সিলেটে চিনি চোরাকারবারীরা কোটিপতি: কেউ মুখ খুললেই নির্যাতন!

প্রকাশিত: ১:৪৯ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১১, ২০২৩

সিলেটে চিনি চোরাকারবারীরা কোটিপতি: কেউ মুখ খুললেই নির্যাতন!

ডেস্ক রিপোর্ট: চোরাই চিনির কারবার নিয়ে মুখ খুললেই নির্যাতন ভারতীয় চোরাই চিনির কারবার করে রাতারাতি কোটিপতি হচ্ছেন সিলেট সীমান্তের চোরাকারবারিরা। তাদের দেখে ধনী হওয়ার লোভে চোরাচালানে জড়াচ্ছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও।

 

এনিয়ে কেউ মুখ খুললে তার ওপর নেমে আসে নির্যাতন। এমন কি প্রাণে মেরে ফেলতেও পিছপা হন না চোরাকারবারিরা।

 

২৫ বছর বয়সী রাসেল আহমেদ মা আর স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকেন সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার দক্ষিণ কামরাঙ্গীখেলে মামার বাড়িতে। নদী থেকে বালু তোলাই তার পেশা। যা আয় হয় তাতে কোনমতে সংসার চলে। সবকিছু ঠিকই চলছিল। কিন্তু গত ২৭ জুলাই সকাল সাতটায় রাসেলকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে যায় ১২ থেকে ১৪ জনের একটি দল। যারা এলাকার জনপ্রতিনিধি সেলিম মেম্বারের লোক বলে পরিচিত।

 

রাসেলকে বটতলা বাজারে নিয়ে নির্মমভাবে পেটায় চিনি চোরাচালানের গডফাদার হিসেবে পরিচিত সেলিম মেম্বার ও তার বাহিনীর সদস্যরা। রাসেলের অপরাধ ভারত থেকে দুই নৌকা বোঝাই করে চিনি আসবে, বিজিবি সদস্যদের এমন তথ্য ফাঁস করে দিয়েছেন তিনি।

 

বালু শ্রমিক রাসেল আহমেদ জানান, সেলিম আমার কলার ধরে এবং আরও তিনজন আমাকে ধারালো দা এবং চাপাতি দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। তখন আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। মনির আমার চোখের পাশে কোপ দেয়।

 

রাসেলের মায়ের দাবি, ছেলের প্রাণে বাঁচাতে চাইলে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন সেলিম মেম্বার। জানান, টাকা সংগ্রহ করার কথা বলে বাড়িতে এসে ৯৯৯ -এ ফোন দিয়ে ছেলেকে উদ্ধার করেন তিনি।

 

রাসেলের মা শাহেনা বেগম বলেন, ছেলেকে মেডিকেলে ভর্তি করে আমি থানায় গিয়ে অভিযোগ করেছি।

 

অভিযোগের তীর যে সেলিম মেম্বারের বিরুদ্ধে অসংখ্যবার ফোন দিলেও তার সাড়া মেলেনি। নিশ্চিন্তপুরে তার বাড়িতে গিয়েও পাওয়া যায়নি।

 

সেলিম যে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সেই চারিকাঠা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান সুলতান করিমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। আশ্বাস দেন অভিযোগের সত্যতা মিললে ব্যবস্থা নেয়ার।

 

তিনি বলেন, আমরা দ্রুত বিষয়টি তদন্ত করবো। অভিযোগের সত্যতা মিললে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

রাসেলের পরিবারের দাবি, সেলিম মেম্বারের বিরুদ্ধে মামলা নিতে গড়িমসি করে জৈন্তাপুর থানা পুলিশ। যদিও ওসি বললেন, তাদের চোখে সবাই সমান।

 

জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, কে প্রভাবশালী, কে মেম্বার, কে চেয়ারম্যান তা আমরা দেখি না। আমরা সব অপরাধীর বিরুদ্ধে একই ধরনের ব্যবস্থা নেই।

 

তবে সর্বশেষ খবর হলো, এ ঘটনায় ১০ আসামির মধ্যে সেলিম মেম্বরসহ জামিনে আছেন সাত জন, কারাগারে আছেন দুই জন এবং একজন পলাতক। তথ্যসুত্র: ৭১ টিভি।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..