পুলিশকে ঢিল ছুড়লেন ছয় বছর আগের মৃত ব্যক্তি!

প্রকাশিত: ১১:২৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৮, ২০২৩

পুলিশকে ঢিল ছুড়লেন ছয় বছর আগের মৃত ব্যক্তি!

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক: ২০১৭ সালের ৪ আগস্ট ক্যান্সারে মারা যান মৌলভীবাজারের জায়ফরনগর ইউনিয়নের হাসনাবাদ গ্রামের রুমুজ আলীর ছেলে লোকমান হোসেন। তবে পুলিশের দাবি, গত ৫ অক্টোবর জামায়াতের একটি মিছিলে অংশ নিয়ে নাশকতা চালিয়েছেন লোকমান। পুলিশ বাদী হয়ে জুড়ী থানায় করা একটি নাশকতা মামলায় আসামি করা হয়েছে লোকমানকে, যিনি ছয় বছর আগেই মারা গেছেন।

 

জানা যায়, সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার রাতে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে মিছিল করে জামায়াতে ইসলামী। মিছিলের পরদিন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ২৮ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন জুড়ী থানার এসআই খসরুল আলম বাদল। এ মামলায় অজ্ঞাত আরো ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। নাশকতার এ মামলায় আসামিদের মধ্যে মৃত ব্যক্তি ছাড়াও কয়েকজন প্রবাসীর নামও রয়েছে।

 

মামলায় উল্লেখ করা হয়, জামায়াত-শিবির ও বিএনপির কর্মীরা জনসাধারণের যান চলাচল বন্ধ ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করার জন্য উত্তেজিত হয়ে রাস্তায় মিছিল বের করলে পুলিশ তাতে বাঁধা দেয়। পুলিশের বাঁধা অমান্য করে তারা মিছিল শুরু করেন। পরে নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ে সরকারি কাজে বাধা দেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১১ নম্বর আসামি করা হয়েছে মৃত লোকমান হোসেনকে।

 

এ মামলায় ৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে জায়েদ আহমদকে। তিনি সাত বছর ধরে সৌদি আরবে রয়েছেন। জায়েদ আহমদ উপজেলার হামিদপুর গ্রামের মৃত ফয়জুল্লাহর ছেলে।

 

উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের রজব উদ্দিনের ছেলে বুরহান উদ্দিন দুই বছর থেকে আরব আমিরাতে অবস্থান করছেন। মামলায় বুরহানকে ২৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে। ফুলতলা বাজারের ইব্রাহিম আলীর ছেলে নাঈম উদ্দিন আট বছর আগে কাতার যান। সেখান থেকে তিনি এখন পর্তুগালে অবস্থান করছেন। তাকেও পুলিশের করা ওই মামলায় ২৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

 

মামলার ১১ নম্বর আসামি মৃত লোকমান হোসেনের বড় ভাই মাহতাব আহমদ বলেন, ‘আমার ভাই লোকমান ৬ বছর দুই মাস আগে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আমার ভাই কবর থেকে উঠে কীভাবে মিছিলে অংশ নিল?

 

তিনি বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির নামে যদি মামলা হয়, তাহলে আমরা যারা জীবিত আছি- তাদের উপর কি ধরনের অত্যাচার চলে একবার আপনারা ভেবে দেখুন।’

 

প্রবাসী জায়েদ আহমদের বড় ভাই আব্দুস শুকুর বলেন, আমার ভাই ২০১৮ সাল থেকে প্রবাসে আছে। সে প্রবাসে থেকেও পুলিশি মামলার আসামি হয়ে গেছে। এমনকি যারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয় তাদেরও আসামি করা হয়েছে।’

 

পর্তুগাল প্রবাসী নাঈম আহমদের বাবা ইব্রাহিম আলী বলেন, আমার ছেলে প্রায় আট বছর ধরে প্রবাসে আছে। প্রবাস থেকে কিভাবে মিছিলে অংশ নিল এবং মামলার আসামি তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না।

 

মামলার ১১ নম্বর আসামি মৃত লোকমান হোসেনের বিষয়ে জায়ফরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুম রেজা বলেন, লোকমান হোসেন ছয় বছর আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

 

এ বিষয়ে জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গ্রেপ্তাকৃতদের তথ্যমতে মামলার আসামিদের নাম অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। কোন ভুল হয়ে থাকলে, তদন্ত করে সংশোধন করা হবে।’

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

October 2023
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..