সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:০৫ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২৮, ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক :: করোনা চিকিৎসার জন্য সিলেটের একমাত্র ডেডিকেডেট চিকিৎসা কেন্দ্র শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল। করোনা সংক্রমন বাড়ায় হাসপাতালে বেড়েছে রোগী চাপ। নিয়সিতই অ্যাম্বুলেন্স যাওয়া আসা করে এখানে।
অথচ হাসপাতালটির একটু সামনেই সড়কের তৈরি হয়েছে বিরাট গর্তের। নগরের রিকাবীবাজার এলাকার মাদার কেয়ার ক্লিনিকের পাশেই একটি সেতুর মুখে সড়কের পিচ উঠে গর্ত ও খানাখন্দের তৈরি হয়েছে। ফলে সেতুটি উঠানামার সময় বিরাট ধাক্কা খায় রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সসহ সকল গাড়ি।
এই সড়ক দিয়ে একটু এগোলেই সিলেটেরর সর্ববৃহৎ চিকিৎসা কেন্দ্র সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতাল। ওই হাসপাতালের রোগীদেরও একটি বড় অংশ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। ফলে ভাঙা সড়কের কারণে তাদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কটি ভাঙাচোরা থাকলেও তা সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি সিটি করপোরেশন। এতে আরও দুর্ভোগ বাড়ে মানুষজনের। রোগীসহ সাধারণ যাত্রীদের এই দুর্ভোগ দেখে নিজেই সড়ক সংস্কারে এগিয়ে এলেন এক নারী। তার নাম ফামিস আক্তার।
মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে নিজ উদ্যোগে সড়কের খানাখন্দ সংস্কার কাজ শুরু করেন ফারমিস। প্রায় দু্ই ঘন্টার চেষ্টায় সেতুর পাশের গর্তগুলো ভরাটে সক্ষম হন তিনি।
রাতে ফারমিস আক্তারের সংস্কারের কাজের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। তার এই উদ্যোগ ব্যাপক প্রশংসা পায়। ফেসবুক ভিডিওতে মন্তব্য করে অনেকেই সাধুবাদ জানান ফারমিসকে।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, নির্মাণ শ্রমিকদের সাথে সংস্কার কাজে নেমে পড়েছেন ফারমিস। সড়কে ভাঙা স্থানে বালু, পাথর ও সিমেন্ট মিশ্রন করে ফেলে তারা পালিশ করার কাজ করছেন ফারমিস।
সড়ক সংস্কারের জন্য পাথর, বালু ও সিমেন্ট নিজ খরচেই সংগ্রহ করেছেন বলে জানান ফারমিস।
ফারমিস আক্তার সিলেট নগরের পুলিশ লাইন এলাকার বাসিন্দা ও তিনি নগরীর মীরের ময়দান এলাকার হোটেল ফারমিস গার্ডেনের সত্ত্বাধিকারী। নারী উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি সিলেটে সুপরিচিত। করোনাকালে বিনামূল্যে সংকটে পড়া মানুষজনকে খাদ্য সহায়তা করে ব্যাপক প্রশংসিত হন তিনি। এখনও বিপাকে থাকা মানুষের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেন ফারমিস।
ফারমিস আক্তার বলেন, আমি রাতে বিভিন্ন জনের বাসায় খাদ্য সহায়তা নিয়ে যাই। যাওয়া আসার সময় এই সড়কের খানাখন্দ ও গর্ত দেখতে পাই। এই সড়কের পাশেই শামসুদ্দিন হাসপাতাল আর একটু সামনে ওসমানী হাসপাতাল। প্রতিদিন অসংখ্য রোগী ও লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স এই সড়ক দিয়ে যাতায়ত করে। এখানে এসেই বিরাট ঝাঁকুনি খায় গাড়িগুলো। ফলে রোগীদের অনেক কষ্ট হয়। মাঝেমাঝে দুর্ঘটনাও ঘটে।
তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরেই এরকম দেখছি। কিন্তু কেউ ভাঙা সড়কটি সংস্কার করছে না। তাই আজ রাতে নিজেই সংস্কার কাজে নেমকে পড়েছি।
ফারমিস বলেন, নিজ খরচেই আমি বালু, পাথর ও সিমেন্ট সংগ্রহ করেছি। লকডাউনের কারণে এসব সংগ্রহে বেশ কষ্ট হয়েছে। সারাদিন খুঁজেও না পেয়ে শেষে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সিমেন্ট সংগ্রহ করতে পেরেছি।
স্বামী উপস্থিত থেকে তার কাজে সহযোগিতা করেছেন জানিয়ে ফারমিস বলেন, তিনি আমার সকল উদ্যোগেই সহযোগিতা করেন। খাদ্য সহায়তা কর্মসূচীতেও তিনি সহয়াতা করছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd