সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:৫৯ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৬, ২০২২
নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়াইনঘাট :: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় সরকারের ৩কোটি টাকার সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি সংশিষ্টদের অবগত করা হলেও স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না। জোড়াতালি দিয়ে উদ্বোধনের অপক্ষা করছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোঃ ইউনুস মিয়া।
জানাযায়, গোয়ইনঘাট উপজেলা সদর সংলগ্ন পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়নের পূর্নানগর গ্রাম ও আশপাশের লোকজন মিলিয়ে প্রায় তিন হজার মানুষের বিশুদ্ধ নিরাপদ পানির সংকট। এ সংকট নিরসনে গত বছেরর ২৯অক্টোবর ১কোটি টাকা ব্যায়ে সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মান কাজের ভিত্তি স্থাপন করেন সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। নির্মানত্রুটি ও সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতার কারনে পানির টাংকি নির্মান শেষে পরীক্ষমূলক সরবরাহ শুরু হলেও টাংকির দেয়ালের মধ্যভাগে বিভিন্ন দিকে পানি বেরিয়ে আসছে। বিষয়টি জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তাদের অবহিত করলে টাংকির বাহির দিকে সিমেন্টর প্রলেপ দিয়ে পানি অকটিয়ে রাখার চেষ্টা করেও কোন লাভ হয়নি। সর্ব শেষ পানির টাংকির ভেতর থেকে বালু-পাথর পূনরায় বাহির করে সিমেন্টের প্রলেপ দিয়ে মেরামতের কাজ চলছে। সরকার বাহাদুর কর্তৃক এলাকার সুফল প্রত্যাশী মানুষের দাবী টাংকিটি ভেঙ্গ পূনরায় নির্মাণ করে স্থায়ী সমাধান। অন্যথায় কিছু দিনের মধ্যেই জনসাধারণের পানির প্রাপ্তির আশা দূরাশায় পরিণত হবে।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া হেলাল জানান, সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মানে ত্রুটি থাকায় এমন হচ্ছে। এমনকি বাহির থেকে প্রলেপ দিয়ে পানিবন্ধের চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি বিষয়টি জেলা-উপজেলা কর্মকর্তাদের জানিয়েছি, স্থায়ী সমাধান না হলে জনগনের আশা আকাঙ্খা থেকেই যাবে। কাজ শুরু থেকে অদ্যাবদি পর্যন্ত এখানে কোন ঠিকাদারও আসে নেই। স্থানীয় লোকজন জানান পানি সরবরাহের জন্য থ্রেডছাড়া পিবিসি পাইপ ১২/১৫ফুট মাঠির নীচে দেয়া হয়েছে, চায়না মটর লাগানো হয়েছ, কলামেও সঠিকভাবে কাজ করা হয়নি। ঠিক ভাবে গোয়াইনঘাট উপজেলার লেংগুড়া ও বাউরভাগে আরও দুটি প্যান্ট নির্মাণ হয়েছে।
এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোঃ ইউনুছ মিয়া বলেন, টাংকি নির্মাণকালে কন্সট্রাকশন জয়েন্টে সমস্যা থাকায় এই প্রবলেম হচ্ছে। বিষয়টি শুনার পর সরেজমিনে দেখে উন্নতমানের ক্যামিক্যাল দিয়ে রিপিয়ারিং করা হচ্ছে আশাকরি সমস্যা হবে না। অন্য দিকে প্রতি বছর গোয়ইনঘাটে টিউবওয়েল স্থাপনে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যায় হলেও তদারকির অভাবে নিরাপদ পানি প্রাপ্তিতে ভোগান্তি রয়েই যাচ্ছে জনসাধারনের। টিউবওয়েল স্থাপনের সব টাকা সরকার দিলেও কৌশলে গ্রহীতাদের নিকট থেকে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এতে সরকারের নির্ধারিত ফি ছাড়াও ১২/১৪ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে একজন গ্রাহকের। তার পরও পাচ্ছেন না বিশুদ্ধ পানির কোন সুবিদা। ইতিপূর্বে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শ্যালো ও ডিব টিউবওয়েল স্থাপনের পর পানিতে দূর্গন্ধ কিংবা ময়লা থাকার অভিযোগ থাকলেও উদাসীন রয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস গোয়াইনঘাট।
অপর দিকে নিয়মিত তদারকির অভাবে সরকারের বিশুদ্ধ পানির উৎস সৃষ্টিতে প্রতিবন্ধকতার অভিযোগ উপজেলার সর্বমহলের। এ নিয়ে গ্রহীতাদের অভিযোগ টিউবওয়েল স্থাপনের সময় শ্রমিকরা সাধারন মানুষদের নানা অজুহাত দেখিয়ে কোনমতে লেয়ার দিয়ে পানি উত্তোলনের কাজ শেষ করেন। সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ছাড়াও ২০২০-২১ অর্থ বছরে ২শত ৪৯টি টিউবওয়েল বরাদ্ধ হলে এগুলোর কাজ চলমান রয়েছে, যার ব্যায় ২কোটি টাকা। ২০২১-২০২২এর তালিকা এখনো সংশ্লিষ্ট অফিসে আসেনি। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোঃ ইউনুস মিয়া বলেন, টিউবওয়েল গ্রহীতাকে কোন খাবার, উপকরন, বিদ্যুৎবিল দিতে হয়না এগুলো সবই ঠিকাদার বহন করে। ঠিকাদার আসে না ঠিকই কিন্তু তার ম্যানেজার থাকে। সরেজমিনে সরকারের উন্নয়ন মূলক কার্যক্রম পরিদর্শনে গেলে গোয়াইনঘাট উপজেলার সচেতন মহল জোর দাবি জানিয়ে বলেন, গ্রাহকদের প্রত্যাশানুযায়ী সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত বিশুদ্ধ পানির উৎস সৃষ্টির কাজগুলোর সুষ্ঠ তদারকির মাধ্যমে স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হবেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd