সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১:৩৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৬, ২০২২
নিজস্ব প্রতিবেদক: মশা নিধনের জন্য বরাদ্দ হয় কোটি কোটি টাকা। কেনা হয় ওষুধ। ‘মশা মারতে কামান দাগা’য় সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। ফগার মেশিন দিয়ে করপোরেশনের কর্মীরা মশা নিধনের মহড়া দেন। এত কিছুর পরও মশার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলছে না নগরবাসীর।
দিনরাত নগরবাসীকে ভোগ করতে হচ্ছে এ যন্ত্রণা। একযোগে নগরীতে মশক নিধন অভিযান চালাতে সিসিক ব্যর্থ হওয়ায় ওষুধ ছিটিয়েও সুফল মিলছে না বলে মনে করছেন নগরবাসী। সাধারণত বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে বাড়তে থাকে মশার উপদ্রব। বর্ষায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে ডিম পাড়ে মশা। সেখান থেকে বাচ্চা জন্ম নেওয়ার পর মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। কিন্তু এ বছর শীত-বর্ষা সবই যেন সমান। সারা বছর নগরবাসীকে পোহাতে হয়েছে মশার যন্ত্রণা। মাঝেমধ্যে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মশার ওষুধ ছিটানো হলেও তাতে সুফল পাননি নগরবাসী।
সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, মশক নিধন কর্মসূচির অংশ হিসেবে মাঝেমধ্যে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে সিসিক কর্মচারীরা ওষুধ ছিটাতে যান। কখনো স্প্রে মেশিন আবার কখনো ফগার মেশিন দিয়ে তারা মশক নিধন অভিযানে অংশ নেন। বেশিরভাগ সময় মশক নিধন কর্মীরা পাড়া-মহল্লার প্রধান সড়কের পাশে ওষুধ ছিটিয়ে চলে আসেন। ফলে কোনো সুফল মেলে না।
সিলেট মহানগরের মেন্দিবাগের বাসিন্দা জুনেদ আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘রাত-দিন মশার উপদ্রব সহ্য করতে হচ্ছে। আগে রাতে মশার উপদ্রব ছিল, এখন দিনেও সমান যন্ত্রণা ভোগ করতে হচ্ছে। সিটি করপোরেশন কোথায় কীভাবে মশক নিধন অভিযান চালায় তা আমাদের জানা নেই। আমাদের এলাকায় কখনো মশক নিধন অভিযানে কেউ আসেনি।’
রায়নগর মিতালী আবাসিক এলাকার বাসিন্দা হোসাইন আহমদ সুজাদ বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের ব্যর্থতায় নগরীতে মশার উপদ্রব বেড়েছে। মাঝেমধ্যে প্রধান সড়কের পাশে ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটাতে সিসিক কর্মীদের দেখা গেলেও তারা কখনো পাড়া-মহল্লার ভিতরে আসেন না। মশার উপদ্রব এমন বেড়েছে এখন দিনে ঘুমালেও মশারি টানাতে হয়। একসঙ্গে পুরো শহরে মশার ওষুধ ছিটানো গেলে এ উপদ্রব কমত।’
নগরীর জেলরোড এলাকার বাসিন্দা এইচএসসি পরীক্ষার্থী পারিসা ফারিহা চৌধুরী বলেন, ‘পরীক্ষা চলছে, কিন্তু মশার যন্ত্রণায় পড়ালেখা করা সম্ভব হচ্ছে না। দিন-রাত একইভাবে মশার যন্ত্রণা পোহাতে হচ্ছে। দিনে পড়তে বসলেও খাটে মশারি টানিয়ে বসতে হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের মশক নিধনের কোনো উদ্যোগ আমাদের চোখে পড়েনি। তারা জনদুর্ভোগ উপলব্ধি করতে পারছে না। পারলে অবশ্যই মশক নিধনে কার্যকর উদ্যোগ নিত।’
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, গেল বছর পর্যন্ত ২৬.৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডে মশক নিধন অভিযান চালাতে হয়েছে। এতেও হিমশিম খেতে হয়েছে নগর ভবন কর্তৃপক্ষকে। সম্প্রতি গেজেট করে সিটি করপোরেশনের আয়তন বৃদ্ধি হয়ে ৬০ বর্গকিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে। ওয়ার্ড বেড়েছে আরও ১২টি। তাই সীমিত জনবল নিয়ে বৃহৎ এলাকার মশক নিধন নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নগর ভবনের এক কর্মকর্তা জানান, সিসিকের উদ্যোগে যেভাবে মশক নিধনের চেষ্টা চলছে তাতে নগরবাসী সুফল পাওয়ার কথা নয়। একযোগে পুরো নগরীতে ওষুধ ছিটানোর কাজ করা না গেলে মশার যন্ত্রণা থেকে নগরবাসীকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু এ জন্য যে জনবল ও ওষুধের প্রয়োজন তার কোনোটাই নেই সিটি করপোরেশনের।
এ প্রসঙ্গে জানতে সিসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd