালো গাড়িতে করে আমার পত্রিকার কার্যালয়ে নিয়ে যায় । সেখানে থাকা আমার জমি ক্রয়ের দলিল, ব্যাংকের চেক ও কম্পিউটার জব্দ করে । দলিল ও ব্যাংক চেক প্রতিপক্ষের কাছে তুলে দিয়ে জব্দ দেখানো হয় শুধু কম্পিউটার । সেখান থেকে আমাকে নেয়া হয় ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র পুরাতন গুদারাঘাটস্থ দুর্গম চর এলাকায় । দুচোখ বেঁধে দু হাত পেছনে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয় ।
কিন্তু দুই বছর পরে কেন বিষয়টি সামনে এনেছেন এমন প্রশ্নে সাংবাদিক রফিক বিডি২৪লাইভকে জানান, তিনি ঘটনাটি চক্ষু লজ্জার কারনে সামনে আনতে পারেননি এতদিন। তিনি জানান গত বছরের ডিসেম্বরে ২২ তারিখে অজ্ঞাত কোন এক ব্যাক্তি তার ম্যাসেঞ্জারে চোঁখ বাঁধা ছবি প্রদান করেন। যা দেখে তিনি আতঁকে উঠেন এবং সেই সব নির্যাতনের দৃশ্যগুলো চোখের সামনে ভাসতে শুরু করে। এর পরপরই তার এই ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হতে শুরু করে। একারনেই দুইবছর পর মুখ খুললেন বলে জানান তিনি।
এবিষয় বিডি২৪লাইভের সাথে কথা হয় অভিযুক্ত এসআই আক্রামের সাথে। তিনি বলেন, ওনি (খায়রুল আলম রফিক) আমার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ দিয়েছে তা আমি এখনও দেখি নাই। আপনার কাছ থেকেই শুনলাম। তবে এর আগেও ২০১৮ সালে তিনি (খায়রুল আলম রফিক) আমার নামে একটি অভিযোগ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় দিয়েছিল। সেটা পুলিশ হেডকোয়ার্টাস হয়ে আমাদের ময়মনসিংহে এসেছিল। এখানে আমার সিনিয়র যারা আছেন তারা বিষয়টি তদন্ত করেছে। তৎকালীন সময়ে আমার বিরুদ্ধে করা তার (খায়রুল আলম রফিক) কোন অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তাই আমার বিরুদ্ধে কোন অ্যাকশন নিতে পারেনি আমার সিনিয়ররা। ওনার (খায়রুল আলম রফিক) সাথে আমার কোন শত্রুতা নেই। ওনি কেন এসব করছে জানি না। আর আমি ওনাকে কোন মামলায় আটকও করিনি। আর আমার বিরুদ্ধে যদি মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজস থাকে সেটা প্রমাণিত হলে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে এতে আমার কোন আপত্তি নেই।’
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd