গোয়াইনঘাটে একই সঙ্গে স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন !

প্রকাশিত: ৯:১১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৭, ২০২৩

গোয়াইনঘাটে একই সঙ্গে স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন !

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি :: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় গিয়াস উদ্দিন নামের এক শিক্ষক একই সঙ্গে এমপিওভুক্ত স্কুল ও মাদ্রাসায় চাকরি করছেন। দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে গোপন সমঝোতা করে দীর্ঘদিন থেকে তিনি চাকরি করে আসছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলার পুর্ব জাফলং ইউনিয়নের নলজুরী সপ্তগ্রাম নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন, এ স্কুলের চাকরিকালীন গোয়াইনঘাট এর পশ্চিম জাফলং আদর্শ দাখিল মাদরাসার গণিতের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপত্র গ্রহণ ও যোগদান করেন তিনি। সেই থেকে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই একই সঙ্গে চাকরি ও আর্থিক সুবিধা ভোগ করে আসছেন তিনি। দুটি প্রতিষ্ঠানের হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষরও করছেন তিনি।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (ক-৩) মো. জসিম উদ্দিন স্বাক্ষরিত ২০১০ সালের ২৮ নভেম্বরের বিজ্ঞপ্তির ৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো শিক্ষক বা কর্মচারী একই সঙ্গে দুটি প্রতিষ্ঠানে (এমপিওভুক্ত বা এমপিওবিহীন যেকোনো ধরনের প্রতিষ্ঠান) চাকরিরত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো শিক্ষক বা কর্মচারী একই সঙ্গে দুই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকলে উভয় প্রতিষ্ঠান প্রধান দায়ী থাকবেন। কিন্তু এসব কোন কিছুরই তোয়াক্কা না করে গোপনে এমন কান্ড করে যাচ্ছেন শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন।

গোয়াইনঘাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও পশ্চিম জাফলং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস শহীদ বলেন, একই সাথে দুটি এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করে আর্থিক সুবিধা ভোগ করা এটা জঘন্যতম অন্যায়, এমন ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন এর শাস্তিও দাবী করেন তিনি।

এবিষয়ে জানতে নলজুরী সপ্তগ্রাম নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়েও শিক্ষক গিয়াস উদ্দিনকে পাওয়া যায়নি। স্কুলের অন্যান্য শিক্ষককরা জানায় তিনি বিদ্যালয়ের কাজে বাহিরে গেছেন, মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে তিনি বিদ্যালয়ে আসবেন বলে জানান, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর তিনি আর আসেন নি, পরে মোবাইল ফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। তাই উনার কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নি।

নলজুরী সপ্তগ্রাম নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি রাসেল আহমদ বলেন, গিয়াস উদ্দিন আমার বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করছে। এবং ২০১৭সাল থেকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। আমি জানি সে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক (গনিত) হিসাবে নিয়োগ আছে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ যদি তাকে আমাদের এখান থেকে নিয়ে যায় তাহলে আমাদের কোন সমস্যা নাই। আমরা অন্য শিক্ষক নিয়োগ দিবো।

গোয়াইনঘাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রমা কান্ত বলেন, গিয়াস উদ্দিন নলজুরী সপ্তগ্রাম নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এটা আমি জানি, তবে পশ্চিম জাফলং দাখিল মাদরাসায় এমপিও শিক্ষক কবে হয়েছেন সেটা আমার জানা নেই, তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে যদি এমনটা হয়, তাহলে অবশ্যই ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় চলছে।কিভাবে একজন ব্যক্তি দুটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে বেতন ভাতা নিতে পারেন।

গোয়াইনঘাটের সাংবাদিক মিনহাজ উদ্দিন তাঁর ফেসবুক টাইম লাইনে লিখেন, গোয়াইনঘাটে একই ব্যক্তি দুটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে বেতন ভাতা নিচ্ছেন সাথে রয়েছে অনিয়ম ও দুর্নীতির উৎকট গন্ধ।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..