বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল টাইগাররা

প্রকাশিত: ৬:৪০ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৪, ২০২৩

বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল টাইগাররা

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ম্যাচের ১৩ ওভারে শেষে ১ উইকেটে হারানো ইংল্যান্ডের রান ১০০। হোয়াইটওয়াশ এড়াতে শেষ ৭ ওভারে ইংলিশদের চাই ৫৯ রান, হাতে ৯ উইকেট। ব্যাটিংয়ে থিতু হওয়া দাভিদ মালান আর জস বাটলার। ১৪তম ওভারে বোলিংয়ে এসে মালান ও বাটলারকে আউট করে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান মুস্তাফিজুর রহমান। বাংলাদেশের কাজটা আরও সহজ করেছেন তাসকিন আহমেদ। নিজের শেষ আর দলের ১৭তম ওভারে আউট করেছন মঈন আলী এবং বেন ডাকেটকে। ক্রমশই কঠিন হয়ে ওঠা সমীকরণ দাঁড়ায় শেষ ওভারে ২৭ রানে। সেটা করতে পারেননি ইংলিশ ব্যাটাররা। ফলে ১৬ রানের জয়ে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ।

বিপিএলে পাওয়ার প্লেতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের আস্থার প্রতিক ছিলেন তানভির ইসলাম। আঁটসাঁট বোলিংয়ের সঙ্গে শুরুতেই দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেয়াতে বেশ পটু বাঁহাতি এই স্পিনার। অভিষেক হওয়া তানভিরের উপর আস্থা রাখলেন সাকিব আল হাসানও। সেটার প্রতিদান দিতে তরুণ এই স্পিনার সময় নিলেন মোটে তিন বল। তানভিরের রাউন্ড দ্য উইকেট ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন ফিল সল্ট। ব্যাটে-বলে করতে না পারা সল্ট খানিকটা বেরিয়ে এসেছিলেন। সুযোগটা লুফে নিয়ে সল্টকে স্টাম্পিং করেন লিটন দাস।

পরের ওভারে তাসকিন আহমেদের আবেদনে মালানকে আউট দিয়েছিলেন অনফিল্ড আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান তিনি। যদিও বল ব্যাটে লেগেছে কিনা সেটা নিয়ে খানিকটা বিতর্ক আছে। বাংলাদেশের বোলাররা চেপে ধরলেও সেখান থেকে ইংল্যান্ডকে টেনে তোলেন মালান ও জস বাটলার। সাকিব কিংবা হাসান মাহমুদরা ইংলিশদের সেভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারেননি। এদিকে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৪৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মালান।

যদিও হাফ সেঞ্চুরির আগে ফিরতে পারতেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। তবে এক্সট্রা কভারে দাঁড়িয়ে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েও সেটা লুফে নিতে পারেননি তৌহিদ হৃদয়। মালান ও বাটলারের জুটি একশ পেরোবার আগে সেটি ভাঙেন মুস্তাফিজুর রহমান। বাঁহাতি এই পেসারের বলে টপ এজ হয়ে লিটনের গ্লাভসে ক্যাচ দেন ৫৩ রান করা মালান। পরের বলে মেহেদি হাসান মিরাজের দুর্দান্ত থ্রোতে রান আউট হন বাটলার। ইংলিশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে এদিন এসেছে ৪০ রান।

হাসানের স্লোয়ার ডেলিভারিতে লং অন দিয়ে ছক্কা মারা মঈন আলীকে ইনিংস বড় করতে দেননি তাসকিন। ডানহাতি এই পেসারের বলে পুল করতে গিয়ে মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ৯ রান করা মঈন। বেন ডাকেট সাজঘরে ফিরেছেন তাসকিনের বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে। ম্যাচ জিততে শেষ ওভারে ২৭ রানের প্রয়োজন হলেও সেই সমীকরণ মেলাতে পারেনি ইংল্যান্ড। তাতে বাংলাদেশের কাছে ১৬ রানে হেরে হোয়াইটওয়াশ হলো সফরকারীরা।

এর আগে স্যাম কারানের স্লোয়ার ডেলিভারিতে ফ্লিক স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মেরে নিজের রানের খাতা খুলেন রনি। পরের ওভারে ক্রিস ওকসের বিপক্ষে রনি ও লিটনের আরও দুই চার। সাহসী ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনীর শুরুটা হলো এভাবে। মাঝে অবশ্য গতিময় বাউন্সারে বাংলাদেশকে কাঁপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছেন জোফরা আর্চার। তবে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে লিটনের সেই চার যেন সবকিছুকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলো। বাংলাদেশময় পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আউট হতে পারতেন রনি।

যদিও আর্চারের গতিময় ডেলিভারিতে টপ এজ হওয়া রনির ক্যাচ নিতে পারেননি রেহান আহমেদ। তাতে পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশের পুঁজি ৪৬ রান। তবে পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পরের ওভারে উইকেট হারায় বাংলদেশ। আদিল রশিদের বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে তারই হাতে ক্যাচ দেন রনি। ডানহাতি এই ব্যাটার এদিন আউট হয়েছেন ২২ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলে। রনি ফিরলেও অপরপ্রান্তে ইংলিশ বোলারদের বিপক্ষে দাপট দেখাচ্ছিলেন লিটন।

ক্রিস জর্ডানের বলে মিড উইকেট আর লং অন দিয়ে টানা দুই চার মেরে পঞ্চাশের কাছে যান ডানহাতি এই ওপেনার। পরের ওভারে রেহানের বলে অন সাইডে ঠেলে দিয়ে ৪১ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লিটন। হাফ সেঞ্চুরির পরই ফিরতে পারতেন ডানহাতি এই ব্যাটার। আর্চারের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে চেয়েছিলেন তিনি। টপ এজ হওয়ায় সেটা চলে যায় মিড উইকেটে থাকা বেন ডাকেটের হাতে। তবে ডাকেট সেটা লুফে নিতে না পারলে ৫১ রানে জীবন পান লিটন।

তিন ম্যাচ পর হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া এই ব্যাটার পঞ্চাশ পেরোনোর পর ইংলিশ বোলারদের ওপর চড়াও হন। আর্চারের টানা দুই বলে অ্যাক্রোস দ্য লাইনে এসে উইকেটকিপারের উপর দিয়ে চার আর স্কয়ার লেগ দিয়ে মারা ছক্কা সেটারই প্রমাণ। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিচ্ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে দ্রুত রান তোলার প্রচেষ্টায় উইকেট দিয়ে আসতে হয় লিটনকে।

জর্ডানের শর্ট লেংথ ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে থাকা সল্টের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ডানহাতি এই ব্যাটার এদিন আউট হয়েছেন ক্যারিয়ার সেরা ৭৩ রানের ইনিংস খেলে। লিটন ফেরার পর কমতে থাকে রানের গতি। ইংলিশ বোলাররা শেষদিকে বাংলাদেশের ব্যাটারদের বোকা বানাতে চেষ্টা করেছেন স্লোয়ার আর ইয়র্কার ডেলিভারি। তাতে তারা সফলও হয়েছেন।

আগের ৫ ওভারে ৫৪ রান করা বাংলাদেশ শেষ পাঁচ ওভারে করেছে মোটে ২৭ রান। দ্রুত রান তুলতে না পারায় বাংলাদেশ প্রত্যাশিত পুঁজি পায়নি। শেষ পর্যন্ত শান্ত ৪৭ আর সাকিব আল হাসান অপরাজিত ছিলেন ৪ রানে। ইংল্যান্ডের হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন জর্ডান ও রশিদ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ- ১৫৮/২ (২০ ওভার) (লিটন ৭৩, রনি ২৪, শান্ত ৪৭*, সাকিব ৪*; জর্ডান ১/২১)

ইংল্যান্ড- ১৪২/৬ (মালান ৫৩, বাটলার ৪০, তাসকিন ২/২৬, মুস্তাফিজ ১/১৪, তানভির ১/১৭)

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..