সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:২৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩০, ২০২১
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেট নগরের জিন্দাবাজারস্থ আবাসিক হোটেল রাজমণী। হোটেল নামে মিনি পতিতালয় ও নারী ভিকটিমদের অন্ধকার বন্দীশালা। দেদার-ছে এ হোটেলে চালানো হচ্ছে জমজমাট সুন্দরী নারী ও পতিতা ব্যবসা।
অভিযোগ পাওয়া গেছে-দেশের নানা স্থান থেকে নিয়ে এসে এই হোটেলে উঠানো হয় বিভিন্ন বয়সের রূপসী তরুণী ও কিশোরীদের। এমনকি অপহরণের শিকার তরুণীদেরও। তার পর হোটেলের বিভিন্ন কক্ষে এদের দিয়ে রাতদিন চালানো হয় অবৈধ যৌনকর্ম। করা হয় পার্টটাইম ও পার্টনাইট দেহব্যবসা। ম্যানেজ করতে দৈনিক ও সাপ্তাহিক বখরা দেয়া হয় প্রশাসনের অসাধু কতিপয় কর্তাব্যক্তি ও সাংবাদিক নামধারী মহল বিশেষকে। হোটেলের পরিচালক প্রভাবশালী হওয়ায় অভিযানের ক্ষেত্রে হোটেলটি থাকে সম্পূর্ণ নিরাপদ। তাই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা প্রেমিক-প্রেমিকা,গার্লফেন্ড-বয়ফেন্ড এবং ছাত্র-ছাত্রীরা এই হোটেলে চড়াদামে রেষ্টরুম ভাড়া করে অবৈধভাবে মিলিত হয়ে থাকে। ক্লাস ফাঁকি দিয়ে কলেজ-ভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীরা এই হোটেলে দৈহিক মিলনে মেতে ওঠে। দরদামে এই হোটেল রাজমণীতে রমণী ও তরুণীদের নিয়ে রাত কাটানোরও সুযোগ পায় বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির কামুকরা। এভাবেই দেহব্যবসায়ী তরুণী ও পতিতাদের দিয়ে এই হোটেলে অনৈতিক ব্যবসা চালিয়ে সিলেটের সামাজিক ঐতিহ্য বিনষ্টের পাশাপাশি যুবসমাজকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। জিন্দাবাজার পয়েন্টের কাকলীচান কমপ্লেক্সে হোটেল রাজমণী অবস্থিত।
অভিযোগে আরো প্রকাশ, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিয়ে ও চাকুরি প্রলোভনে ফুসলিয়ে বা অপহরণ করে নিয়ে আসা কিশোরী-তরুণী ও যুবতীদের হোটেল রাজমণীর বিভিন্ন কক্ষে আটকে রাখা হয় এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের দিয়ে চালানো হয় রমরমা দেহব্যবসা। এছাড়া রাতে বন্দী করে রাখা কিশোরী ও তরুণীদের ভাড়ায় হোটেলের বাইরে ধনাঢ্য কামুকদের বাসা ও বাংলো বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরে আবার একই কায়দায় পরদিন তাদের ফিরিয়ে আনা হয় হোটেল রাজমণীতে। অনেক সময় হোটেল রাজমণীতে প্রেমিক যুগল এবং বয়ফেন্ড-র্গালফ্রেন্ডদেরকে নাম-ঠিকানা এন্ট্রি ছাড়া রুম ভাড়া দেওয়া হয় এবং আদায় করা হয় দ্বিগুন-তিনগুন টাকা। ফলে সরকার বঞ্চিত হয় রাজস্ব প্রপ্তি থেকে। কয়েকমাস পূর্বে এক আইওয়াশ অভিযানের মাধ্যমে হোটেল রাজমণী থেকে পতিতা ও খদ্দেরসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে কোতোয়ালি পুলিশ। এর পর থেকে অজ্ঞাতকারণে আর কোপন অভিযান হয়নি পুলিশের। ফলে হোটেলের পরিচালক বেপরোয়া হয়ে চালিয়ে যাচ্ছে নারীদেহের জমজমাট ব্যবসা।
নারী ব্যবসার পাশপাশি ছাদী গেষ্ট হাউসে রাতে জমে উঠে মাদক ও জুয়ার আসরও। সেবন করা হয় গাঁজা, ফেনসিডিল,ইয়াবা এবং দেশী বিদেশী বিভিন্ন ব্রান্ডের মদ। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও তামাবিল রোড হয়ে আসা মাদক ও ইয়াবার চালানও হোটেল রাজমণী হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হয়ে থাকে। ফলে নগরের পশ্চিম জিন্দাবাজারস্থ হোটেল রাজমণী যৌনহাট ও মাদক আড়তে পরিনত হয়ে গেছে বলে অভিযোগে প্রকাশ।
এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা জানান-পুলিশের নাকের ডগায় হোটেল রাজমণীর অনৈতিক এ ব্যবসা সত্যিই উদ্বেগজনক। এতে করে সিলেটের তরুণ ও যুবরা বিপথগামী হচ্ছে। অপকর্মের টাকার জন্য বেড়ে চলেছে চুরি ছিনতাই চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ। সবমিলিয়ে নগরের পশ্চিম জিন্দাবাজারস্থ আবাসিক হোটেল রাজমণীতে সুন্দরী নারী, পতিতা, মাদক ও জুয়ার আস্তানা জমজমাট হয়ে উঠেছে।
অভিযোগের ব্যাপারে হোটেলের ভিজিটিং কার্ডে দেওয়া ০১৩১৪-৯১৫৩৭৯ নাম্বারে বারবার যোগাযোগ করা হলে হোটেল রাজমণীর ম্যানেজার ভিজিংি কার্ডে যেমন তার নাম উহ্য রেখেছেন তেমনি ফোনে নাম প্রকাশ ও বক্তব্য প্রদান না করে মোবাইল ফোন কেটে দেন। তবে হোটেল স্টাফ পরিচয়দানকারী মোঃ আশিক ইকবাল এর কাছ থেকে হোটেল ম্যানেজারের নাম আব্দুল হান্নান,পরিচালকের নাম আলম মিয়া ও ইসমাইল মিয়া বলে জানা গেছে। মোঃ আশিক ইকবাল এই হোটেরে কোন অনৈতিক কাজ হয় না বলে জানালেও পরিচালকদের মোবাইল নাম্বার দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবু ফরহাদের সাথে শনিবার মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান-হোটেল রাজমণীসহ থানা এলাকাধীন সকল আবাসিক হোটেলের প্রতি থানা পুলিশের কড়া নজরদারী রয়েছে। অনৈতিক কর্মকান্ডের তথ্য অভিযোগ পাওয়া গেলেই পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে থাকে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd