সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:৪৪ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ১০, ২০২১
ইয়াহ্ইয়া মারুফ :: বড় বোনকে সঙ্গে নিয়ে গত বছরের ২২ আগস্ট র্যাব অফিসে ফেসবুকের ফেক আইডি সংক্রান্ত অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীর স্ত্রী। সেখান থেকেই তাদের ফলো করতে শুরু করেন পুলিশের এক নায়েক। ফেরার পথে নিজেকে র্যাব পরিচয়ে সহযোগিতার।
আশ্বাস দিয়ে নাম-ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেন। এর পর থেকে ফোন করে বারবার অনৈতিক প্রস্তাব দেন ওই নায়েক। তার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে ফোন বন্ধ রাখেন ওই গৃহবধূ। মোবাইল বন্ধ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে বন্ধুকে নিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীর বাসায় গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন নায়েক। ছুরি দেখিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে নিজের সঙ্গে অশ্লীল ছবি তোলেন। এসব ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় ওই নারীর স্বামীর কাছে ছবিগুলো পাঠিয়ে দেন। যার ফলে তাদের সংসার জীবনের ইতি ঘটতে যাচ্ছে। তবুও থেমে নেই পুলিশের এ নায়েক। এক সন্তানের জননী ওই নারীকে প্রতিনিয়ত জীবননাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।
সুনামগঞ্জ শহরে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন জেলা প্রশাসকের বাসভবনে গার্ড হিসেবে কর্মরত নায়েক নুর আলম। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য। প্রতিবেদকের হাতে এসেছে নুর আলম কর্তৃক ওই নারীকে হুমকির একাধিক অডিও এবং জোর করে ওই নারীর সঙ্গে নুর আলমের ধারণকৃত একাধিক অশ্লীল ছবি।
এ ছাড়া নুর আলমের বিরুদ্ধে শহরের চিহ্নিত মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়মিত ইয়াবা সেবনের অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ সূত্র জানায়, ধর্মপাশা থানা পুলিশের কাছে ইয়াবাসহ ধরাও পড়েছিলেন নুর আলম। এ বিষয়টি সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান তদন্ত করছেন। সাহেব আলী পাঠান বলেন, বিষয়টি তদন্ত চলছে। আমরা সাক্ষ্য-প্রমাণ নিচ্ছি। তার কাছে ইয়াবা পাওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে ওই নারী বলেন, নুর আলমের ভয়ে আমি দিশাহারা। বিষয়টি এসপিকেও জানিয়েছি। নুর আলম হুমকি দিয়ে বলে : ‘সিলেটের রায়হানকে পুলিশ ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। পুলিশের কী হইছে? বাড়াবাড়ি করলে তুই আর তর ছেলেকেও তুলে নিয়ে হত্যা করব।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশের নায়েক নুর আলম খেপে যান প্রতিবেদকের ওপর। গালাগাল করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন প্রতিবেদককে। ওই নারীর সব অভিযোগ সাজানো দাবি করে বলেন, ‘আমি ওই নারীর কাছে কোনো টাকা চাইনি। ওর সঙ্গে আমার কোনো খারাপ ছবি নেই। থাকার কথাও না। এরা একটা সিন্ডিকেট। আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছে।’ সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘ওই নারী আমার কাছে এসেছিলেন। প্রথমে খালাতো ভাই পরিচয়ে নুর আলমকে বাসায় নিয়েছেন। তখন সে র্যাব পরিচয় দিয়েছে ওনাকে। নুর আলমের যেমন দোষ আছে, তেমনি ওই নারীর দোষও কম নয়। তিনি তাকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। নুর আলমের বিরুদ্ধে ডিপার্টমেন্টাল প্রসিডিং চলছে। আমরা বিভাগীয় প্রক্রিয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। ওই নারী চাইলে নুর আলমের বিরুদ্ধে থানায় বা আদালতে মামলাও করতে পারবেন। সূত্র-যুগান্তর
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd