সিলেট ৩১শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:৩৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৬, ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক :: পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মুল্লুক হোসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ছেড়ার অভিযোগ দায়ের করেন সেই অভিযোগ ভিত্তিতে গত ১৪ জুলাই রাতে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ আলফু মিয়া ও আলমগীর আলম সহ চারজনের নামে মামলা রেকর্ড করে (মামলা নং ১১) কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ।
কোম্পানীগঞ্জে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ার জেরে উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১০ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও তেলিখাল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল ওয়াদুদ আলফু মিয়ার নেতৃত্বে এই হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুল্লুক হোসেন বলেন, ‘‘আলফু চেয়ারম্যান ও সহযোগী ইজারাদার যে এলাকা ইজারা নিয়েছে সেখানে বালু নেই। তাই তারা লিজের বাইরের জায়গা থেকে এবং আমাদের রেকর্ডয়ীয় জায়গা থেকে অবৈধভাবে জোরপূর্বক বালু তুলছে। এতে এলাকার মসজিদ, রাস্তা, স্কুল, মাদ্রাসা, কবরস্থান হুমকির মুখে পড়েছে। তারা এলাকার লোকজনের জায়গা থেকে জোরপূর্বক বালু নিয়ে যায়। আমাদের আওয়ামী লীগের অফিসের আশপাশ এলাকা (লিজের বাইরের জায়গা) থেকেও অবৈধভাবে বালু তুলতে চাচ্ছে। এগুলো নিয়ে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করেছে। তাই তারা বালু নিতে পারছে না। এতে তারা ক্ষেপে গেছে।
তিনি বলেন, ‘‘আমি সোমবার রাতে (যখন ঘটনা ঘটে) এলাকায় ছিলাম না। আলফু চেয়ারম্যান ও সহযোগী ইজারাদারের নেতৃত্বে আমাদের আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালায়। আমি থাকলে তারা হয়তো আমাকে প্রাণে মেরে ফেলত। তারা হুমকি দিয়ে গেছে, বলেছে- ‘আমার কারণে তাদের ১০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে’। এ ঘটনায় আমি আলফু চেয়ারম্যানসহ ৫ জনের নামে থানায় মামলা করতেছি।’’
তবে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তেলিখাল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কাজী আব্দুল ওয়াদুদ আলফু মিয়া।
আলফু মিয়া বলেন, ‘‘এটা আওয়ামী লীগের অফিস নয়। যিনি অভিযোগ করছেন এটা তার ব্যক্তিগত অফিস। এখানে বালুমহালের বালু বিক্রির টাকা নিয়ে একটা ঝামেলা ছিল। দুই পক্ষের দেনা-পাওনা নিয়ে সমস্যা। এই লেনদেনে আমি ছিলাম। উভয় পক্ষের মতামতে মুরুব্বি হিসেবে আমার কাছে টাকা রাখা ছিল। দুই পক্ষের নিয়ে কথাবার্তার এক পর্যায়ে এক পক্ষের (রূপা মিয়া ও মুল্লুক হোসেন) টাকা দিতে অস্বীকার করেন। তবে বালুমহালের লেসিকে (আমার পার্টনার) বলেছি, তোমার ভাই-ব্রাদার এগুলো করতেছে, আর আমার মহালে লস (ক্ষতি) হচ্ছে। আমি আমার পার্টনারকে বলেছি, আমি চলে গেলাম। আমার টাকাগুলো দিও। আমি আর খালে আসব না। এই বলে আমি টেবিলে থাপ্পড় দিয়েছি। এতে টেবিলের গ্লাস ফেটে যায়। আমি চলে আসি এটাই মূল ঘটনা। আলফু মিয়া বলেন, ওখানে কোনো হামলা কিংবা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি।
তিনি বলেন, ‘‘মূলত একপক্ষের রূপা মিয়া (মুল্লুক হোসেনের চাচাত ভাই) অন্য পক্ষের মাসুক চৌধুরীকে ১৩ লাখ টাকাগুলো না দিতেই তারা এসব নাটক সাজিয়েছে। পুলিশ একাধিকার ঘটনাস্থলে গিয়েছে, ভাঙচুরের কোনো সত্যতা পায়নি।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জের ঢালারপাড়সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ইজারা বহির্ভূত জায়গা থেকে প্রভাবশালী (আলফু চেয়ারম্যান ও তার সহযোগী) চক্র অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। লিজের বাইরে ঢালারপাড় এলাকায় বিপুল পরিমাণ বালু থাকার কারণে তারা অবাধে বালু লুটপাট করছে। এতে কবরস্থান, বসতি বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি ও অসহায়দের জন্য নির্মিত সরকারি গুচ্ছগ্রামকে হুমকিতে পড়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেও ভুক্তভোগীরা কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। উল্টো বালু সিন্ডিকেটের দাপটে তারা অসহায় হয়ে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিল্লোল রায় বলেন, ‘‘ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ছেড়ার অভিযোগ দায়ের করেন সেই অভিযোগ ভিত্তিতে থানায় মামলা রেকর্ড হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ’’
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd