সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:১৮ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২১
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : গত ৭ জানুয়ারি সৌদি আরব থেকে বাড়িতে ফিরেছেন শামীম আহমদ (৫১)। আর এক মাসের মধ্যেই খুন হলেন তিনি। মঙ্গলবার চাচাতো ভাইয়েরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
হত্যার শিকার শামীম আহমদ কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের মুকুন্দপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মঙ্গলবার চাচাতো ভাইদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হলেন সৌদি আরব প্রবাসী শামীম আহমদ (৫১)। তিনি গত ৭ জানুয়ারি সৌদি আরব থেকে বাড়িতে ফিরেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নিহতের ভাই আব্দুল মান্নান ও আব্দুল মতলিব জানান, তাদের সঙ্গে চাচাতো ভাই সুফিয়ান আহমদের পরিবারের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলছে দীর্ঘদিন থেকে। শামীম আহমদের বাড়ির ১০ শতক জমি জোরপূর্বক দখলে নেন সুফিয়ান আহমদ। গত ৭ জানুয়ারি শামীম দেশে ফেরার পর নতুন করে বিরোধ দেখা দেয়। ইতোমধ্যে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের কারণে উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে বাড়ি বানিয়ে আলাদাভাবে বসবাস করছেন শামীম আহমদ।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় দখলকৃত জমিটি উদ্ধার করতে বাড়িতে যান শামীম আহমদ। বাড়িতে যাওয়ার পর উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে সুফিয়ান আহমদের নেতৃত্বে লাঠিসোটা নিয়ে আক্রমণ চালায় শামীম আহমদের ওপর। ঘটনাস্থলে মারাত্মক আহত হন শামীম আহমদ।
পরিবারের লোকজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে কুলাউড়া হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সুরভী সেন তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে কুলাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পুলিশ হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
এদিকে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ঘটনার মূলহোতা সুফিয়ান আহমদের শ্যালক সাজু, বোন শিল্পী এবং স্ত্রী হ্যাপি বেগমকে গ্রেফতার করেছে।
নিহত শামীম আহমদের পরিবারের লোকজন জানান, একটি চক্রের ইন্ধনে দুটি পরিবারের মধ্যে জমির বিরোধ চলছে। ইতোপূর্বে একাধিকবার সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক চলাকালে সুফিয়ান আহমদ বহিরাগত লোকজন নিয়ে একাধিকবার হামলা চালায়। সেই ঘটনায় আব্দুল মতলিব বাদী হয়ে কুলাউড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
ইউপি সদস্য নোমান আহমদ জানান, আমি বর্তমানে সিলেটে আছি। তাদের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলমান আছে। আমাদের বিচারে রেখেই তারা মারামারি শুরু করে। ফলে আমরা এখন আর তাদের বিচারে যাই না। ওয়ার্ডের দীর্ঘদিনের মেম্বার হিসেবে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
রাউৎগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জামাল জানান, দীর্ঘদিন থেকে দুটি পরিবারের মধ্যে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। নোমান মেম্বার তাকে সালিশ বৈঠকে ডেকে নেন। সেদিন তিনি সেখানে না থাকলে যে সংঘর্ষ বেঁধেছিল তাতে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হতে পারত।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানার ওসি বিনয় ভূষণ রায় জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনায় নিহতের ভাই আব্দুল মতলিব বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd