সিলেট ৩১শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:১৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০২৩
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক :: ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের একটি যাত্রীবাহী বাস পুকুরে পড়ে যায়। এ পর্যন্ত সেখান থেকে ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩৫ জন। উদ্ধার অভিযানে নামেন ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিটসহ পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয়রা।
শনিবার (২২ জুলাই) সকাল ১০টায় ভান্ডারিয়া থেকে বরিশাল যাওয়ার পথে বাসটি উল্টে পুকুরে পড়ে এ ঘটনা ঘটে। বাসে আনুমানিক যাত্রী ছিল ৫০-৬০ জন। নিহতদের মধ্যে আটজন নারী, ৬জন পুরুষ ও তিনজন শিশু।
এদিকে বাস দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।একইসঙ্গে আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যয়ভার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বহন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। দুপুরে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে হতাহতদের দেখতে গিয়ে জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম এ কথা জানান। তিনি জানান, যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তাদের স্বজনরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ বুঝে নিতে চাইলে তা হস্তন্তর করা হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বাসচালক নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। সবকিছুই তদন্তে বেরিয়ে আসবে। অপদিকে সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মেহেদী হাসান সানি জানিয়েছেন, এ পর্যান্ত ১৭ জনের মরদেহ হাসপাতালে পৌঁছেছে।
আহতাবস্থায় ভর্তি আছেন ৩৫ জন। এদের মধ্যে দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতদের মধ্যে তিনজন শিশু, ছয়জন নারী ও আটজন পুরুষ।
দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, নিহত ১৭ জনের মধ্যে ১৫ জনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। এরা হলেন- ভান্ডারিয়ার মো. ছালাম (৬০), সুমাইয়া (৬), তারেক (৪৫) , মো. শাহিন (২৫), রহিমা বেগম (৬০) ও আবুল কালাম, চর বোয়ালিয়ার আব্দুল্লাহ (৮), মেহেন্দিগঞ্জের রিপা মনি (২) ও আয়বিন আহমেদ (২২) এবং রাজাপুরের নয়ন (১৬), খুশবু (১৯) ও খাদিজা বেগম (৫৫)। তবে নিহত দুই ৫০ উর্ধ ব্যাক্তির পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি।
মেয়ে-নাতনিকে হারিয়ে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে আহাজারি ও বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন নুরনেহার বেগম। তিনি জানান সরাজাপুর উপজেলার বলাইবাড়ী এলাকার পিত্রালয় থেকে বরিশালের হিজলা উপজেলার শ্বশুরবাড়িতে যেতে রওনা দেন আইরিন (২৬)। সঙ্গে ছিল দেবর নয়ন (১৫) ও মেয়ে নিপা (১)। স্মৃতি পরিবহনের যাত্রী ছিলেন তারা। এদিকে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় । শুধু নুরনেহারই না, অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনরাও হাসপাতালের ফ্লোরে আহাজারি করছেন। এতে ভারী হয়ে উঠেছে সদর হাসপাতাল চত্বর। ঘটনার পর ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভিড় জমিয়েছেন হতাহতদের স্বজনরা। গোটা হাসপাতাল চত্বর তাদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আজ (শনিবার) সকালে ভান্ডারিয়া থেকে বাশার স্মৃতি পরিবহণ নামক একটি যাত্রীবাহী বাস ঝালকাঠির দিকে যাচ্ছিল। পথে ছত্রকান্দা এলাকায় পৌঁছে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের একটি পুকুরে পড়ে উল্টে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা উদ্ধার কাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধার কাজে যোগ দেন।
হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া আহতরা জানান, কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশের পুকুরে পড়ে যায়। তবে মাঝপথে যাত্রী তোলার কারণে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় লাগে। এ জন্য বাসটি বেপরোয়া গতিতে চালনা করা হচ্ছিল।
এদিকে উদ্ধার কাজ চলায় দুর্ঘটনার পর সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যান্ত খুলনা-ঝালকাঠি মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিলো।
ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন সরকার জানান, যাত্রীবাহী বাসটি উল্টে পুকুরে পড়ে গেলে এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত ৩৫ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।’
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd