ক্বীনব্রিজে প্রশাসনের অন্ধত্বের ফলে অর্শ গতিতে বাড়ছে অসামাজিক কার্যকলাপ

প্রকাশিত: ১১:৩০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০২১

ক্বীনব্রিজে প্রশাসনের অন্ধত্বের ফলে অর্শ গতিতে বাড়ছে অসামাজিক কার্যকলাপ

মোঃ রায়হান হোসেন : সিলেট নগরীর প্রাণকেন্দ্র সুরমা পয়েন্টের নিকটবর্তী, সুরমা নদীর তীরবর্তী সিলেটের ইতিহাস ঐতিহ্যের ক্বিন ব্রিজের নিচে সন্ধ্যা নামলেই শুরু হয় প্রকাশ্যে দেহ ব্যবসা আর দিনের আলো থেকে রাতের আধারে চলে নির্ভয়ে গাজা সেবন ও মাদক বিক্রি। চারদিকে যখন মাদকদ্রব্য দমন নিয়ে চলছে কড়াকড়ি ঠিক তখনই সিলেটে পুলিশের নাকের ডগায় চলছে মাদক সেবন ও বিক্রিসহ নানা অপর্কম। নগরীর ক্বীনব্রিজের উত্তরপ্রান্ত যেন মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এতে প্রায়ই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের। ক্বীনব্রিজরে উত্তরপ্রান্তের মাত্র কয়েকগজ দূরত্বেই অবস্থান সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালী থানা ও এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়, অস্থায়ী সিলেট সিটি কর্পোরেশন, সিলেট জেলা আদালত, ডিসি কার্যালয়, গণপূর্ত বিভাগ, জেলা পোষ্ট অফিস, নির্মাণাধীন সিলেট সিটি কর্পোরেশন, বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়ি, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিলেট স্টেশন ক্লাব, পার্ক সহ অসংখ্য সরকারী বেসরকারী অফিস সমূহ। রয়েছে অসংখ্য মসজিদ, মন্দির, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, শপিংমল, কাচা বাজার। মহানগরীর ইতিহাস ঐতিজ্যের ক্বীন ব্রিজ, দেশের দীর্ঘতম সুরমা নদী, আলী আমজাদের ঘড়ি, পীর হাবিবুর রহমান লাইব্রেরী, সারদা হল, দৃষ্টিনন্দন সিলেট সার্কিট হাউসকে ঘিরে লেগে থাকে দিন রাত দেশী বিদেশী পর্যটকদের ভীর। এখানে বেড়াতে আসা হাজার হাজার পর্যটক গাজার ঝাঁঝালো গন্ধে বিরক্ত হচ্ছেন এবং বউ বাচ্ছাকে নিয়ে আসা পর্যটকরা সন্ধ্যার পরে প্রকাশ্যে দেহ ব্যবসা দেখে লজ্জিত হয়ে চেহারায় বিরক্ত প্রকাশ করেন। যা সিলেট মহানগরবাসীর জন্যও লজ্জা। ইদানিং ক্বীনব্রিজের উত্তরপ্রান্তের ঐতিহ্যের সাথে সংযুক্ত হয়েছে সুরমার তীর, যা নগরবাসীর জন্য এখন অন্যতম প্রধান বিনোদন কেন্দ্র উঠেছে। এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় দিনদুপুরে দেদারছে মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয় চলছে প্রকাশ্যে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মাদকের এই আড্ডা চলে এখানে।

আর এসব মাদকের মধ্যে রয়েছে গাঁজা, মদ এমনকি হেরোইনও সেবন করা হয় এখানে। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে ক্বিন ব্রিজের নিচ দিয়ে সার্কিট হাউজের পাশের রাস্তা ধরে দৃষ্টি নন্দন নদীর তীরের দিকে হেঁটে গেলেই যে কারো নজরে পরবে সার্কিট হাউজের দেয়াল ঘেষা ফুটপাতে কয়েক জন দেহ ব্যবসায়ী নারী খদ্দের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। একজন খদ্দের পেলেই দেহ ব্যবসায়ী নারীরা ঢুকে যান খদ্দের নিয়ে অন্ধকার নোংরা ব্রিজের নিচে। এই দেহ ব্যবসায়ী নারীদের খদ্দের অধিকাংশ নিন্ম শ্রেণীর পুরুষ ও উঠতি বয়সি যুবকরা। প্রতিদিন চলছে এভাবে অসামাজিক কার্যকলাপ। এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় প্রকাশ্যে দেহ ব্যবসা, গাজা সেবন ও উন্মুক্ত প্রস্রাব করা মেনে নিতে পারেন না সিলেটের নগরবাসী সহ দেশী-বিদেশী পর্যটকরা। প্রশাসনের অন্ধত্বের ফলে দিন দিন এই অসামাজিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে অর্শ গতিতে। যা সিলেটের পর্যটন শিল্পে বেপক ভাবে প্রভাব ফেলছে। বাড়িয়ে দিচ্ছে সিলেট মহানগর বাসী সহ পর্যটকদের স্বাস্থ্যের উপর ঝুকি। এই স্থান থেকেই দেহ ব্যবসায়ী নারী, নিন্ম শ্রেণীর পুরুষ ও উঠতি বয়সী যুবকদের অবৈধ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ দৈহিক মিলনের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে মহামারী আকারে মরণ ব্যাধি এইচ.আই.ভি এইডস সহ অসংখ্য রোগবালাই। প্রকাশ্যে মাদকদ্রব্য মাদক ক্রয়-বিক্রয়, গাঁজা সেবন, উন্মুক্ত প্রস্রাব যে, শুধু স্বাস্থ্যের উপর ঝুকি ফেলছে তা নয়। করছে আলো বায়ু ও পরিবেশ দূষণ। নষ্ট করছে শান্তিপ্রিয় সিলেটবাসীর সুখ শান্তি। সরজমিনে- তরুণ- যুবক থেকে শুরু করে মধ্যবয়সী মাদকসেবীদেরও দেখা মিলে এখানে। কোথাও ২/৪ জন আবার কোথাও ৮/১০ জন বসে মাদক সেবন চলে। তাছাড়া সিসিক’র গাড়ি এখানে পার্কিং করে রাখায় মাদকসেবীদের জন্য আরো বেশি সুবিধা হয়। অনেকে আবার সিসিক’র গাড়িতে বসেও মাদক সেবন করে। ব্রিজের মুখ থেকে শুরু করে তোপখানা রোডের বেশ কিছু জায়গা জুড়ে অবৈধভাবে রাখা সিসিকের গাড়িতে জনসাধারণের যাতায়াতেও মারাাত্মক অসুবিধা হয়। এই মাদকসেবীদের অনেকেই আবার চুরি ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের সাথেও জড়িত। প্রায়ই এই এলাকায় ছিনাতাইয়ের ঘটনা ঘটে। আর ছোটোখাটো চুরিতো নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার। তাছাড়া সুরমার তীরে বেড়াতে আসা-কিশোরী তরুণী বা যুবতীরা প্রায়ই ইভটিজিংয়েরও স্বীকার হন। গাঁজার গন্ধে অনেক সময় ভেতরটা গুলিয়ে আসে সাধারণ পথচারীদের। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত সিলেটের সচেতন মহল। তাদের মতে, এখানে সার্বক্ষনিক পুলিশ প্রহরা থাকলে এসব অপরাধীরা এখানে আস্তানা গাড়তে সাহস পেতও না।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

December 2021
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031

সর্বশেষ খবর

………………………..