সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:৫৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩১, ২০২১
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: পাশেই বিক্রির জন্যে সাজিয়ে রাখা শ’খানেক ছোট-বড় বেহালা’র সারি। গানের ফাঁকে ফাঁকে একটি-দুটি করে বিক্রিও করেন তিনি। এভাবেই দীর্ঘ ১০ বছর ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন সত্তোর্ধ বৃদ্ধ হাছু মিয়া।
উস্কো খুস্কো এক চুল মাথায় টুপি। মুখভর্তি ধবধবে সাদা দাঁড়ি। মলিন পোষাকে ফুটপাতে বসে সারাদিন সুরের বিনুনি আঁকেন তিনি। আপনভোলা মনে নিজের তৈরী বিশেষ কায়দার, খেলনার ‘বেহালা’র সুরের ছন্দে ধরেন হরেক রকম গান।
তিনি সুনামগঞ্জের বিশম্ভপুর থানার চলিতাডোবা গ্রামের বাসিন্দা। গেল কয়েক বছর ধরে বসবাস করছেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। রাতভর তৈরী করেন খেলনার বেহালা। দইয়ের পরিত্যাক্ত ঘটি ও নারকেলের টালির সাথে বাঁশের কঞ্চি, তার, সুতো, মলাটের কাগজ, পশুর চামড়া জুড়ে দিয়ে প্রস্তুত করেন এগুলো। রঙ দেয়ার পর ঠিক করে রাখেন সুর ও তাল। পরে বিক্রির জন্যে ভোর থেকে সন্ধ্যা অবধি ছুটেন হাটে-হাটে।
তার সাথে কথা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, এক সময় কৃষি কাজেই জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। নিজের জমি-জিরাত না থাকায় করতে হতো বর্গা চাষ। এতে তেমন একটা সুবিধা করতে না পেরে, প্রায় ১০ বছর পূর্বে বেহালার কায়দায় নিজে নিজেই বিশেষ ধরণের খেলনার বাধ্যযন্ত্র তৈরী শুরু করেন। একে একে তৈরী করেন পাঁচ রকমের বেহালা। উরস-উৎসব ও বিভিন্ন মেলায় বিক্রি করতেন সব’চে বেশি। বর্তমানে করোনার কারণে এসব বন্ধ থাকায় বেচা-বিকিও নেই তেমন। তবুও কোনমতে চলছে তাঁর জীবন-জীবিকা।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটি ছোট-বড় খেলনার বেহালায় খরচ হয় ২০-৫০টাকা পর্যন্ত। রাতভর কঠোর পরিশ্রমে সর্বোচ্চ ১০-১৫টা তৈরী করা যায়। এরপর একে একে সুরের উপযোগী করে তুলতে হয়। প্রতিটা বিক্রি করা যায় ৫০-১০০টাকায়। দৈনিক ৫০০-১০০০টাকার বিক্রি করে যা আয় হয়, তা দিয়েই কোন মতে চলছে সংসার। এখন বয়েস হয়েছে, এ পরিশ্রমও শরীরে সহেনা। তবুও এটাকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd