নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটে ৫ বছর পর স্কুলছাত্র আবু হোসাইন জাহিদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি জাহিদ আহমদ (১৯) গ্রেফতার করেছে সিআইডি পুলিশের একটি দল।
বুধবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে গ্রেফতারকৃত ছোট জাহিদকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এরআগে ওইদিন সকাল ৬টার দিকে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জাহিদকে নগরের উপশহর ডি ব্লকের ৩৪ নম্বর রোডের ১০ নম্বর বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাকৃত জাহিদ মৌলভীবাজারের বড়লেখা থানার সুজানগর গ্রামের মোজাম্মেল আলীর ছেলে। নিহত জাহিদ সিলেট নগরের তেররতন এলাকার বাসিন্দা কামাল মিয়ার ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডি সিলেটের সাব-ইন্সপেক্টর রিপন কুমার দে। তিনি জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে খবর পেয়ে উপশহরের বাসা থেকে স্কুলছাত্র জাহিদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামী জাহিদকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত জাহিদ নিহত আবু হোসাইন জাহিদ হত্যা মামলায় পূর্বে গ্রেফতারকৃত ফজর আলীর দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সে জাহিদসহ অন্যান্য আসামীর নাম জবানবন্দীতে উল্লেখ করে। পরে গ্রেফতারকৃত জাহিদের ঠিকানা যাচাই-বাছাই করেও শনাক্ত করতে পারেনি পূর্বে দুটি তদন্তকারী সংস্থা। এরপর মামলাটি যখন আদালতের নির্দেশে সিআইডির কাছে আসলো তখন জাহিদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় পুলিশ। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃত জাহিদকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এজন্য প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর বিকেলে উপশহর ডি ব্লক ২৫নং রোডের শেষ মাথায় হাবীব ভেরাইটিজের সামনে হত্যা করা হয় সীমান্তিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র আবু হোসাইন জাহিদকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ৯ জনকে আসামী করে ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর শাহপরাণ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের পিতা। পরবর্তীতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরান থানার রাজীব কুমার রায় (সাবেক) এজাহারভুক্ত ৯ আসামির মধ্যে ৫ জনকে অব্যাহতি দিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। মামলার প্রধান আসামি ফজর আলী ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ছোট জাহিদ ও নয়ন নামের ২ জনের নাম ঘটনার সঙ্গে জড়িত উল্লেখ করলেও পুলিশ চার্জশিট থেকে তাদের নামও বাদ দেয়।
তদন্ত কর্মকর্তা মামলার আসামি রাহাত, উবায়দুল, নয়ন ও ছোট জাহিদের নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি দেখিয়ে তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। কিন্তু নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি এমন অজুহাতে মামলা থেকে আসামিকে বাদ দেয়াকে অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন আদালত। আদালত বলেন, যেহেতু এটি একটি হত্যাকাণ্ড বিধায় নাম ঠিকানা নিরূপণ করার চেষ্টা দরকার। আদালত পুলিশের দায়ের করা অভিযোগপত্র (চার্জশীট) আমলে না নিয়ে পূনরায় অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই সিলেটকে নির্দেশ দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পিবিআই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলে মামলার বাদী না রাজি দিলে আদালত পূনরায় তদন্তের জন্য সিআইডি সিলেটকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্র জানায়, মামলার পর আসামি ফজর আলীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরবর্তীতে আদালত ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করে। আসামি তার জবানবন্দিতে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি সালমান, আরমান, শাহেদ ও রাহাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে। এ ছাড়া নয়ন, ছোট জাহিদ ও ইয়াছিন আহমদ তায়েফ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে আদালতের কাছে স্বীকার করে।
Sharing is caring!