সিলেট ৩১শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:৫৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০২৩
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাতভর ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত পাঁচ ছাত্রীকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ২৬০তম জরুরি সিন্ডিকেটে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান। তিনি বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আজ জরুরি সিন্ডিকেট করে তাদের পাঁচ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
বহিষ্কৃতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাবাচ্ছুম ইসলাম ও মোয়াবিয়া জাহান, আইন বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের ইসরাত জাহান মীম ও চারুকলা বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মী।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা থাকলেও কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টায় ভিসির বাসভবনে জরুরি সিন্ডিকেট ডাকে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে গত ১৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে আচরণবিধির দ্বিতীয় অধ্যায়ের ৮ ধারা অনুযায়ী জড়িতদের এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছিল কর্তৃপক্ষ। পরে গত ২৬ জুলাই আদালতে রিট শুনানিতে এক বছরের বহিষ্কারাদেশকে বাতিল করে পুনরায় সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। শাস্তি ‘যথোপযুক্ত নয়’ উল্লেখ করে ফের শাস্তি নির্ধারণে ভিসিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আগামী ২৩ আগস্ট আদালতে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে বলা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ফের এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর র্যাগিং, শারীরিকভাবে নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করার অভিযোগ উঠে। ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুন ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরার নেতৃত্বে তার অনুসারীরা নির্যাতন করেন বলে জানান ভুক্তভোগী।
ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি পৃথকভাবে তিনটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষ ও শাখা ছাত্রলীগ। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে রিট হলে হাইকোর্টের নির্দেশেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। এ ঘটনায় গত ৪ মার্চ হাইকোর্টের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় অন্তরাসহ পাঁচ ছাত্রীকে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছিল কর্তৃপক্ষ।
এছাড়াও তাদের সবাইকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। গত ১২ জুন অভিযুক্তদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ডাকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটি। একই দিনে ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুনকেও ডাকা হয়। এসব বিবেচনা শেষে গত ১৫ জুলাই ছাত্রশৃঙ্খলা কমিটির চূড়ান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত পাঁচজনকে এক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd