সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:৪৮ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৮, ২০২২
মোঃ রায়হান হোসেন: পুলিশের চাকরিকে জনগণের সেবা হিসেবে নিয়েছেন। বাঁধাহীন ভাবে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন মানুষের কল্যাণে। তিনি হলেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের আওতাধীন শাহপরাণ (রহঃ) থানার এএসআই আল ইমরান।
সে জন্য তাকে অনেকেই বলেন মোবাইল যাদুকর আবার অনেকেই ডাকেন মোবাইল ইমরান বলে। লোকজনের চুরি ও ছিনতাই কিংবা নিখোঁজ হওয়া মোবাইল উদ্ধার করাই যেনও তার নেশা। তিনি থানায় যোগদানের পর লোকজনের চুরি ও ছিনতাই কিংবা হারিয়ে যাওয়া অসংখ্য মোবাইল উদ্ধার করে পৌঁছে দিয়েছেন প্রকৃত মালিকদের নিকট।
জানা গেছে- চলতি বছরের জুলাই মাস হইতে অক্টোবর মাস পর্যন্ত চুরি ও ছিনতাই কিংবা হারিয়ে যাওয়া প্রায় ৫০টির অধিক মোবাইল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। এছাড়াও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চলতি মাস অথাৎ নভেম্বর মাসের ৮ তারিখ পর্যন্ত আরো ২টি হারিয়ে যাওয়া মোবাইল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। শাহপরাণ (রহঃ) থানায় যোগদানের পূর্বে তার সাবেক কর্মস্থল মুন্সিগঞ্জ থানায় তিনি অসংখ্য মোবাইল উদ্ধার করে মোবাইল জাদুকর হিসেবে সুনাম কুড়িঁয়েছেন।
শাহপরাণ (রহঃ) থানায় কর্মরত অনেকের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে- থানায় মোবাইল হারানোর প্রসঙ্গেঁ জিডি হলেই ডাক পড়ে তার। এরপর তা উদ্ধারে মাঠে নেমে পড়েন তিনি। উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত লেগে থাকেন। উদ্ধারের ক্ষেত্রে কোনটিতে তিনি দু’দিন থেকে শুরু করে সপ্তাহ খানেক পর্যন্ত সময় নিয়েছেন। শুধু মোবাইল উদ্ধারই নয়। কর্মস্থলের অন্য কাজগুলোও তিনি গুরুত্বসহকারে করেন।
এএসআই আল ইমরানের সঙ্গে আলাপকালে বলেন- আমি মোবাইলের দাম বা ব্যক্তিকে মূল্যায়ন করি না মোবাইল উদ্ধারের ক্ষেত্রে। মোবাইল উদ্ধারে রিকশাচালক ও শ্রমিক অথবা দামী কিংবা কম দামী মোবাইল হোক সমান গুরুত্ব দেই। মানুষের অনেক মূল্যবান জিনিস হারিয়ে গেলে সে ততটা কষ্ট পায় না যতটা কষ্ট পায় একটা মোবাইল হারিয়ে গেলে। মোবাইলে অনেকের অনেক স্মৃতি ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে যা হারিয়ে গেলে তার অনেক ক্ষতি ও কষ্ট হয়। জিডি করার পর মোবাইল উদ্ধার করে ভুক্তভোগীকে ফোন দিয়ে যখন বলি আপনি একটা জিডি করেছিলেন আপনার মোবাইলটি উদ্ধার হয়েছে। তখন অনেকে তা বিশ্বাসই করতে চায় না।
মোবাইল উদ্ধারের যাদুকর এএসআই আল ইমরান সকলের উদ্দেশ্যে বলেন- শখের বশে অনেক সময় পারসোনাল কিংবা অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও মোবাইলে সংরক্ষণ করেন অনেকে। কিন্তু মোবাইল যখন হারিয়ে যায় তখন তারা মোবাইলের চেয়ে বেশি চিন্তা করেন অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও নিয়ে। এক্ষেত্রে পরামর্শ হলো, কখনো পারসোনাল কিংবা অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও মোবাইলে সংরক্ষণ করা উচিত নয়।
এএসআই আল ইমরানের এহেন কর্মকাণ্ডে তার সহকর্মীরাও তাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। সম্মানও জানিয়েছেন তার কর্মের প্রতি ভালোবাসা একাগ্রতা ও নিষ্ঠাকে।
শাহপরাণ (রহঃ) থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন- থানার একজন অফিসার যখন এরকম অর্জন করে তখন অবশ্যই আমরা আনন্দিত ও গর্বিত হই। পুলিশ সদস্যরা যখন ভালো কিছু করে সেটা পুরো বাহিনীর সুনাম হয়। ইমরানের একাগ্রতা, নিষ্ঠা, চেষ্টা বা কাজের প্রতি যে ভালোবাসা এগুলো বর্তমান সময়ে সত্যিই বিরল। সেই বিবেচনায় নিঃসন্দেহে ইমরান একজন ভালো অফিসার। তার ওপর সকল অর্পিত দায়িত্ব পালন করেই এই কাজগুলো করছে সে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd