সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:১৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক :: বাংলাদেশ নার্সেস এ্যাসোসিয়েশন সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখার সেক্রেটারি ইসরাইল আলী সাদেকের নেতৃত্বে বিশাল মিছিল সহকারে সংবর্ধনা অনুষ্টানে যোগদান করেন হাজার হাজার নার্স। পুরো রেজিস্ট্রারি মাঠই ছিলো নার্সদের দখলে। যা ছিলো চোখে পড়ার মতো। এসময় নার্সরা মন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই সিলেট নগরী আপনার-আমার সবার। কে কোন মতের- দলের সেটা দেখার বিষয় নয়। আমরা সবাই সিলেটের- এটাই মূল বিষয়। এখানের ছেলে আমি, আমাদের সবার হৃদয়ে সিলেট। আমার কাছে কেউ কেউ বলেন যে, মেয়র অন্য দলের। সুতরাং আপনি উনার অনেক প্রস্তাব গ্রহণ করবেন না। আমি বলি- সিলেট তো আমারও। মেয়র সাহেবরও। সুতরাং বৃহত্তর সিলেটের মঙ্গলের জন্য সব করতে হবে। এ প্রসঙ্গের উল্লেখ করে সংবর্ধনার জবাবে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমাকে কেউ কেউ বলেছেন- আজকের আয়োজন আরিফ করেছেন। আমি বলেছি- আরিফ সাহেব করেনাই, করেছে সিটি করপোরেশন। বরং আপনাদের লজ্জা লাগা উচিত এই কারণে যে- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে এত ভালো কাজ করছেন, একজন অন্য দলের লোক সেটি স্বীকার করছে। সেটা গ্রহণ করতেছে। আপনাদের তো ভালো লাগার কথা। আমি তো হলাম উসিলা মাত্র। তারা আমাকে নয়, সম্মান দিচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে। যিনি আমাদের প্রতি সদয় হয়ে এতকিছু করছেন। সুতরাং সিলেটের উন্নয়নে সবাই মিলেমিশে কাজ করতে হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটের প্রতি খুব সদয়। সিলেটের উন্নয়নে বরাদ্দ দিতে তিনি দ্বিধা করেন না। না চাইতেও প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অনেক কিছু পাচ্ছে সিলেট। সিলেট নগরীর উন্নয়নে ১২২৮ কোটি টাকা দিয়েছে সরকার। সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থা- রাস্তাঘাট উন্নত হচ্ছে। বিমানবন্দর অত্যাধুনিক হচ্ছে। স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। শিক্ষাখাতে উন্নয়নের ক্ষেত্রে বৃহত্তর সিলেটের প্রত্যেকটি কলেজে বিশেষ অনুদান দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে মডেল সিলেট গড়ে তোলা হচ্ছে। তিনি বলেন, টাকা শুধু পেলেই হয় না। টাকা কাজে লাগাতে হয়। টাকা আগেও দিয়েছিলেন আমাদের অর্থমন্ত্রী। কিন্তু ফেরত গেছে। বর্তমান সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলররা টাকা কাজে লাগাচ্ছেন। যার ফলে সিলেটের উন্নয়ন হচ্ছে। সফল পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বিদেশের বুকে বাংলাদেশের গৌরব সমুন্নত রাখা, সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প অনুমোদন ও সিলেটের উন্নয়নের বিশেষ অবদান রাখায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাংসদ ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে নাগরিক সংবর্ধনা প্রদান করেছে সিসিক। সফল পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের জন্য গৌরব বয়ে আনা এবং সিলেটবাসির দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ঢাকা-সিলেট ৬ লেন মহাসড়ক ও সিলেট মহানগরীর বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে বিশেষ অবদানের জন্য সিলেটের কৃতিসন্তান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন এমপিকে নাগরিক সংবর্ধনা প্রদান করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন।
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর ২০২১) বিকাল ৩ টায় সিলেট রেজিস্ট্রারি মাঠে এই নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত ও প্রদান অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন এমপি’র উদ্দ্যেশে মানপত্র পাঠ করেন সিসিকের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ইয়াসমীন নাহার রুমা। পরে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী মানপত্র, সম্মাননা ক্রেস্ট ও সংবর্ধনা স্মারক হিসেবে স্বর্ণের ‘নগরচাবি’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন এমপি’র হাতে তুলে দেন। এর আগে সিসিক মেয়র, কাউন্সিলররা সংবর্ধিত অথিতিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
এছাড়া বাংলাদেশ নার্সেস এ্যাসোসিয়েশন সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখার সেক্রেটারি ইসরাইল আলী সাদেকের নেতৃত্বে মিছিল সহকারে সংবর্ধনায় যোগদান করেন হাজার হাজার নার্স। যা ছিলো চোখে পড়ার মতো। এসময় নার্সরাও মন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, মহানগরবাসীর পক্ষ থেকে সিলেট সিটি কর্পোরেশন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন এমপিকে নাগরিক সংবর্ধনা দিতে পারায় গৌরবান্বিত মনে করছি। সিলেটবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ঢাকা-সিলেট ৬ লেন মহাসড়ক উন্নিত করণ এবং এর কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। আয়তনের দিকে সিলেট মহানগর বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট সিটি কর্পোরেশন ছিল। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন এমপির ঐকান্তিক সহযোগিতায় সিলেট এখন আড়াইগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। নগরীর আয়তন বৃদ্ধির ফলে সিলেট সিটি কর্পোরেশন আগামীতে সরকারের কাছ থেকে অধিক বরাদ্দ পাবে। ঐতিহাসিক এই কাজে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিশেষ অবদানের জন্য সিসিক মেয়র কৃতজ্ঞতা জানান। সিসিক মেয়র বলেন, নগরবাসীর সুপেয় পানি সেবা নিশ্চিতের জন্য আরোকটি বৃহৎ প্রকল্প প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে। যাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সিলেট মহানগরীর পানির চাহিদা শতভাগ পূরণ করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, আগামী মাসের মধ্যেই নাগরিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পানির বিল সহনীয় পর্যায়ে আনা হবে। বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর ও আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নির্মান কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এই প্রকল্পেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন এমপির উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। সিলেটের উন্নয়নে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের অবদানের কথা স্মরণ করেন সিসিক মেয়র। মেয়র বলেন, সিলেট নগরীর চলমান উন্নয়ন কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যেই শেষ হবে। এছাড়া প্রস্তাবিত আরো ৯টি প্রকল্প পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগিতায় অচিরেই পাশ হবে বলেই প্রত্যাশা করি। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সিলেট একটি আধুনিক নগরের পরিনত হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সহযোগিতায় ভারতীয় সরকারের অনুদানের সিলেট নগরীরর উন্নয়ন প্রকল্প সমূহের কথা তুলে ধরে সিসিক মেয়র বলেন, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সম্প্রীতির এই নগরীর উন্নয়নে দল মতে উর্ধ্ব উঠে সবাইকেই কাজ করতে হবে। সিসিকের উন্নয়নে নগরবাসির সার্বিক সহযোগিতার কথাও স্মরণ করেন। তিনি বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন এমপির সহযোগিতায় করোনা মহামারির সংকটেও সিলেট সিটি কর্পোরেশন সর্বাধিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করতে সক্ষম হয়েছে। সিলেটের উন্নয়নে তাঁর এই অবদানের প্রতি সম্মান জানাতেই এই নাগরিক সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রির সভাপতি তাহমিন আহমেদ, সিলেট জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি এ টি এম ফয়েজ এ্যাডভোকেট, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, সিলেট জেলা প্রসেক্লাবের সভাপতি আল আজাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল হক ও সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সিসিকের কাউন্সিলরবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd