সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:৪৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩০, ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক :: করোনা মহামারির কারণে স্বশরীরে তেমন ক্লাস হয়নি স্কুলগুলোতে। অনলাইনে ক্লাস, এ এক নতুন অভিজ্ঞতা। টেনশন ছাপিয়ে এসেছে সফল্য। এ যেন শিক্ষার্থীদের বড় প্রাপ্তি। তাই তারা আজ উচ্ছ্বসিত।
সিলেট বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় সর্বোচ্চ পাসের হার রেকর্ড করা হয়েছে। বোর্ডের অধীন ২০১২ সালে সর্বোচ্চ পাসের হার ছিল ৯১ দশমিক ৭৮। এবার সেই রেকর্ড ভেঙে পাসের হার ৯৬ দশমিক ৭৮ রেকর্ড করা হয়েছে। ২০০১ সালে বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে এটিই সর্বোচ্চ পাসের হার।
২০২১ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) প্রকাশিত হয়েছে। ফল প্রকাশের পর নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেচে-গেয়ে আনন্দ উল্লাস করে শিক্ষার্থীরা।প্রতিবেশীদের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেন অভিভাবকরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে সিলেটের আলমপুর এলাকার সিলেট বোর্ডের সম্মেলনকক্ষে এই ফলাফল ঘোষণা করেন বোর্ডের সচিব মো. কবির আহমদ ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুণ চন্দ্র পাল। ফলাফল ঘোষণার সময় তাঁরা জানান, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হওয়ায় এবার ভালো ফলাফল হয়েছে। এ ছাড়া মানবিক বিভাগের পরীক্ষার্থীরা এবার ভালো ফলাফল করেছে। এছাড়া এবার গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে পরীক্ষা না থাকায় পরীক্ষার্থীরা আরও ভালো ফলাফল করতে পেরেছে বলে মন্তব্য করেন তাঁরা।
জানা যায়, সিলেট বোর্ডে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৫৩ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে পাস করেছে ১ লাখ ১৫ হাজার ৭০০ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ৮৩৪ জন। গত বছর জিপিএ-৫ প্রাপ্তের সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ২৬৩। জিপিএ-৫ প্রাপ্তিও এবার এই বোর্ডে সর্বোচ্চ।
ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সিলেট বোর্ডের অধীন সর্বোচ্চ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। গত বছর বোর্ডের অধীন ১ লাখ ১৬ হাজার ৪০৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল। এবার গত বছরের তুলনায় ৩ হাজার ১৪৬ জন পরীক্ষার্থী বেশি অংশ নিয়েছিল। গতবারের তুলনায় এবার ৫৭১ জন শিক্ষার্থী বেশি জিপিএ-৫ পেয়েছে। শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বেড়েছে এবার। সিলেট বোর্ডের অধীন এবার ১৮৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে। গতবারের তুলনায় এবার শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেড়েছে ১৪২টি।
এদিকে, ভালো ফলাফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও উচ্ছ্বসিত। সিলেট সরকারি অগ্রগামী স্কুল ও কলেজের প্রধান শিক্ষক মমতাজ বেগম জানান, অনলাইন ক্লাস আমাদের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে আমাদের মেয়েরা খুব আগ্রহী ছিল, তাই আজ তারা সফল। এছাড়াও শেষ তিন মাস স্বশরীরে ক্লাস হওয়াতে তারা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। চাহিদা অনুযায়ী ৪৫ মিনিট করে ক্লাস নেওয়া হয়েছে। পরে অনলাইন আর অফলাইন মিলে ভালো একটা সমন্বয় হয়েছে।
এ বিদ্যালয়ে ৩১১জন শিক্ষার্থী পরিক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৩০৭জন। এ প্লাস পেয়েছে ১৭২ জন শিক্ষার্থী।
এ বিদ্যালয়ের জিপিএ পাওয়া একজন শিক্ষার্থী বলেন, অনেক বেশি আনন্দিত। জীবনের একটি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নিজেকে নিয়ে যেতে পেরেছি বলে মনে হচ্ছে। মা-বাবা ও শিক্ষকরা আমার জন্য যে শ্রম দিয়েছেন সেটি সফল হয়েছে। আমি কৃতজ্ঞ আমার শিক্ষকদের প্রতি।
তিনি আরও বলেন, করোনার মধ্যে অনলাইনে এবং শেষ তিন মাস ক্লাস হয়েছে। শিক্ষকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। সবকিছুই শিক্ষকদের জন্য। ছিল অভিভাবকদের সহযোগিতা।
এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক রাজিয়া বেগম বলেন, আমার মেয়ে গোল্ডেন জিপিএ পেয়েছে। আমাদের কষ্ট সফল হয়েছে। আমরা চাই, মেয়ের এ সাফল্য দীর্ঘস্থায়ী হোক।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd