তীব্র লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ মানুষ নামছেন রাস্তায়

প্রকাশিত: ৬:২৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ২০, ২০২৩

তীব্র লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ মানুষ নামছেন রাস্তায়

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেটের ওসমানীনগরে অসহনীয় গরমে চরম আকার ধারণ করেছে পল্লী বিদ্যুতে লোডশেডিং। ঘন ঘন লোডশেডিংএ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে গ্রাহকদের জনজীবন। গত এক সাপ্তাহ ধরে প্রচন্ড গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিংও। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে অস্বস্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। হঠাৎ করে কোনো ঘোষণা ছাড়াই ভ্যাপসা গরমে লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন।

গ্রাহকদের অভিযোগ, লোডশেডিংয়ে উদাসীন স্থানীয় বিদ্যুৎ কর্মকর্তারা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ মিলছে না। তিন ঘন্টা লোডশেডিং পরে বিদ্যুতের দেখা পাওয়া যায় মাত্র আধা ঘন্টা। এমন অবস্থায় হাঁপিয়ে উঠছে গ্রাহকদের জনজীবন। এই ঘরমে এতো লম্বা এবং ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণ জনতে কাশিকাপন পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার কলে দিলেও সাড়া পায় না গ্রাহকরা।

অন্যদিকে, প্রচন্ড তাপমাত্রায় দিশেহারা হয়ে পড়ছেন অসুস্ত, বৃদ্ধ ও শিশুরাও। আক্রান্ত হচ্ছেন নানা রোগে। ফলে স্থানীয় হাসপাতালসহ চিকিৎসা কেন্দ্রে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ভিড় বাড়ছে রোগীদের। সব মিলিয়ে প্রচন্ড গরম ও লোডশেডিংয়ে উপজেলার সর্বত্রই জনজীবনে নেমে এসেছে চরম অস্বস্তি ও দুঃসহ যাতনা। এই নিয়ে স্থানীয়দের মনে ক্ষোভের সুষ্টি হয়েছে।

এদিকে, ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর অবস্থান কর্মসূচীরও ডাক দিয়েছেন স্থানীয় বিদ্যুৎ গ্রাহকরা।

জানা গেছে, বিগত সাপ্তাহ খানেক থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে তাপমাত্র। বুধবার দিবাগত ১০টা রাতে থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ লোডশেডিং এর কারণে নির্ঘুম রাত কাটয়েছেন অনেকেই। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রায় দির্ঘ সময় ধরে ৮ থেকে ৯ বার লোডশেডিং করা হয়েছে। একই সাথে বিভিন্ন সময়ে পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ভাবিয়ে তুলছে গ্রাহকদের।

অভিযোগ রয়েছে, কাশিকাপন পল্লী বিদুৎ জোনাল অফিসের দ্বায়িত্ব অবহেলায় চরম বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সৃষ্টি হয়েছে। লোডশেডিং শিডিউল না থাকায় প্রত্যান্ত অঞ্চলে এক টানা ৬ থেকে ৭ ঘন্টা বিদ্যুৎহীন হয়ে পরে।

এছাড়া, ঘনঘন লোডশেডিংয়ে ব্যবসায়ীদেরও লোকশান গুনতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তাজপুর বাজারের সেলুন ব্যাসায়ী প্রভাত চন্দ্র জানান, লোডশেডিং বৃদ্ধিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধের উপক্রম হয়েছে। দৈনিক ১২ থেকে ১৫ বার লোডশেডিং হচ্ছে। আমরা কোন কাজ করতে পারছি না।

ব্যবসায়ী সৈয়দ মাহবুবুছ সামাদ বলেন, ২৪ ঘন্টার মধ্যে মাত্র ৪-৫ ঘন্টা বিদ্যুত পাওয়া যায়। বিদ্যুৎ বিভ্রাট যেন স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে সারা রাত লোডশেডিং হচ্ছে। অন্য এলাকায় রুটিন থাকলেও ওসমানীনগরে মনগড়া ভাবে লোডশেডিং করে গ্রাহকদের উসকিয়ে তুলছেন পল্লী বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্টরা। অনতিলম্বে লোডশেডিং যন্ত্রনা নিরসন না হলে ব্যবসায়ীরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করতে বাধ্য হবে।

অভিযোগ অস্বিকার করে কাশিকাপন পল্লী বিদ্যুৎ জোন অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার(ডিজিএস) নাইমুল হাসান বলেন, আমরা চাহিদা মতো বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। চাহিদার মাত্র মাত্র ৫০ ভাগ বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। ওসমানীনগরে প্রতিদিন গড়ে বিদ্যুতের চাহিদা ১৭ মেঘাওয়াট তার মধ্যে মাত্র ৮ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। যা দিয়ে উপজেলার বিদ্যুতের চাহিদা পুরণে করা সম্ভব হচ্ছে না।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনা মিয়া বলেন, ঘন ঘন লোডশেডিং বিষয়ে বিগত উপজেলা পরিষদের সম্বনয় সভায় আলোচনা হয়েছে। আমরা সমস্যা নিরসনে পল্লী বিদ্যুতের উর্ধতন কতৃপক্ষের সাথেও যোগাযোগ আব্যাহত রাখছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোজাহারুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ গরমের কারণে শিশু এবং বৃদ্ধ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা সবাইকে চিকিৎসা দিচ্ছি। পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগের বিষয়েও সচেতন করছি।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..