‘শাল্লায় সাম্প্রদায়িক হামলার দায়দায়িত্ব কোনো আলেম নেবে না’, মামুনুল হক

প্রকাশিত: ১:০৩ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৯, ২০২১

‘শাল্লায় সাম্প্রদায়িক হামলার দায়দায়িত্ব কোনো আলেম নেবে না’, মামুনুল হক

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সুনামগঞ্জের শাল্লায় মাওলানা মামুনুল হকের অনুসারীরা হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামে হামলা ও লুটপাট চালালেও এর দায় নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের এ যুগ্ম মহাসচিব। বুধবার রাতে তিনি নিজের ভ্যারিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লাইভে এসে তিনি এমনটা জানান।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের এ নেতা বলেন, ‘কিছু লোক হিন্দুদের বাড়িতে আক্রমণ করেছে। এর দায়দায়িত্ব কোনো আলেম নেবে না এবং নেয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।’

মামুনুল বলেন, ‘আমরা দেখেছি সেখানে কিছু মানুষ সেই সংখ্যালঘু কিছু পরিবারের বাড়িঘরের ওপর চড়াও হয়েছে। স্থানীয় আলেম সমাজ মানুষকে এই রকম উত্তেজনাপূর্ণ আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ থেকে বিরত রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন। তবে আলেম-ওলামাদের বিধিনিষেধকে উপেক্ষা করে কিছু মানুষ এই ধরনের কাজ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘সে ক্ষেত্রে সোচ্চার ও সচেতন থাকা চাই। দেশের মধ্যে যেন কোনো সাম্প্রদায়িক বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয়। হিন্দু-মুসলিমের যে শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যমূলক সম্পর্ক সেটি বহাল রাখার জন্য সকল মহলের দায়িত্বশীল আচরণ প্রয়োজন।’

মামুনুল আরও বলেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি বিশেষের নামে এ ধরনের আপত্তিকর অভিযোগ তারা দায়ের করে অথবা তার চরিত্র হরণ করে কটাক্ষ করে, সে ক্ষেত্রেও দেশের প্রচলিত আইনের সহায়তা নেয়ার জন্য কঠোর নির্দেশনা থাকবে। কোনোভাবে আইন হাতে তুলে নেবেন না।’

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার কারণে বিতর্কিত ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক গত ১৫ মার্চ দিরাইয়ে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে বক্তৃতা করেন। ওই সমাবেশে তার কিছু বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হন শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাও গ্রামের এক তরুণ। তিনি মামুনুলের সমালোচনা করে মঙ্গলবার ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

এই পোস্টকে কেন্দ্র করে দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় উত্তেজনা দেখা দেয়। হেফাজতে ইসলাম ও মামুনুল হক অনুসারীরা এমন পোস্টে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এই ঘটনায় বুধবার সকালে বিক্ষোভ মিছিল আহ্বান করে হেফাজতে ইসলাম।

তবে আগের রাতেই উত্তেজনা আঁচ করতে পেরে নোয়াগাও গ্রামবাসী ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার দায়ে অভিযুক্ত তরুণকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এই গ্রামের অর্ধশতাধিক পরিবারের প্রায় সবাই দরিদ্র হিন্দু। ফলে আরও বেশি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গ্রামের মানুষজনের মধ্যে।

তবে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি আর আতঙ্ক সত্ত্বেও প্রশাসনের বাড়তি নজরদারি না থাকায় বুধবার সকালে নোয়াগাঁও গ্রামে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মিছিল করে নির্বিঘ্নেই হিন্দু অধ্যুষিত এই গ্রামের সবগুলো বাড়িঘরই ভাঙচুর ও লুটপাট করে। গ্রামের প্রায় ৮০টি হিন্দু বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এ সময় গ্রামের লোকজন পাশের হাওরে গিয়ে লুকিয়ে আত্মরক্ষা করেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..