“ওসি হারুন সাধারণ জনগণকে নামে বেনামে মামলা দিয়ে গড়ে তুলেছেন হয়রানীর রাজত্ব”

প্রকাশিত: ১১:৫৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৫, ২০২১

“ওসি হারুন সাধারণ জনগণকে নামে বেনামে মামলা দিয়ে গড়ে তুলেছেন হয়রানীর রাজত্ব”

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেটের গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে টাকা ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা ও সাজানো ঘটনায় মামলা রুজু ও নিরিহ একটি পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন গোলাপগঞ্জ থানার শ্রীবহর গ্রামের মৃত বাসির আলীর ছেলে কামাল উদ্দিন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ্য করেন, গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ চৌধুরী একই থানায় এসআই এবং পরিদর্শক (তদন্ত) পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এরপর পদোন্নতি পেয়ে এরপর অন্য থানা থেকে বদলী হয়ে ফের অফিসার ইনচার্জ হিসেবে গোলাপগঞ্জ থানায় ফিরে আসেন। এ পদে নিযুক্ত হওয়ার পর থেকে তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেন। সম্প্রতি কামাল উদ্দিনের এক ভাইকে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে বিনা মামলায় ধরে নিয়ে থানায় মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠান ওসি। কামাল নিজেও এ মামলার আসামি।

সংবাদ সম্মেলনে আর উল্লেখ্য করা হয়, গোলাপগঞ্জ থানায় হারুন ওসি হিসেবে যোগদানের পর থেকে থানা এলাকায় অপরাধ কর্মকান্ড বেড়ে গেছে। শুধু তাই নয় তিনি থানার কোয়ার্টারে না থেকে সিলেট শহরে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন, যে কারণে বিচারপ্রার্থী লোকজন তার সাক্ষাত না পাওয়ায় সুবিচার থেকে বি তও হন। কিন্তু মামলা দিয়ে হয়রানির ভয়ে কেউ তার অনিয়ম, দুর্নীতি আর স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ করতে সাহস পাননা।

কামাল উদ্দিন আরও বলেন, ওসি হারুন সাধারণ জনগণকে নামে বেনামে মামলা দিয়ে গড়ে তুলেছেন হয়রানীর রাজত্ব। সবশেষ চলতি মাসে ওসির নির্দেশে এসআই সুরঞ্জিত কুমার দাস আমার ভাই কয়েছ উদ্দিনকে বাড়ি থেকে ধরে থানায় নিয়ে যানন। এরপর জনৈক ইসলাম উদ্দিনকে বাদি করে ভুয়া ঘটনার ভিত্তিতে থানায় মামলা দায়ের করিয়ে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ওই মামলায় আমাকেও আসামি করা হয়েছিল। বর্তমানে আমার ভাই কারাগার থেকে জামিন নিয়ে মুক্তি পেয়েছেন এবং আমিও জামিনে মুক্ত আছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ওসি হারুন মামলাকে পুঁজি করে টাকা কামানোর ধান্দা করেন। শুধু আমাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত এ মামলাই নয়, তার বিরুদ্ধে এমন অহরহ অসত্য ঘটনায় মামলা দায়েরের নজির রয়েছে, যা নিরপেক্ষ তদন্ত হলে তাঁর সত্যতা পাওয়া যাবে। ইসলাম উদ্দিন বাদী হয়ে যে মামলাটি দায়ের করেছেন ওই মামলার এজাহার দেখলেই বুঝা যায় মামলাটি সাজানো। মামলার এজাহারে ইসলাম উদ্দিন উল্লেখ করেছেন, গত ২ আগস্ট দুপুরে তার মামা লন্ডন প্রবাসী সিরাজ উদ্দিনের শ্রীবহর মৌজার ০ দশমিক ১২ শতক ভূমি আত্মসাতের লক্ষে আমরা তার জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করে জখম করেছি। অথচ এই দিনে এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। একইভাবে মামলায় যে ঘটনাস্থল উল্লেখ করা হয়েছে তাতেও ভুল রয়েছে। এখানে ঘটনাস্থল হিসেবে ৩ নং ফুলবাড়ি ইউনিয়ন উল্লেখ করা হলেও আমাদের বাড়ি ৪ নং লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নে। অর্থাৎ তড়িগড়ি করে মামলা দায়ের করে হয়রানির জন্যই ভূল ঠিকানা দিয়ে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ওই মামলার বাদি গোলাপগঞ্জের মজিদপুর গ্রামের মৃত মনফর আলীর ছেলে ইসলাম উদ্দিন দাবি করেছেন তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধরের পর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিঠে আঘাত করা হয়েছে। এছাড়া তার কাছ থেকে নগদ টাকা এবং হাতে থাকা ঘড়ি ছিনিয়ে নেয়ার পাশাপাশি ধানের চারাও বিনষ্ট করা হয়েছে। এ মামলায় যে পাঁচজনকে সাক্ষী রাখা হয়েছে তাদের কেউই আমাদের প্রতিবেশী নন, তাদের বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে। সাক্ষীদের একজন দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে বসবাস করলেও তাকে ঘটনার সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে। অথচ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় বাসিন্দারা ওই দিন এমন কোনো হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানেন না। ওসি হারুনের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ, তদন্ত ও চার্জশিট দাখিলসহ সকল পর্যায়ে বিচারপ্রার্থী জনগণের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ অপেন সিক্রেট। এমনকি অর্থের বিনিময়ে নিরপরাধকে আসামি করা কিংবা অপরাধীকে মামলা থেকে বাদ দেওয়ার মতোও অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রয়েছে।

বেআইনী ও বিধি বহির্ভূত কর্মকান্ডের মাধ্যমে ওসি হারুনুর রশীদ চৌধুরী গোলাপগঞ্জ মডেল থানার চরম বিতর্কিত কর্মকর্তায় পরিণত হয়েছেন দাবি করে কামাল উদ্দিন এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..