সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:২৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩০, ২০২১
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেটের জকিগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়েছে দ্বিতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচন। দুই পৌরসভায় নৌকার ভরাডুবি হলেও কোথাও কোনো ধরণের বড় ধরণের বিশৃঙ্খলা বা অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায় নি। দুই পৌরবাসী এর কৃতিত্ব দিচ্ছেন সিলেট জেলা পুলিশকে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সরকারি এমসি একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজ, ফুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘোষগাঁও ইসলামিয়া মাদ্রাসা, হাজী জহির আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দাড়িপাত্তন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঘোগারকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রণিকেলী ২ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোয়ালিটি স্কুল এবং সৈয়দ তানভীর হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গোলাপগঞ্জে শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এ পৌরসভায় ভোট গণনা শেষে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী (বর্তমান মেয়র) আমিনুল ইসলাম রাবেল ৫৮৫১টি ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
অন্যদিকে, জকিগঞ্জ পৌরসভার এক্সিলেন্ট একাডেমি খলাছড়া, ফাজিল সিনিয়র মাদ্রাসা, জকিগঞ্জ কেজি স্কুল, জকিগঞ্জ সরকারি কলেজ, মধুদত্ত সরকারি প্রাথমিবক বিদ্যালয়, আইডিয়াল একাডেমি, আনসার ভিডিপি ড্যাম, পঙ্গকট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাইজকান্দি মাদ্রাসায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জকিগঞ্জে ২১০৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন জকিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক (পদত্যাগী) আব্দুল আহাদ।
এদিকে. শনিবার উৎসব মুখর পরিবেশে সর্বসাধারণের উপস্থিতিতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্টিত হয়। কোথাও কোন সংঘর্ষ বা হতাহতের খবর পাওয়া যায় নি। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি সুন্দর সুষ্টু রাখতে মাঠে ছিল সিলেট জেলা পুলিশ। ভোটকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলতার পাশাপাশি অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আগে থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। গোলাপগঞ্জ ও জকিগঞ্জ দুই পৌর এলাকাতেই ছিলো কড়া নিরাপত্তা। প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে নির্বাচনী এলাকায় বসেছিলো পুলিশের বিশেষ চেকপোস্ট। দুটি পৌরসভার ১৮টি ভোট কেন্দ্রেও বাড়তি নিরাপত্তা ছিলো। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গোলাপগঞ্জ ও জকিগঞ্জে ছিলো তিন স্তরের নিরাপত্তা। শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে যানবাহন চলাচলে নিষধ করা হয়।
প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ১০জন করে পুলিশ সদস্য নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন করেন। সেই সাথে ভোট কেন্দ্র ও নির্বাচনী এলাকায় ছিলেন শতাধিক গোয়েন্দা পুলিশ ও মোবাইল টিম। ভোট কেন্দ্রে পোশাক পরিহিত পুলিশের পাশাপাশি অপরাধ ঠেকাতে সাদা পোশাকের পুলিশও শক্ত অবস্থানে ছিলো। সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিনের নির্দেশে মাঠে সরাসরি কাজ করেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, দুই থানার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) এবং দুই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা।
এছাড়াও, সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন নিজে ভোটকেন্দ্রগুলো পর্যবেক্ষণ করেন।
গোলাপগঞ্জ পৌরসভার বাসিন্দা রোজি বেগম জানান, তিনি লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছেন, কোথাও কোন বিশৃংখলা চোখে পড়েনি। ভোট প্রদান সুন্দর, সুষ্টু রাখতে পুলিশ সর্বাত্মক সহযোগিতা করে গেছে।
ভোট দিতে আসা মাসুম আহমেদ জানান, ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ সুন্দর রাখতে পুলিশের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। নারী-পুরুষ, যুবক- বৃদ্ধ সবাই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট প্রদান করেছেন। পুলিশের ভূমিকার কথা না বললেই নয়, তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জকিগঞ্জ সার্কেল) সুদীপ্ত রায় বলেন, সুন্দর ও পরিচ্ছিন্নভাবে ভোট প্রদান সম্পন্ন করতে পেরে তারা আনন্দিত। এসপি স্যারের নির্দেশে সকাল থেকে পুলিশ ভোটকেন্দ্রগুলোর সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি সুন্দর রাখতে কাজ করে গেছি।
সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, আমি সিলেট জেলা পুলিশের সংশ্লিষ্ট সকল অফিসার ও ফোর্সদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে দুই পৌরসভার নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে। আমরা নির্বাচন উপলক্ষ্যে ৩ স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনির ব্যবস্থা করেছিলাম। পোষাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোষাকেও পুলিশ সদস্যরা দুই পৌরসভায় মোতায়েন ছিলেন। যে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর অবস্থা মোকাবেলার জন্য সিলেট জেলা পুলিশ প্রস্তুত ছিলো এবং আমি সে অনুযায়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) এবং সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জদের নির্দেশনা প্রদান করেছিলাম। পাশাপাশি আমি ভোট গ্রহণের দিন নিজে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঘুরে ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করেছি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd