গোয়াইনঘাটে বৃষ্টি হলেই রাস্তায় হাঁটু সমান কাদা : শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ১১:৩৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২০, ২০২৩

গোয়াইনঘাটে বৃষ্টি হলেই রাস্তায় হাঁটু সমান কাদা : শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ

সৈয়দ হেলাল আহমদ বাদশা, গোয়াইনঘাট :: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার তোয়াকুল ইউনিয়নের তোয়াকুল সিএনজি স্ট্যান্ডের দক্ষিণ পাশে সালুটিকর গোয়াইনঘাট প্রধান পাকা সড়ক থেকে পাইকরাজ উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ১৫০০ ফুট কাঁচা রাস্তার বেহাল অবস্থা। অল্প বৃষ্টিতেই হাঁটু পর্যন্ত কাদা হয়ে যায় রাস্তায়। ফলে গ্রামবাসীদের জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি হাঁটু কাদায় মানুষ চলাচলের একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়ে। তোয়াকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তোয়াকুল উচ্চ বিদ্যালয়,তেয়াকুল কলেজ,তোয়াকুল মাদ্রাসা ও তোয়াকুল বাজারে যাতায়াতে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের চলাচলের ভোগান্তি চরমে। এমনকি এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে পার্শ্ববর্তী হাওরগ্রাম ঘোড়ামারার লোকজন।তিন থেকে চার হাজার মানুষের চলাচলের জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি শুধু বর্ষাতে নয় একটু বৃষ্টিতেই কদমার্ক্ত হয়ে পড়ে।এদিকে পাইকরাজ প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে নিজাম উদ্দিনের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৫০০ ফুট রাস্তার অবস্থা আরো নাজুক।মানুষ চলাচলের একেবারে অনুপযোগী রাস্তার কাঁদা শিরা হয়ে চারিদিকে প্রবাহিত হচ্ছে।

দীর্ঘদিনের জন-ভোগান্তির কাঁচা রাস্তাটি পাকা-করণের জন্য বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ করেও কোনো সুরাহা পাইনি স্থানীয়রা। গ্রামের মধ্যে এই কাচা রাস্তাটি দ্রুত পাকা করণের জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন করেছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,কোমলমতি শিক্ষার্থীরা তাদের পায়ের জুতা হাতে নিয়ে যার যার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করছে।জুতা নিয়ে হাঁটতে গেলে কাঁদায় জুতা আটকে যায়।আর বৃষ্টি থাকলে তো কথা নেই,কাদায় পরনের কাপড় চোপড় অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। সময় মত বিদ্যালয় যেতে পারেনা শিক্ষার্থীরা।কখনো কখনো পড়ে গিয়ে বই খাতা নষ্ট হয়ে স্কুলে যাওয়া বাদ দিতে হয়।এভাবেই ভোগান্তির কথা জানালেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন,বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় হলে এই রাস্তার কথা মনে হলে দশবার ভাবতে হয়।গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়,বিদ্যালয়ে যাওয়া নয় বরং রাস্তার কাঁদার সাথে রীতিমতো যুদ্ধ করে যাওয়া।তারা সুন্দর ভাবে বিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এই কাঁদা থেকে মুক্তি চান।

গ্রামবাসীরা জানান, গত বছর তারা প্রতি ঘর হইতে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা চাঁদা করে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকার মাঠি কাজ করিয়েছেন।কিছু পরিবারের লোকজন অন্যের কাজ করে মাটি কাজের টাকা এনে দিয়েছে।এইভাবে তারা তিল তিল করে রাস্তাটি তৈরি করেছেন।কিন্তু সামান্য কাজের জন্য আজ তাদের রাস্তা বৃষ্টির পানিতে কাঁদা হয়ে আবার সাবেক জায়গায় চলে যাচ্ছে।

নিজাম উদ্দিন জানান,এই কাঁচা রাস্তাটি অল্প বৃষ্টি হলেই হাঁটু কাদায় পরিণত হয়। কাদা হওয়ায় ওই রাস্তা দিয়ে মানুষ মসজিদে নামাজের জন্য যেতে পারে না। উক্ত রাস্তা দিয়েই কোমলমতি শিশুরা প্রাইমারি স্কুলে যাতায়াত করে। কাদাযুক্ত রাস্তার কারণে অনেকেই পিছলে পড়ে যায়।

গ্রামের মহিলা জহুরা বেগম, নিজাম উদ্দিন, পাতা মিয়া,সামসুল ইসলাম,ও সমর আলী জানান, কাচা রাস্তার কারণে গ্রামের মানুষ চলাচলে নানা ভোগান্তিতে পড়ে। স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারদের বিষয়টি বারবার জানানো হলেও কাচা রাস্তাটি আজ অবধি পাকা-করণের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

পাইকরাজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কুলসুমা বেগম ও সহকারী শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন তাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় যাতায়াতে ভোগান্তির কথা বলেন,সময় মত বাচ্চারা স্কুলে আসতে পারে না,অনেক সময় বই খাতা নষ্ট করে কাদাযুক্ত অবস্থায় আসে।এমনকি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও অন্য রাস্তা দিয়ে বিদ্যালয়ে আসতে হয় এমনটা জানালেন তারা।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ লোকমান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে এক সাথে ১৫০০ ফুট রাস্তা পাকা করনের কোনো সুযোগ নেই। সুযোগ থাকলে অনেক আগেই জন দুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রেখে পাকা করনের উদ্যোগ নেয়া হতো। করোনা কালীন সময় থেকে সবকিছুতে বরাদ্দের পরিমাণ আগের চাইতে কম।

রাস্তাটি সম্পর্কে আমাকে তারা অবহিত করেছেন।তিনি বলেন,আগামী নভেম্বর মাসে একটি বরাদ্দের মাধ্যমে কাঁচা রাস্তা পাকা করনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে ইনশাআল্লাহ।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..